google01b5732cb2ec8f39 আর্যবীর आर्यवीर aryaveer

Recent News

This is default featured slide 1 title

Go to Blogger edit html and find these sentences.Now replace these sentences with your own descriptions.This theme is Bloggerized by Lasantha Bandara - Premiumbloggertemplates.com.

This is default featured slide 2 title

Go to Blogger edit html and find these sentences.Now replace these sentences with your own descriptions.This theme is Bloggerized by Lasantha Bandara - Premiumbloggertemplates.com.

This is default featured slide 3 title

Go to Blogger edit html and find these sentences.Now replace these sentences with your own descriptions.This theme is Bloggerized by Lasantha Bandara - Premiumbloggertemplates.com.

This is default featured slide 4 title

Go to Blogger edit html and find these sentences.Now replace these sentences with your own descriptions.This theme is Bloggerized by Lasantha Bandara - Premiumbloggertemplates.com.

This is default featured slide 5 title

Go to Blogger edit html and find these sentences.Now replace these sentences with your own descriptions.This theme is Bloggerized by Lasantha Bandara - Premiumbloggertemplates.com.

ঋষি দয়ানন্দ কৃত য়জুর্বেদ ২৫/৭ ভাষ্যের ভ্রান্তি নিবারণ

 ঋষি দয়ানন্দ কৃত য়জুর্বেদ ২৫/৭ ভাষ্যের ভ্রান্তি নিবারণ


ঋষি দয়ানন্দকৃত য়জুর্বেদ ২৫/৭ মন্ত্রের ভাষ্যের হিন্দি অনুবাদ নিয়ে বাংলা ও হিন্দি ভাষী পৌরাণিক বন্ধুরা খুবই খিল্লি করে থাকে এবং ঋষি দয়ানন্দ কে নানান ভাষায় গালিও দিয়ে থাকে।ফলে বৈদিক বন্ধুদের মনে শঙ্কা উৎপন্ন হতেই পারে যে তাহলে কি সত্যিই ঋষি দয়ানন্দ ভুল ভাষ্য করেছেন ? পৌরাণিকদের আচরণ দেখলে বোঝা যায় তারা ঋষি দয়ানন্দকে গালি দিলে নিজেকে গর্বিত মনে করে। যে সকল পৌরাণিক বন্ধুরা উক্ত মন্ত্রের হিন্দি অনুবাদ অনুসারে ঋষি দয়ানন্দকে গালি দিয়ে থাকে তারা কি একবারও দেখার চেষ্টা করে যে তাদের পৌরাণিক বিদ্বানেরা এই মন্ত্রের অর্থ কিরূপ করেছে ? যদি তারা পৌরাণিক বিদ্বানদের মহাবিকৃত ভাষ্য দেখতো তাহলে কখনোই ঋষি দয়ানন্দকে নিয়ে খিল্লি করতো না। ঋষি দয়ানন্দ আদৌ কোনো ভুল করেছে নাকি অন্য বিদ্বানেরা ভুল করেছে এই বিষয়ে সবার শেষে বিস্তৃত আলোচনা করা হবে। আগে দেখে নেওয়া যাক পৌরাণিক বিদ্বানেরা য়জুর্বেদ ২৫/৭ মন্ত্রের কিরূপ অর্থ করেছে-

■ আচাৰ্য সত্যব্রত সামশ্রমী, মহিধরের ভাষ্যের ওপর আধারিত■ 

য়জুর্বেদ ২৫/৭


পুষাকে বনিষ্ঠু দ্বারা প্রীত করি, অন্ধঅহিদিগকে স্থূল গুদা দ্বারা, সর্পগণকে গুদা দ্বারা, বিহতদিগকে আন্ত্র দ্বারা, জলদেবীকে বস্তি দ্বারা, বৃষণকে অণ্ডদ্বয় দ্বারা, বাজিনকে শেপ দ্বারা, প্রজাকে রেতঃ দ্বারা, চাষদিগকে পিত্ত দ্বারা প্রদরদিগকে পায়ু দ্বারা কূশ্মগণকে শকপিণ্ড দ্বারা প্রীত করি। 

■স্বামী করপাত্রীর ভাষ্য, অদ্বৈতবাদীদের একজন মহান বিদ্বান ব্রহ্মস্বরূপ■

য়জুর্বেদ ২৫/৭


बड़ी आंत के स्थानीभूत घृत से पूषा देवता को, स्थूल गुदा से अन्धे सर्पों को, गुदा के अन्य भागों से सर्पों को, छोटी आँतों से विह्रुत देवता को बस्ति से जल देवता को, वृषणों से कामनावर्षी वृषण देवता को मेद्र से बाजी को वीर्य से प्रजा को पित्त से चाप को, पायु से प्रदर को और लीद के पिण्डों से कूश्म को प्रसन्न करता हूँ।।७।।

■জিজ্ঞাসাঃ পৌরাণিকদের মহান বেদ ভাষ্যকার মহিধর ও অদ্বৈতবাদী ব্রহ্মস্বরূপ করপাত্রী উক্ত মন্ত্রের প্রায় একই ধরণের অর্থ করেছে,তারা লিখেছে- স্থূল গুদা দ্বারা অন্ধ সাপকে, গুদার অন্য ভাগ দিয়ে সর্প কে প্রসন্ন বা প্রীত করি। আমি সকল মহিধর ভক্ত ও করপাত্রী ভক্ত অদ্বৈতবাদীদের কাছে জানতে চাই যে আপনারা পশু নাকি প্রাণীর মলদ্বার দ্বারা অন্ধ সাপ কে প্রসন্ন করেন ? নাকি নিজেদের ম*লদ্বার দিয়ে অন্ধসাপ কে প্রসন্ন করেন ? স্থূল ম*লদ্বার দিয়ে অন্ধ সাপ কে প্রসন্ন করার প্রযুক্তিবিদ্যাটা কেমন, তা জানতে চাই! এবং এটাও জানতে চাই যে স্বয়ং করপাত্রী বা মহিধরও নিশ্চয় ম*লদ্বার দিয়ে অন্ধ সাপকে প্রসন্ন করেছিল ? যেহেতু মায়াবাদীদের মতে করপাত্রী ব্রহ্মস্বরূপ ছিলেন, তাই বলা যায় যে করপাত্রী ভুল করতেই পারে না। আমি আশা রাখি এইবার থেকে সকল অদ্বৈতবাদীরা স্থূল মলদ্বার দিয়ে অন্ধ সাপ কে এবং সাধারণ সাপ কে প্রসন্ন করার যথাযথ চেষ্টা করবে।

■ডঃ রেখা ব্যাস ( এম.এ., পি-এস. ডি.)>সংস্কৃত সাহিত্য প্রকাশন> আচার্য উব্বট এর অনুবাদের ওপর আধারিত■

