আমি শঙ্কর আচার্য কে এই কারণেই শ্রদ্ধা করি কারণ তিনি জৈন মতবাদ কে ধ্বংস করে দিয়েছিল ভারত থেকে। কিন্তু আমি শঙ্কর জীর তৈরি অদ্বৈতবাদের কারণে তার অবশ্যই বিরোধিতা করি কারণ অদ্বৈতবাদ বৈদিক শাস্ত্র বিরোধী মতবাদ, শঙ্কর আচার্যের বেদান্ত দর্শনের ভাষ্য থেকেই এই অদ্বৈতবাদ বা মায়াবাদের উৎপত্তি। এই অদ্বৈতবাদ অনুযায়ী জগৎ মিথ্যা, একমাত্র ব্রহ্ম অর্থাৎ পরমাত্মাই সত্য। এই মতবাদ অনুযায়ী এই জগৎ হলো স্বপ্নের মতো মিথ্যা, রজ্জুতে সর্প আদির মতো। মানে মায়াবাদ অনুযায়ী একমাত্র পরমাত্মা সত্য বাদবাকি সবকিছুই ভ্রম, যেমন স্বপ্ন তে অনেক কিছুই দেখি তারপর জাগ্রত হওয়ার পর যেমন মনে হয় স্বপ্নের দৃশ্য গুলো মিথ্যা ছিল, তারপর রজ্জুতে সর্প অর্থাৎ দড়ি কে যেমন মাঝে মাঝে ভুল করে সাপ ভেবে ফেলি ঠিক এমনই হলো জগৎ মিথ্যা মায়াবাদ অনুযায়ী। হাজারও বছর পর সর্বপ্রথম এই বেদ বিরোধী অদ্বৈতবাদকে খণ্ডন করেন মহর্ষি দয়ানন্দ সরস্বতী, সত্যার্থ প্রকাশ, ১১ সমুল্লাস এবং ৮ সমুল্লাস।
Home »
» শঙ্কর আচার্যের অদ্বৈতবাদের খণ্ডন যুক্তি ও শাস্ত্রীয় প্রমাণ দ্বারা
শঙ্কর আচার্যের অদ্বৈতবাদের খণ্ডন যুক্তি ও শাস্ত্রীয় প্রমাণ দ্বারা
শঙ্কর আচার্যের অদ্বৈতবাদের খণ্ডন যুক্তি ও শাস্ত্রীয় প্রমাণ দ্বারা
আমি শঙ্কর আচার্য কে এই কারণেই শ্রদ্ধা করি কারণ তিনি জৈন মতবাদ কে ধ্বংস করে দিয়েছিল ভারত থেকে। কিন্তু আমি শঙ্কর জীর তৈরি অদ্বৈতবাদের কারণে তার অবশ্যই বিরোধিতা করি কারণ অদ্বৈতবাদ বৈদিক শাস্ত্র বিরোধী মতবাদ, শঙ্কর আচার্যের বেদান্ত দর্শনের ভাষ্য থেকেই এই অদ্বৈতবাদ বা মায়াবাদের উৎপত্তি। এই অদ্বৈতবাদ অনুযায়ী জগৎ মিথ্যা, একমাত্র ব্রহ্ম অর্থাৎ পরমাত্মাই সত্য। এই মতবাদ অনুযায়ী এই জগৎ হলো স্বপ্নের মতো মিথ্যা, রজ্জুতে সর্প আদির মতো। মানে মায়াবাদ অনুযায়ী একমাত্র পরমাত্মা সত্য বাদবাকি সবকিছুই ভ্রম, যেমন স্বপ্ন তে অনেক কিছুই দেখি তারপর জাগ্রত হওয়ার পর যেমন মনে হয় স্বপ্নের দৃশ্য গুলো মিথ্যা ছিল, তারপর রজ্জুতে সর্প অর্থাৎ দড়ি কে যেমন মাঝে মাঝে ভুল করে সাপ ভেবে ফেলি ঠিক এমনই হলো জগৎ মিথ্যা মায়াবাদ অনুযায়ী। হাজারও বছর পর সর্বপ্রথম এই বেদ বিরোধী অদ্বৈতবাদকে খণ্ডন করেন মহর্ষি দয়ানন্দ সরস্বতী, সত্যার্থ প্রকাশ, ১১ সমুল্লাস এবং ৮ সমুল্লাস।
আমি শঙ্কর আচার্য কে এই কারণেই শ্রদ্ধা করি কারণ তিনি জৈন মতবাদ কে ধ্বংস করে দিয়েছিল ভারত থেকে। কিন্তু আমি শঙ্কর জীর তৈরি অদ্বৈতবাদের কারণে তার অবশ্যই বিরোধিতা করি কারণ অদ্বৈতবাদ বৈদিক শাস্ত্র বিরোধী মতবাদ, শঙ্কর আচার্যের বেদান্ত দর্শনের ভাষ্য থেকেই এই অদ্বৈতবাদ বা মায়াবাদের উৎপত্তি। এই অদ্বৈতবাদ অনুযায়ী জগৎ মিথ্যা, একমাত্র ব্রহ্ম অর্থাৎ পরমাত্মাই সত্য। এই মতবাদ অনুযায়ী এই জগৎ হলো স্বপ্নের মতো মিথ্যা, রজ্জুতে সর্প আদির মতো। মানে মায়াবাদ অনুযায়ী একমাত্র পরমাত্মা সত্য বাদবাকি সবকিছুই ভ্রম, যেমন স্বপ্ন তে অনেক কিছুই দেখি তারপর জাগ্রত হওয়ার পর যেমন মনে হয় স্বপ্নের দৃশ্য গুলো মিথ্যা ছিল, তারপর রজ্জুতে সর্প অর্থাৎ দড়ি কে যেমন মাঝে মাঝে ভুল করে সাপ ভেবে ফেলি ঠিক এমনই হলো জগৎ মিথ্যা মায়াবাদ অনুযায়ী। হাজারও বছর পর সর্বপ্রথম এই বেদ বিরোধী অদ্বৈতবাদকে খণ্ডন করেন মহর্ষি দয়ানন্দ সরস্বতী, সত্যার্থ প্রকাশ, ১১ সমুল্লাস এবং ৮ সমুল্লাস।
এইবার একটু আলোচনা করে দেখি এই মায়াবাদ কতটা যুক্তি তর্ক সঙ্গত এবং শাস্ত্র অনুকূল। বেদান্ত দর্শন বা ব্রহ্মসূত্রের প্রথম দুই সূত্র দ্বারাই অদ্বৈতবাদের ধারণা খণ্ডন হয়ে যায়, দেখুন কি রকম____
ব্রহ্মসূত্র ১/১/১ -অথাতো ব্রহ্মজিজ্ঞাসা = এখন ব্রহ্ম কে জানার ইচ্ছা করি।
অর্থাৎ এখানে ব্রহ্ম কে জানার কথা বলছে সেই ব্রহ্ম কে বা কেমন, এখন পরের ২য় সূত্রে মহর্ষি ব্যাস লিখেছে______
ব্রহ্মসূত্র ১/১/২ -জন্মাদ্যস্য য়তঃ= এই সমস্ত সংসারের জন্ম, স্থিতি তথা প্রলয় যার দ্বারা হয়, তিনিই ব্রহ্ম।
অর্থাৎ যিনি এই জগতের সৃষ্টি, স্থিতি এবং প্রলয় করেন তিনিই ব্রহ্ম। এইবার একটু বিচার করে দেখি, যে জগতের সৃষ্টি হয় আবার স্থিতিতে থাকে আবার সময় মত ধ্বংস হয় সেই জগৎ কে কেউ যদি মিথ্যা বলে কথন করে তাহলে সেই কথন পাগলামি ছাড়া আর কিছুই নয়, অদ্বৈতবাদীরা উদাহরণ দেয় যে জগৎ স্বপ্নের মতো মিথ্যা। আমরা স্বপ্নে যা দেখি তা কি বাস্তবে কখনোই দেখিনি বা সেই সম্পর্কে কি কখনোই কোনো জ্ঞান হয়নি ? আমরা যে বিষয়ে স্বপ্ন দেখি, সে বিষয় অবশ্যই আমাদের জ্ঞাত বিষয়। স্বপ্ন যদিও ভেঙে গেলে মনে হয় যে স্বপ্নের দৃশ্য গুলো মিথ্যা ছিল কিন্তু স্বপ্নে যে বস্তুর বিষয়ে দেখা হয় তা কিন্তু বাস্তবে এক সময় বিদ্যমান ছিল বা এখনো আছে। ধরুন আজ আমি স্বপ্ন দেখলাম আমি আমেরিকায় গেছি, কাশ্মীরেও গেছি ঘুরছি সেখানে মজা করছি , হঠাৎ ঘুম ভেঙে গেল আর আমার জ্ঞান হলো যে আমি বাড়িতেই আছি কোথাও যাইনি, স্বপ্নে দেখা আমেরিকা, কাশ্মীরে যাওয়ার দৃশ্যটি মিথ্যা, ইহার মানে কি এই যে আমেরিকা এবং কাশ্মীর বলে কোনো জায়গাই নেই ? বা এর মানে কি এই যে আমেরিকা, কাশ্মীর বলে কিছুই ছিল না ? তাই স্বপ্নের সাথে ওই জগৎ মিথ্যার উদাহরণটি পুরোই যুক্তিহীন, আবার এরা যুক্তি দেয় যে রজ্জুতে সর্প এর তাৎপর্য এই যে যেমন মাঝে মাঝে আমরা দড়ি কে ভ্রমের কারণে সাপ মনে করি ঠিক তেমনি হলো এই জগৎ মায়াবাদ মতে। এই উদাহরণও অযৌক্তিক! হা এইটা অবশ্যই ঠিক যে দড়িকে আমরা মাঝে মাঝে ভ্রমের কারণে সাপ ভাবি কিন্তু সাপ কি কোনো বস্তু নয় ? দড়ি টি সাপ নয় কিন্তু অন্য কোথাও কি সাপ নেই ? বাস্তবে সাপ আছে এবং সাপের বিষয়ে জ্ঞান হয়েছে বলেই আমরা দড়ি কে ভ্রমের কারণে সাপ ভাবি। এই বিষয়টি সকলের জানা উচিত যে বস্তু বা যে পদার্থের কোনো অস্তিত্বই নেই সেই বিষয়ে কখনোই জ্ঞান হয়না।