য়জুর্বেদ ২৫/৭


बड़ी आंत पूषा देव, स्थूल गुदा अंधे सर्प देव, सामान्य गुदा अन्य सर्प देवों, बची हुई आंतें विद्युत् देव, वस्ति भाग जल देव, अंडकोष वृषण देव व उपस्थ बल देव से संबंधित हैं. वीर्य प्रजापति देव, पित्त चाष देव, पायु (गुदा) प्रदर देव व शक पिंड कूश्म देव से संबंधित हैं।। ७।।

■জিজ্ঞাসাঃ এখানে বলা হচ্ছে ''স্থূল গুদা অন্ধ সর্প দেব, সামান্য গুদা অন্য সর্প দেব সম্বন্ধীয়।'' খাজুরাহ মন্দিরের মূর্তি প্রিয় সকল পৌরাণিক বন্ধুদের কাছে আমি জানতে চাই যে কোন পশু বা প্রাণীর স্থূল ম*লদ্বার অন্ধ সাপ দেবতা সম্বন্ধীয় ? এবং কাদের সামান্য মলদ্বার অন্য সাপ দেবতা সম্বন্ধীয় ? কোন পশু বা প্রাণীর স্থূল ও সামান্য ম*লদ্বার কিভাবে সাপ সম্বন্ধীয় হতে পারে ? কারোর ম*লদ্বার থেকে সাপের বিবরণ পাওয়া কি সম্ভব ? কি আশ্চর্য! পৌরাণিক বন্ধুরা আপনাদের বিদ্বানেরা খুবই সুন্দর বেদ ভাষ্য করেছে তাই না ? 

■শ্রীরাম শর্মা আচার্য এবং ওনার শিষ্য ভগবতী দেবী শর্মার ভাষ্য■

য়জুর্বেদ ২৫/৭


स्थूल आँत का भाग पूषादेवता के लिए, स्थूल गुदा नेत्रहीन सर्पों के लिए तथा अन्य सर्पों के लिए सामान्य गुदा का भाग, आँतों का शेष भाग विह्रुत देवता के लिए, वस्ति भाग को जल के लिए, अण्डकोषों की शक्ति वृषणदेव के लिए, उपस्थ की शक्ति वाजी देव के लिए, वीर्य प्रजा के लिए, पित्त 'चाष' देवता के लिए, गुदा का तृतीय भाग प्रदरदेवों के लिए तथा शकपिण्डों को कूश्म देवता की प्रसन्नता के लिए समर्पित करते हैं ॥७ ॥

শ্রীরাম শর্মাও প্রায় মহিধর, করপাত্রীর মতোই লিখেছে 'স্থূল মলদ্বার অন্ধ সাপের জন্য এবং অন্য সাপের জন্য সামান্য মলদ্বার ভাগ প্রসন্নতার জন্য সমর্পিত করি।'

এইবার আলোচনা করা যাক ঋষি দয়ানন্দকৃত সংস্কৃত ভাষ্যের হিন্দি অনুবাদের বিষয়ে। প্রশ্ন হচ্ছে ঋষি দয়ানন্দ কি আদৌ কোনো ভুল লিখেছেন ? উত্তর হবে 'না' কেননা ঋষি দয়ানন্দ য়জুর্বেদ, ঋগ্বেদ এর ভাষ্য করেছেন সংস্কৃত ভাষায়, আর সেই ভাষ্যকে হিন্দি অনুবাদ করেছে অন্যান্য বিদ্বানেরা। তাই এই বিষয়টা সকলের মাথায় ঢুকিয়ে নেওয়া উচিত যে ঋষি দয়ানন্দের বেদ ভাষ্যের বিরুদ্ধে কিছু বলার আগে বেদাঙ্গ, ব্রাহ্মণ ইত্যাদি শাস্ত্র অধ্যয়ন করুন কেননা তিনি সংস্কৃতে বেদ ভাষ্য করেছেন হিন্দিতে নয়। আমাদের আর্য় সমাজের একজন মহান পণ্ডিত য়ুধিষ্ঠির মীমাংসক একটি গ্রন্থ লিখেছেন যার নাম 'ऋषि दयानन्द के ग्रन्थों का इतिहास' 'ঋষি দয়ানন্দ কে গ্রন্থ কা ইতিহাস' [মার্গশীর্ষ ২০০৬ সম্বত্> ১৯৪৯ খ্রিস্টাব্দে প্রকাশিত] এই গ্রন্থে মীমাংসক জি ঋষি দয়ানন্দ কৃত সকল সংস্কৃত ও হিন্দি গ্রন্থের বিষয়ে আলোচনা করেছেন। যে সকল বিদ্বানেরা সংষ্কৃত ভাষ্য থেকে হিন্দি ভাষানুবাদ করেছিলেন তারা প্রায়ই জায়গায় ভুল করেছিলেন, ঋষি দয়ানন্দ কিছু ভুল সংশোধনও করেছিলেন কিন্তু সম্পূর্ণরূপে করতে পারেননি। ঋষি দয়ানন্দকৃত বেদভাষ্য বিষয়ে মীমাংসক জি উক্ত গ্রন্থের ৯০-১০৮ পৃষ্ঠায় লিখেছেন, তিনি সেখানে ঋষি দয়ানন্দের 'পত্র ব্যবহার' থেকে নানান প্ৰমাণও দিয়েছেন।


এইবার দেখে নেওয়া যাক ঋষি দয়ানন্দ য়জুর্বেদ ২৫/৭ মন্ত্রের সংস্কৃত ভাষ্য-

पदार्थ :- (पूषणम्) पुष्टिकरम् (वनिष्ठुना) याचनेन ( अन्धाहीन्) अन्धान् सर्पान् (स्थूलगुदया) स्थूलया गुदया सह ( सर्पान्) (गुदाभि:) (विह्रुतः) विशेषेण कुटिलान् (आन्त्रैः) उदरस्थैर्नाडीविशेषैः (अप) जलानि ( वस्तिना) नाभेरधोभागेन ( वृषणम्) वीर्याधारम् ( आण्डाभ्याम्) अण्डाकाराभ्यां वृषणावयवाभ्याम् (वाजिनम्) अश्वम् (शेपेन) लिङ्गेन (प्रजाम् ) सन्ततिम् (रेतसा) वीर्येण (चापान्) भक्षणानि (पित्तेन ) ( प्रदरान्) उदरावयवान् (पायुना) एतदिन्द्रियेण ( कूश्मान् ) शासनानि । अत्र कशधातोर्मक्प्रत्ययोऽन्येषामपीति दीर्घश्च (शकपिण्डैः) शक्तैः संघातैः॥७॥


ঋষি দয়ানন্দ এই মন্ত্রের ভাষ্যে যা বোঝাতে চেয়েছিলেন তা হিন্দি অনুবাদকেরা বুঝে উঠতে পারেনি, কাজেই তারা এই মন্ত্রের অর্থ তেমনই করেছে যেমনটা বেদ অজ্ঞ পৌরাণিক বিদ্বানেরা করেছে, প্রকৃত ভুলটা হয়েছে এই জায়গায়। দুঃখের বিষয় হলো আজ পর্যন্ত এই ভুল গুলোকে সংশোধন করা হয়নি। পৌরাণিকরা যেমন এমন এক ধরণের প্রাণী যারা ১৮+ পুরাণ কাহিনীর মধ্যে নিজেদের মান্য ঈশ্বর, মুনি, ঋষিদের লম্পট বানিয়েছে, কুলষিত করেছে তবুও আজ পর্যন্ত এমন কোনো পুরাণ বিদ্বান দেখলাম না যারা পুরাণ থেকে বিকৃত বিষয় গুলোকে বাদ দেওয়ার চেষ্টা করেছে অথবা পুরাণ কাহিনীর বিকৃত বিষয় গুলোর বিরুদ্ধে কিছু লিখেছে, ঠিক এই প্রকারের প্রাণী আর্য সমাজের মধ্যেও বিদ্যমান রয়েছে নয়তো এই সকল ভুল গুলোকে সংশোধন করা হতো। আমাদের বৈদিকদের মধ্যে কয়জন জানে যে ঋষি দয়ানন্দ হিন্দি ভাষায় নয় বরং সংস্কৃতে বেদ ভাষ্য করেছিলেন ? অনেকেই জানেনা, কাজেই তারা মনে করে হিন্দি ভাষ্যও ঋষি দয়ানন্দ স্বয়ং করেছেন। ফলে হিন্দি অনুবাদে কোনো ভুল পেলে মনে করা হয় ঋষি দয়ানন্দই ভুল করেছে, এতে হিন্দি অনুবাদকের না বরং ঋষি দয়ানন্দেরই বদনাম হবে। এই সাধারণ জ্ঞান গুলো  আমাদের ওই সকল বিদ্বানদের নেই যারা আজও ভুল গুলোকে সংশোধন করার কোনো প্রয়াস করেনি!


বর্তমান সময়ের একজন শ্রেষ্ঠ বৈদিক বিদ্বান এবং নৈষ্টিক ব্রহ্মচারী হলেন আচাৰ্য় অগ্নিব্রত। যিনি মহর্ষি ঐতরেয় মহিদাসের লেখা ঐতরেয় ব্রাহ্মণের ভাষ্য করেছেন, যে গ্রন্থের নাম দেওয়া হয়েছে 'বেদ বিজ্ঞান আলোক'। ওনার সম্পর্কে আরও জানতে হলে vaidic physics ইউটিউব চ্যানেল দেখুন। আচাৰ্য় অগ্নিব্রত জি ঋষি দয়ানন্দ কৃত সংস্কৃত ভাষ্যের বিস্তৃত ব্যাখ্যা করেছেন। আসুন দেখি-


পদার্থঃ হে মনুষ্য! (বনিষ্ঠুনা) যাচন অর্থাৎ গ্রহণ করার ইচ্ছা তথা নষ্ট করার প্রবৃত্তি এই উভয় প্রকারের কর্ম দ্বারা (পূষণম্) পুষ্টি করণের ক্রিয়া সম্যক্ প্রকারে সম্পূর্ণ হয়। এই বিষয়ে ধ্যান দেওয়া উচিত যে শরীর এবং ব্রহ্মাণ্ড উভয়ের সংযোগ-বিয়োগ অথবা সৃজন-বিনাশ উভয় প্রকারের প্রবৃত্তির প্রক্রিয়া একসাথে চলে। 

এদের মধ্যে একটির অভাব হলেই সৃষ্টি প্রক্রিয়া সমাপ্ত হয়ে যাবে। এখানে ঋষি দয়ানন্দকৃত 'য়াচনেন' পদের দুই প্রকারের অর্থ গ্রহণ করা উচিত। যদি এখানে কেউ 'য়াচনেন' পদের দুই প্রকার অর্থ গ্রহণ না করে তাহলে তাকে বনিষ্ঠুনা পদ 'বনু য়াচনে' তথা 'বনু সম্ভক্তৌ' এই দুই ধাতু হতে ব্যুৎপন্ন মানা উচিত। তাহলে এখানে দুই প্রকার অর্থ বের হয়।  (স্থূলগুদয়া) স্থূল গুদা অথবা পুচ্ছভাগ দ্বারা (অন্ধাহীন্) অন্ধ সর্প নিজের ক্রিয়া সমূহকে করতে সমর্থ হয়। আমরা জানি যে সমস্ত সাপ অন্ধ হয় তাদের পুচ্ছ বা লেজ মুখের সাদৃশ্য মোটা হয়ে থাকে। সেখানেই সর্পের গুদাও থাকে। সেই স্থূল গুদার মাধ্যমে সর্প ডিম দেয়। এই কারণে  গুদা স্থূল হয়ে থাকে। brahminy blind snake শুধুমাত্র মহিলা হয়, পুরুষ হয়না। এই কারণে এই সাপ পুরুষের সংযোগ ছাড়াই গুদা দ্বারা ডিম দেয়। কাজেই বলা হয়েছে স্থূল গুদা দ্বারা অন্ধ সর্প নিজের কর্ম করে থাকে। 

Brahminy blind snake
                              

(গুদাভিঃ) গুদা অথবা পুচ্ছভাগ দ্বারা (বিহ্রুতঃ) বিশেষ রূপে বক্রগতি করা সর্প নিজের গতি আদি ক্রিয়াকে সম্যগ্রূপেণ করতে সমর্থ হয়। এখানে 'বিহ্রুতঃ' শব্দ দ্বারা শাকল সর্প গ্রহণ করা যায়। এই সাপ নিজের পুচ্ছ অথবা গুদা ভাগকে মুখ দিয়ে দাবিয়ে রেখে গোলাকার হয়ে চাকার সাদৃশ্য গতি করে থাকে। এই সর্পকে ইংরেজি ভাষায় hoop snake বলা হয়।