এই জগৎ অবশ্যই পরমাত্মা বা ব্রহ্মের মতো নিত্য নয় কিন্তু মিথ্যাও নয়। কারণ এই জগৎ তৈরি হয়েছে সত্ত্ব, রজ, তম গুণের প্রকৃতি নামক উপাদান দ্বারা, এই প্রকৃতি পরমাত্মার মতো নিত্য সত্ত্বা। বৈদিক শাস্ত্র অনুযায়ী তিনটি সত্ত্বাকে অনাদি বা সনাতন বা অজন্মা বলা হয়েছে এক হলো পরমাত্মা যিনি এই সংসারের নির্মাণ কর্তা, আর এক হলো প্রকৃতি এই প্রকৃতি হলো জগতের উপাদান কারণ এর এক হলো সাধারণ কারণ জীবাত্মা। শ্বেতাশ্বতর উপনিষদ ৪/৫ এর মধ্যে বলা হয়েছে যে - 'সত্ত্ব, রজ, তম গুণের প্রকৃতি, জীবাত্মা এবং পরমাত্মা হলো 'অজ' অর্থাৎ অজন্মা, আর এই অজন্মা প্রকৃতি কে জীবাত্মা ভোগ করে'। যেখানে প্রকৃতি এবং জীবাত্মা কে অজ অর্থাৎ জন্ম রহিত বলেছে সেই প্রকৃতি নামক উপাদান দ্বারা তৈরি জগৎ কে যদি কোনো মায়াবাদীরা মিথ্যা বলে দাবি করে তাহলে সেটা তাদের অজ্ঞানতার পরিচয় ছাড়া অন্য কিছুই নয়। এই একই ধরণের বিষয় ভগবান শ্রীকৃষ্ণও গীতায় তুলে ধরেছেন, গীতা ১৩/১৯ তে বলেছেন যে -পুরুষ অর্থাৎ জীবাত্মা এবং প্রকৃতি এই দুই হলো অনাদি। কৃষ্ণজী এখানে আরও বলা হয়েছে যে পরিমাণ, বিকার এবং সত্ত্ব আদি যে গুণ আছে তা প্রকৃতি হতেই উৎপন্ন হয়। কৃষ্ণজী আবার ১৩/২০ শ্লোকে বলেছেন যে- কার্য- কারণ উৎপন্নের কারণ প্রকৃতি, আর এই প্রকৃতিই জীবের সুখ দুঃখ ভোগের কারণ। মহর্ষি কপিলের লিখা সাংখ্য দর্শনে এই বিষয়কে আরও সুন্দর করে স্থাপন করেছে। সাংখ্যদর্শন ১/৬১, ৬২, ৬৩, ৬৪, ৬৫, ৬৬, ৬৭ সূত্র এবং আরও অন্যান্য সূত্রে আছে যেখানে প্রকৃতি উপাদান হতে জগৎ সৃষ্টির বর্ণনা করা হয়েছে। শুনেছি মায়াবাদীরা নাকি সাংখ্য দর্শনকে মানেনা এই দর্শন কে নাকি নাস্তিক দর্শন বলে, যদি এই কথিত বেদান্তিরা মহর্ষি কপিলের সাংখ্য দর্শনকে নাস্তিক দর্শন বলে তাহলে তাদের যুক্তি অনুযায়ীই স্পষ্ট ভাবে বলা যায় যে গীতা জ্ঞানের দাতা শ্রীকৃষ্ণও একজন নাস্তিক ছিলেন! কারণ গীতা ১৮/১৯ শ্লোকে শ্রীকৃষ্ণ স্পষ্ট ভাবে বলছে যে তিনি অর্জুনকে সাংখ্য দর্শনের বাণী শোনাবে, গীতায় একবার নয় বহু বার সত্ত্ব, রজ, তম বিষয়ে কথন আছে এই তিন গুণের কথাও কৃষ্ণজী সাংখ্য দর্শন থেকেই কপি করেছে, কারণ সাংখ্য শাস্ত্র ছাড়া পূর্বের কোনো শাস্ত্রেই প্রকৃতির এই তিন গুণ সত্ত্ব, রজ, তম এর কথন নেই অর্থাৎ উক্ত বিষয়ের তাৎপর্য এই বের হয় যে শ্রীকৃষ্ণ নিজেও মহর্ষি কপিলের সাংখ্য দর্শনকে মানতেন, আজ এখানেই শেষ করা হলো শঙ্কর জীর তৈরি অদ্বৈতবাদ বা মায়াবাদের সামান্য খণ্ডন।
ওঁ নমস্তে
0 Reviews:
Post a Comment