Hoop snake
                                      

 এই প্রকারের সর্পের বিষয়ে বৈজ্ঞানিকদের শঙ্কা রয়েছে। ঐতরেয় ব্রাহ্মণেও এক স্থানে এই প্রকার সর্পের বর্ণনা রয়েছে। আচার্য সায়ণও ঐতরেয় ব্রাহ্মণের ভাষ্যে এই সর্পের চর্চা করেছেন, সম্ভবত এই সর্পের প্রজাতি বিলুপ্ত হয়ে গেছে। কিছু সর্প নিজের লেজ নাড়িয়ে আওয়াজ পূর্বক শিকারকে আকর্ষিত করে ধরে নেয়, এখানেও কিন্তু গুদা বা পুচ্ছের ভূমিকা থাকে কিন্তু এখানে গতি করার  জন্য নয় বরং শিকার করার ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখে। এই কারণে গুদার মাধ্যমে এদের ক্রিয়াশীল হওয়া অথবা সম্যক্ ক্রিয়া করার চর্চা এখানে রয়েছে। (সর্পান্) অন্য প্রকারের সর্প (আন্ত্রৈঃ) উদরস্থ নাড়ী [অমতি জানাতি প্রোপ্নোতি য়েন তত্ অন্ত্রম্ (উণাদি কোষ ৪/১৬৫)] অর্থাৎ সর্প শরীরের ওপর তৈরি হওয়া শল্কের দ্বারাই সে নিজের সকল কর্ম করতে সমর্থ হয়। 

ভাবার্থঃ হে মনুষ্য! সৃষ্টিতে সংযোগ বিয়োগের গুণ দ্বারা বিভিন্ন ক্রিয়া, পদার্থের রক্ষা এবং পালন, অন্ধ সাপের পুচ্ছ বা গুদাভাগ দ্বারা ডিম দেয় অথবা এর সাহায্যে শাকল সাপের গতি করা, সমস্ত সাপের মাংসপেশী দ্বারা হওয়া কর্ম, শরীরে মূত্র বিসর্জনের সম্যক্ ক্রিয়ার দ্বারা শরীরে জলের সম্যক্ কার্যশীল থাকা, অন্ডকোষে অবয়ব ভূত অণ্ড স্বস্থ হওয়াতেই অন্ডকোষের সমর্থ হওয়া। পৌরুষ শক্তি সম্পন্ন ঘোড়া আদি বলবান প্রাণীর বল বিদ্যমান থাকা, শুক্র এবং বীর্যের শুদ্ধতা এবং স্বাস্থ্যের দ্বারা স্বস্থ প্রজা  উৎপন্ন হওয়া, পিত্ত আদি পাচক রসের দ্বারা ভোজন পচনশীল হওয়া, মল আদি বিসর্জনের সম্যক্ ক্রিয়ার দ্বারা শরীরের সকল অঙ্গ স্বস্থ থাকা এবং মস্তিকগত স্নায়ু সমূহের স্বস্থ এবং সবল থাকার ফলে শরীরের অন্যান্য অঙ্গ সমূহের সম্যক্ নিয়ন্ত্রণ এবং সঞ্চালন আদি কর্ম হয়ে থাকে, এইরুপ তুমি জানো।

আমি পুরো মন্ত্রের ব্যাখ্যা তুলে ধরলাম না , যেটুকু নিয়ে শঙ্কা রয়েছে সেটাই তুলে ধরলাম। কারোর যদি ইচ্ছে হয় আরও বিস্তারিত জানার, তাহলে এই লিঙ্ক থেকে দেখে নেবেন। আচাৰ্য় অগ্নিব্রত জি এখানে উক্ত মন্ত্রের তিন প্রকারের ভাষ্য করেছেন

👉য়জুর্বেদ ২৫/৭ ভাষ্য [আচাৰ্য় অগ্নিব্রত নৈষ্টিক] pdf 👈


এই বিষয়ে সকল বৈদিক বন্ধুদের ধ্যান দেওয়া উচিত যে ঋষি দয়ানন্দ যেমন বেদ ভাষ্য করতে চেয়েছিলেন তেমন ভাষ্য করতে পারেনি। ঋষি দয়ানন্দ সাংকেতিক বেদ ভাষ্য করেছেন। 

ঋষি দয়ানন্দ বলেছিলেন বেদের মধ্যে সকল প্রকারের বিদ্যা রয়েছে [ ঋগ্বেদাদিভাষ্যভূমিকা/ ব্রহ্মবিদ্যাবিষয়]। তিনি বলেছিলেন -যদি এমন বিস্তৃত ভাষ্য আমি চার বেদের করি, তাহলে চার বেদের ভাষ্য করতে চারশো বছর সময় লাগবে। [ঋগ্বেদ মহাভাষ‍্যম্, আচাৰ্য় বিশ্বশ্রবা ব্যাস, পৃষ্ঠা-১৪৭]। ঋষি দয়ানন্দ ভ্রান্তি নিবারণ গ্রন্থে লিখেছেন- পরমাত্মার কৃপায় আমার শরীর সুস্থ থাক এবং সেই দিনের দেখা মিলবে যেদিন বেদ ভাষ্য সম্পূর্ণ হয়ে যাবে সেদিন নিঃসন্দেহে এই আর্য়্যাবর্ত্ত দেশে সূর্যের সমান প্রকাশিত হবে, যাকে ধ্বংস করার সামর্থ্য কারোর থাকবে না। কেননা সত্যের মূল এমন নয় যে যাকে যে কেউ খুবই সহজে উপড়ে ফেলবে। বেদের প্রতিটি মন্ত্রের তিন প্রকারের অর্থ হয় আধ্যাত্মিক, আধিভৌতিক ও আধিদৈবিক বিষয়ে নিম্নলিখিত পোষ্টটি দেখে নেবেন-

 👉বেদ মন্ত্রের ত্রিবিধ ভাষ্য বিষয়ক👈


ঋষি দয়ানন্দ বলেছেন চার বেদের পূর্ণাঙ্গ ভাষ্য করতে চারশো বছর সময় লাগবে অর্থাৎ প্রতিটি বেদের একশো বছর করে সময় লাগবে, কিন্তু ঋষি দয়ানন্দ বেদ ভাষ্য করার জন্য ১০ বছরও সময় পাননি অর্থাৎ বলা যায় যে তিনি যেমন ভাষ্য করতে চেয়েছিলেন তার ২০% করতেও পারেননি। এই অধার্মিক নিকৃষ্ট সমাজ ঋষি দয়ানন্দকে বেঁচে থাকতে দেয়নি! সামান্য উদাহরণ স্বরূপ দেখুন ঋষি দয়ানন্দ ঋগ্বেদ ১/১/১ মন্ত্রের ভাষ্য করেছেন প্রায় ২ পৃষ্ঠায় কিন্তু কয়েক সুক্ত পেরিয়ে গিয়ে দেখুন কত ছোট ছোট ভাষ্য করেছেন। প্রায়ই মন্ত্রের কিছু কিছু শব্দের অর্থ তিনি করেননি, খুবই সংক্ষিপ্ত ভাষ্য করেছেন। ঋষি দয়ানন্দ হয়তো বুঝতে পেরেছিলেন যে এই নোংরা সমাজ তাকে বেশিদিন বাঁচতে দেবে না, কাজেই তিনি বেদের ভাষ্য খুবই সাংকেতিক করেছিলেন। কিন্তু আমাদের বিদ্বানেরা ঋষি দয়ানন্দের সাংকেতিক ভাষ্যকে ঠিকভাবে বুঝতে না পেরে ভুলভাল অর্থ করেছেন। 


আমি এই পোষ্ট টি লিখলাম শুধুমাত্র বৈদিক বন্ধুদের জন্য শঙ্কা সমাধান হিসেবে। যে সকল পৌরাণিকরা ঋষি দয়ানন্দ কে গালি দেয়, তাদেরকে ঋষি দয়ানন্দের বেদ ভাষ্য বিষয়ে কিছু বোঝানোর কোনো ইচ্ছে আমার নেই। মহারাজ ভর্তৃহরি বলেছেন- ''সর্বস্যৌষধমস্তি শাস্ত্র বিহিতম্ মূর্খস‍্যনাস্ত্যৌষধম্।'' সকল রোগের ঔষধ শাস্ত্রে লিখিত রয়েছে কিন্তু মূর্খের ঔষধ শাস্ত্রে নাই অর্থাৎ দুঃখ রূপী রোগ থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার জন্য শাস্ত্রে বহু কথন রয়েছে কিন্তু মূর্খকে বোঝানোর মত কোনো কথন শাস্ত্রে নাই [ভর্তৃহরি, নীতি শতক/ ১০]। কিন্তু আমি মনে করি আগামীতে সকল পৌরাণিক বন্ধুরা মিলে অনুসন্ধান বিষয়ক একটি সংস্থা খুলবে। তারা দেশ বিদেশ ঘুরে নানান পশু বা প্রাণীদের সংগ্ৰহ করবে এবং তাদের মলদ্বার অণুবীক্ষণ যন্ত্র দ্বারা পরীক্ষা করে দেখবে যে সেই মলদ্বার দ্বারা অন্ধ সাপ দেবতার সম্পর্কে কিভাবে জানা যায় এবং সামান্য মলদ্বার পরীক্ষা করে দেখবে যে সাপ দেবতার সম্পর্কে কিভাবে জানা যায়। পরীক্ষায় সফল হলে হয়তো আচার্য উব্বটের কার্যের [বেদ ভাষ্য] প্রশংসা সকলেই করবে।  ঠিক এইরূপ ব্রহ্মস্বরূপ করপাত্রীর কথা অনুসারে কোন কোন পশু বা প্রাণীর স্থূল ম*লদ্বার দ্বারা অন্ধ সাপ কে এবং ম*লদ্বারের অন্য ভাগ দিয়ে সাপকে প্রসন্ন করা সম্ভব এই বিষয়ে পরীক্ষা করা হবে। আমি মনে করি এই পরীক্ষার কাজটা পুরীর নিশ্চলানন্দ সরস্বতী কে দেওয়া উচিত, কেননা তিনিও মায়াবাদী। 


নমস্তে

সত্যমেব জয়তে

কৃণ্বন্তো বিশ্বমার্য়ম্

সনাতন ধর্মের জয় হোক

জয় আর্য়াবর্ত🚩🚩





বেদের প্রতিটি মন্ত্রের আধিদৈবিক, আধিভৌতিক ও আধ্যাত্মিক অর্থ হয়

 



বর্তমান সময়ে ৪ হাত যুক্ত বিষ্ণুর কিছু ভক্তরা (বৈষ্ণব) সকল শাস্ত্র কে তুচ্ছ করে শুধুমাত্র গীতাকে নিয়ে লাফালাফি করে। সনাতন ধর্মের মূল হল বেদ, এরা যুক্তিতে না পারলে বেদকে তুচ্ছ করতেও কারোর পরোয়া করেনা। আর এই সকল বৈষ্ণবরা বেদের চেয়েও গীতাকে শ্রেষ্ঠ প্রমাণ করার জন্য গীতা ২/৪৫ শ্লোকটি খুবই ব্যবহার করে থাকে। আসুন দেখি এই শ্লোকে কি রয়েছে- 


ত্রৈগুণ‍্যবিষয়াঃ বেদাঃ নিস্ত্রৈগুণ‍্যঃ ভব অর্জুন ।

নির্দ্বন্দ্বঃ নিত্যসত্ত্বস্থঃ নির্য়োগক্ষেমঃ আত্মবান্ ॥৪৫


অর্থ-বেদে প্রধানত জড়াপ্রকৃতির তিনটি গুণ সম্বন্ধেই বলা হয়েছে। হে অর্জুন! তুমি সেই গুণ গুলিকে অতিক্রম করে নির্গুণস্তরে অধিষ্ঠিত হও। সমস্ত দন্দ্ব থেকে মুক্ত হও এবং লাভ ক্ষতি ও আত্মরক্ষার দুশ্চিন্তা থেকে মুক্ত হয়ে আধ্যাত্ম চেতনায় অধিষ্ঠিত হও।



যে সকল পৌরাণিক বিদ্বানরা গীতার ভাষ্য করেছেন, তাদের মধ্যে প্রায় সকলেই উক্ত শ্লোকের একই অর্থ করেছেন। এখানে বলা হচ্ছে যে বেদে প্রধানত জড় প্রকৃতির তিন গুণের বিষয়ে বলা হয়েছে। এখানে অর্জুনকে বলা হচ্ছে এই গুণ গুলোকে অতিক্রম করতে। আসলে এই ত্রিগুণ কি ? ঋষি কপিল লিখেছেন- সত্ত্বরজস্তমসাং সাম‍্যাবস্থা প্রকৃতিঃ। [সাংখ্য দর্শন ১/৬১] প্রকৃতির মধ্যে সত্ত্ব, রজঃ ও তমঃ গুণ সমান অবস্থায় থাকে। এই সূত্রে আরও বলা হয়েছে এই প্রকৃতি থেকেই সূক্ষ্ম সূক্ষ্ম পদার্থ তৈরি হতে হতে স্থূল ভূত আদি তৈরি হয়েছে। অর্থাৎ এই জগতে যে সকল জড় পদার্থ রয়েছে তা সবই প্ৰকৃতি নামক উপাদানের অংশ। 


এইবার দেখে নেওয়া যাক গীতা ২/৪৫ শ্লোক অনুযায়ী বৈষ্ণব বন্ধুরা যে দাবিটি করে থাকে তা কতটা সত্য। বেদের ৬ টি অঙ্গ রয়েছে যার মধ্যে একটি হল নিরুক্ত, বর্তমানে যে নিরুক্ত শাস্ত্রটি পাওয়া যায় তা লিখেছেন ঋষি য়াস্ক। নিরুক্তের ৭/১ অনুযায়ী বেদের প্রতিটি মন্ত্রের তিন প্রকার অর্থ হয়। এইবার এই বিষয়ে প্রাচীন কিছু নিরুক্ত টীকাকারের মান্যতা দেখে নেওয়া যাক- 


#স্কন্দস্বামী


সর্বদর্শনেশু চ সর্বে মন্ত্রা য়োজনীয়াঃ।  কুতঃ ? স্বয়মেব ভাষ্যকারেণ সর্বমন্ত্রাম্ ত্রিপ্রকারস‍্য বিষয়স‍্য প্রদর্শনায় অর্থবাচঃ পুষ্পফল মাহ ইতি যজ্ঞাদীনাম্ পুষ্পফলত্বেন প্রতিজ্ঞানাত্।


[ নিরুক্ত ৭/৫, স্কন্দস্বামী টীকা] 


অর্থাৎ সর্ব পক্ষে সমস্ত মন্ত্রের যোজনা করা উচিত। কেননা স্বয়ং ভাষ্যকার (নিরুক্তকার য়াস্ক) সমস্ত মন্ত্রে তিন প্রকারের বিষয় কথন করার জন্য অর্থ কে মন্ত্ররূপী বাক্ এর পুষ্প ফল বলেছেন। এবং যজ্ঞ আদিকে পুষ্প বা ফল বলেছেন।



#দুর্গাচার্য


আধ্যাত্মিকাধিদৈবতাধিয়জ্ঞাভিবায়িনাং মন্ত্রাণামর্থাঃ পরিজ্ঞায়ন্তে।


[নিরুক্ত ১/১৮ দুর্গাচার্য টীকা]


দুর্গাচার্য এখানে তিন প্রকারের অর্থের কথা বলেছেন। 


তস্মাদেতেষু য়াবন্তোঽর্থা উপপদ্যেরন্নধিদৈবাধ্যাত্মাধিয়জ্ঞাশ্রয়া সর্ব এব তে য়োজ্যাঃ মাত্রাপরাধোঽস্তি।


[নিরুক্ত ২/৮, দুর্গাচার্য টীকা] 


আধিদৈবিক আধ্যাত্মিক এবং অধিযজ্ঞে  আশ্রিত যতটা অর্থ সম্ভব হয়, সেগুলোর যোজনা করা উচিত। এমনটা করা কোনো অপরাধ নয়। 



#ঋষি দয়ানন্দও একই মান্যতা দিয়েছেন- 


সর্বেমন্ত্রাস্ত্রিবিধানামর্থানাম্ বাচকা ভবন্তি। কেচিত্ পরোক্ষাণাং, কেচিত্ প্রত‍্যক্ষাণাং, কেচিদধ‍্যাত্মম্ বক্তুমর্হাঃ।


[ঋগ্বেদাদিভাষ্যভূমিকা, প্রশ্নোত্তরবিষয়ঃ, ঋষি দয়ানন্দ সরস্বতী] 


অতএব বেদের প্রতিটি মন্ত্রের তিন প্রকারের অর্থ পাওয়া যায়, যেমন- আধ্যাত্মিক অর্থাৎ যা জীবাত্মা- পরমাত্মা বিষয়ক, আধিদৈবিক যা সূর্য, চন্দ্র আদি পদার্থ বিষয়ক এবং আধিযাজ্ঞিক বা আধিভৌতিক অর্থাৎ যাজ্ঞিক, সামাজিক অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক আদি বিষয়ক। অতএব গীতা ২/৪৫ শ্লোক অনুযায়ী যে দাবিটি করে থাকে আমাদের বৈষ্ণব বন্ধুরা তা শতভাগ মিথ্যা!কেননা শাস্ত্র অনুযায়ী বেদের প্রতিটি মন্ত্রের আধ্যাত্মিক অর্থ হয়। তাই এই কথা বলা পুরোই পাগলামি যে বেদের মধ্যে প্রধানত জড় প্রকৃতির বিষয়ে আলোচনা রয়েছে।


এই শ্লোক নিয়ে বৈষ্ণবরা আরও ধরণের পাগলামি করে থাকে, বৈষ্ণবদের মতে বেদে যেহেতু প্রধানত জড় প্রকৃতির বিষয়ে আলোচনা রয়েছে তাই বেদে কে অতিক্রম করে গুণাতীত হতে বলা হয়েছে অর্থাৎ বেদ জ্ঞান অর্জন করার কোন দরকার নাই, গীতা মানলেই গুণাতীত হওয়া যাবে। বৈষ্ণবদের এই পাগলামি দেখে একটা ১০ বছরের বুদ্ধিমান শিশুও হাসবে! কিছুক্ষণের জন্য যদি ধরেও নেওয়া হয় বেদে শুধুই জড় প্রকৃতির বিষয়ে কথন রয়েছে আর গীতায় বলা হয়েছে এই সকল গুণ অতিক্রম করতে। তো এই ত্রিগুণ যুক্ত প্রকৃতির বিদ্যা (বেদ) না জেনেই কি এই ত্রিগুণকে অতিক্রম করা যাবে ? উদাহরণ স্বরূপ একজন ব্যক্তিকে বলা হলো যে- আপনি আর মাত্র ১০০ কিমি পথ অতিক্রম করলেই দিল্লি পৌঁছে যাবেন। তার মানে কি এই যে ওই ব্যক্তিকে ১০০ কিমি পথ যেতে বারণ করা হচ্ছে ? ১-৯ শ্রেণীর বিদ্যা অতিক্রম করলে ১০ শ্রেণীতে ওঠা যায়। এর মানে কি এই যে ১-৯ শ্রেণীর বিদ্যা ত্যাগ করে ১০ শ্রেণীতে ওঠা সম্ভব ? সম্ভব নয়। ঠিক তেমনি জড় প্রকৃতির গুণ সমূহকে আগে জানতে হবে তারপরই সেই গুণ গুলোকে অতিক্রম করা সম্ভব, অন্যথা সম্ভব নয়। এখন কিছু বৈষ্ণব বলতে পারে যে 'আমরা জড় প্রকৃতিকে জানতে চাই না, না জানলেও ঈশ্বর কে পাওয়া যাবে গীতা ১৮/৬২, ৬৬ শ্লোক মানলেই হবে'। আমি এই সকল বৈষ্ণবদের বলতে চাই যে গীতা ১৩/২৪ শ্লোকে স্পষ্ট করে বলা আছে প্রকৃতি কে এবং ঈশ্বর কে জানলে মোক্ষ লাভ হবে। অতএব গীতা ২/৪৫ শ্লোকে যদি প্রকৃতির বিদ্যাকে জানতে বারণ করে, তাহলে তো এই বৈষ্ণবরা নিজেই গীতাকে স্ববিরোধী ও মিথ্যা শ্লোকের গ্রন্থ বানিয়ে দিচ্ছে। 



#শেষে এটাই বলবো যে গীতা গীতা করে লাফানো এবং বেদ কে তুচ্ছ মনে করা প্রাণীদের উদ্দেশ্যে বলবো যে আপনারা গীতা কে আগে ভালো করে পড়ুন। গীতা ঠিক করে না পড়ে ও বুঝে লম্ফঝম্প করা বন্ধ করুন! আপনাদের বৈষ্ণবদের সংখ্যা দিনের পর দিন বাড়ছে এর জন্য নিজেদের বিশাল ভাবার কিছু নাই, জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পেলেই যে তা সত্যের পথ এমনটা মনে করা ভ্রম মাত্র। বর্তমান সময়ে খ্রিষ্টান মতবাদের জনপ্রিয়তা সবচেয়ে বেশি তাদের সারা বিশ্বে ২০০ কোটির বেশি খ্রিস্টান রয়েছে। তাই কেউ যদি বলে খ্রিস্টানরা সত্যের পথে আছে এমনটা ভাবা মুর্খতাপূর্ণ। ধর্ম মিথ্যা বা অন্ধবিশ্বাসের ওপর নির্ভর করে চলে না, যা অযৌক্তিক, মিথ্যা তা ধর্মের অংশ হতে পারে না। স্রষ্টা যেমন সত্য, ঠিক তেমনি তার তৈরি ধর্মও সত্য। 



নমস্তে

সত্যমেব জয়তে

কৃণ্বন্তো বিশ্বমার্য়ম্

সনাতন ধর্মের জয় হোক

জয় আর্য়াবর্ত🚩🚩



সাত্ত্বিক, রাজসিক, তামসিক মনুষ্যের লক্ষণ

 সাত্ত্বিক, রাজসিক, তামসিক মনুষ্যের লক্ষণ



জীবাত্মা এবং পরমাত্মা ইতর যে সকল পদার্থ এই জগতে রয়েছে তার মূল হলো অব্যক্ত প্রকৃতি যার মধ্যে সত্ত্ব রজঃ তমঃ এই তিন গুণ সমান ভাবে বিদ্যমান রয়েছে। এই তিন গুণের প্রকৃতিই হলো এই জগৎ সৃষ্টির উপাদান পদার্থ এবং পরমাত্মা হলেন জগতের নির্মাণ কর্তা। যেহেতু এই জগতের প্রতিটি বস্তুর মধ্যে প্রকৃতির এই তিন গুণ বিদ্যমান রয়েছে সেহেতু মনুষ্যের শরীরের মধ্যেও এই তিন গুণ বিদ্যমান রয়েছে। মনুষ্যের মধ্যে কিরূপ লক্ষণ দেখা দিলে বোঝা সম্ভব যে তার সত্ত্ব, রজঃ, বা তমঃ গুণের প্রধানতা রয়েছে, এই বিষয়ে ঋষি মনু সুন্দর ভাবে আলোচনা করেছেন। 


মনুস্মৃতি ১২ অধ্যায়

যখন আত্মায় জ্ঞান থাকে তখন সত্ত্বগুণ, যখন আত্মায় অজ্ঞানতা থাকে তখন তমঃ গুণ, যখন আত্মায় রাগ-দ্বেষ থাকে তখন রজোগুণ প্রবল বলে জানবে। প্রকৃতির এই তিন গুণ সাংসারিক যাবতীয় পদার্থের মধ্যে ব্যাপ্ত হয়ে আছে।।২৬।।

যখন আত্মায় প্রসন্নতা থাকে, মন প্রসন্ন এবং প্রশান্ত অবস্থার ন্যায় শুদ্ধ ভাবযুক্ত থাকে, তখন বুঝতে হবে যে সত্ত্বগুণ প্রধান, রজঃ ও তমোগুণ অপ্রধান রয়েছে ৷৷ ২৭।।

যখন আত্মা ও মন দুঃখিত ও অপ্রসন্ন হয়ে বিষয়ে ইতস্ততঃ বিচরণ করে, তখন বুঝতে হবে যে, রজোগুণ প্রধান এবং সত্ত্ব ও তমোগুণ অপ্রধান রয়েছে ।।২৮

আত্মা মোহযুক্ত, খারাপ ভালো বিষয়ে জ্ঞান শূন্য, কোনো প্রকার বিচারে অস্পষ্টতা ইন্দ্রিয়ের বিষয়ে আসক্ত তর্ক বিতর্ক শূন্য কোনো বিষয়ে স্পষ্ট জানতে অক্ষম  এমন আচরণকারীর মধ্যে তমোগুণের প্রধানতা রয়েছে।।২৯।।

বেদ অভ্যাস, ধর্ম অনুষ্ঠান, জ্ঞান উন্নতি, পবিত্রতা লাভের ইচ্ছা, ইন্দ্রিয় নিগ্রহ, ধর্মক্রিয়া এবং আত্মচিন্তন হলো সত্ত্বগুণের লক্ষণ।।৩১।।

যখন রজোগুণের উদয় এবং সত্ত্ব ও তমোগুণের আবির্ভাব ঘটে, তখন কার্য আরম্ভে অরুচি, ধৈর্য্যত্যাগ, অসৎ কর্ম- গ্রহণ এবং নিরন্তর বিষয়ভোগে প্রীতি হয়ে থাকে। তখনই বুঝতে হবে যে আমার মধ্যে রজোগুণ প্রধানরূপে কাজ করছে।।৩২।।

যখন তমোগুণের আবির্ভাব এবং অন্য দুই গুণের অন্তৰ্ভাব ঘটে, তখন অত্যাধিক লোভ অর্থাৎ সকল পাপের বৃদ্ধি পায়, অত্যাধিক আলস্য ও নিদ্রা, ধৈর্য্য নাশ, ক্রূরতা জন্মে, নাস্তিক্য অর্থাৎ বেদ ও ঈশ্বরের প্রতি অশ্রদ্ধা জন্মে, অন্তঃকরণের বিভিন্ন বৃত্তি ও একাগ্রতা,  অভাব যার তার নিকট ভিক্ষা করা, প্রমাদ অর্থাৎ মদ্যপান আদিতে বিশেষ আসক্তি জন্মে তখন বুঝতে হবে যে আমার মধ্যে তমোগুণ প্রধান রূপে কাজ করছে।।৩৩।।

কোনো কর্ম করতে এবং করার ইচ্ছে হলে নিজের আত্মায় লজ্জা, সংশয় ও ভয় অনুভব হয় তখন বুঝতে হবে যে আত্মার মধ্যে তমোগুণের প্রাবল্য হয়েছে।।৩৫।।

যখন জীবাত্মা কর্ম দ্বারা ইহলোকে বিপুল য়শ লাভের আকাঙ্ক্ষা করে এবং দরিদ্র হয়েও প্রসিদ্ধি লাভের জন্য চারণ, ভাট আদিকে দান দেওয়া ত্যাগ করেনা, তখন বুঝতে হবে আমার আত্মায় রজোগুণ প্রবল হয়েছে।।৩৬।।

যখন মনুষ্যের আত্মা সর্বত্র জ্ঞানলাভের ইচ্ছা করে, নানান গুণ গ্রহণ করে থাকে, সৎকর্মে লজ্জা অনুভব করেনা এবং সৎকর্মে প্রসন্ন হয় অর্থাৎ ধর্ম আচরণে রুচি থাকে, তখন বুঝতে হবে আমার মধ্যে সত্ত্বগুণ প্রবল হয়েছে।।৩৭।।

তমোগুণের লক্ষণ কাম, রজোগুণের লক্ষণ অর্থসংগ্রহের ইচ্ছা এবং সত্ত্বগুণের লক্ষণ ধর্ম সেবা। তমোগুণ অপেক্ষা রজোগুণ এবং রজোগুণ অপেক্ষা সত্ত্বগুণ শ্রেষ্ঠ।।৩৮।।

কেউ যদি এমন ভেবে থাকে যে সাত্ত্বিক ব্যক্তির শরীরে শুধুমাত্র সত্ত্ব গুণ রয়েছে বা তামসিক ব্যক্তির শরীরে শুধুমাত্র তমঃ গুণ রয়েছে, তাহলে সেটা ভাবা ভুল হবে।প্রকৃতির মধ্যে এই তিন গুণ সমভাবে রয়েছে কাজেই মনুষ্যের শরীরের মধ্যেও এই তিনগুণ সমভাবে রয়েছে। কিন্তু যার শরীরে যখন সত্ত্বগুণ বা রজঃ গুণ বা তমঃ গুণ প্রধান রূপে কাজ তখন উক্ত প্রকারের লক্ষণ গুলো দেখা দেবে।


সত্যার্থ প্রকাশ সপ্তম সমুল্লাস

সকলকে নমস্তে

কৃণ্বন্তো বিশ্বমার্য়ম্🚩🚩




হিন্দুদের মূর্তি ভেঙ্গে ফেলা নিয়ে ঋষি দয়ানন্দের নামে অপপ্রচারের জবাব

নিষ্কলঙ্ক ঋষি দয়ানন্দ 



আর্য সমাজের জনপ্রিয়তা দেখে পৌরাণিক বন্ধুদের শরীরে আগুন জ্বলতে শুরু করেছে, কাজেই সব সময় পোড়া পোড়া গন্ধ পাওয়া যায়। পৌরাণিক বন্ধুরা কোমড়ে গামছা বেঁধে ঋষি দয়ানন্দের নামে মিথ্যাচার করার সঙ্কল্প নিয়েছে। পৌরাণিক বন্ধুদের নতুন এক অপপ্রচার হলো মাদাম ব্লাভাটস্কি নামের এক বিদেশী তার এক গ্রন্থে লিখেছে যে ঋষি দয়ানন্দ নাকি হিন্দুদের ১০০ টি মূর্তি ভেঙেছিল আদি আদি।

পৌরাণিকরা ঋষি দয়ানন্দের নামে যে সকল অপপ্রচার করে তার জবাব দেওয়া উচিতই নয়, কারণ মূর্খদের তৈরি মিথ্যাচারের বিরুদ্ধে কিছু লিখলে নিজেকেও মূর্খ মনে হয়, তবুও মাঝে মাঝে সময় পেলে জবাব হিসেবে কিছু লিখি। পৌরাণিক বন্ধুদের মানসিকতা দেখে কষ্ট হয়, কারণ ঋষি দয়ানন্দ এর বিরোধিতা করতে করতে তাদের বুদ্ধি দিনের পর দিন দ্বিগুণ পরিমানে হ্রাস পাচ্ছে। তারা আর্য সমাজের বই থেকে অপপ্রচার করতে অক্ষম হওয়ার দুঃখে পৌরাণিক বন্ধুরা ঋষি দয়ানন্দ বিরোধিতা করার জন্য মুসলিম বা খ্রিষ্টান বা পৌরাণিকদের বইয়ের প্রমাণ ব্যবহার করছে। পৌরণিকদের সামান্য এই বুদ্ধি নেই যে মুসলিম, নাস্তিক বা খ্রিস্টানরা  নিজেদের স্বার্থে সনাতন ধর্ম বিষয়ে যে সকল গ্রন্থ লিখেছে সে সকল গ্রন্থ কে কি পৌরাণিক বন্ধুরা প্রামাণ্য মানে ? কখনোই মানেনা! কিন্তু ঋষি দয়ানন্দ এর বিরোধিতা করার জন্য অন্য মতবাদীদের গ্রন্থ কে প্রামাণ্য মানছে। ব্যাপারটা কতটা হাস্যকর দেখুন।

ঋষি দয়ানন্দ আজীবন মূর্তি পূজার বিরোধিতা করেছে, সেটা আমি নিজেও করি। ঋষি দয়ানন্দ সত্যার্থ প্রকাশে মূর্তি পূজার খণ্ডন করেছেন বহু জায়গায় বৈদিক শাস্ত্র প্রমাণ ও তর্ক দ্বারা। কিন্তু তিনি কোথাও মূর্তি ভাঙার কথা বলেনি। ঋষি দয়ানন্দ সত্যার্থ প্রকাশের ১৪ সমুল্লাসে কুরআনের আয়াত তুলে ধরে কুরআন কে তর্ক দ্বারা খণ্ডন করেছেন। মুসলিমরা মূর্তি পূজার বিরোধিতা করে কিন্তু বাস্তবে মুসলিমরা নিজেই মূর্তি পূজারী পৌরাণিকদের মতোই। আসুন দেখি 'সত্যার্থ প্রকাশ' এর মধ্যে ইসলামের বিরুদ্ধে ঋষি দয়ানন্দ সরস্বতীর তর্ক রূপী তির!_____

কুরআনে বলা আছে,

'নিশ্চয়, আমি তোমাকে আকাশের দিকে মুখ ফেরাতে দেখেছি। নিশ্চয় আমি তোমাকে সেই কাবা অভিমুখী করব; তা তোমার পক্ষে প্রীতিকর হইবে। অতএব তোমার মুখ মসজিদুল হরামের দিকে ফিরাও। যেখানেই থাক না কেন তোমার মুখ সেই দিকেই ফিরিয়ে নেও।” কুরআন ২/১৪৪

ঋষি দয়ানন্দ-> ইহা কি ছোটো খাটো পৌত্তলিকতা? ইহা যে মস্ত বড় পৌত্তলিকতা। 

মুসলিম-> আমরা মুসলমানেরা মূর্তিপূজক নহি, কিন্তু মূর্তিভঞ্জক। আমরা মক্কার মসজিদকে খুদা মানি না।

ঋষি দয়ানন্দ-> তোমরা যাদেরকে পৌত্তলিক মনে কর তারাও নানা প্রকার মূর্ত্তিকে ঈশ্বর মানে না, কিন্তু তাদের সম্মুখে পরমেশ্বরেরই পূজা করে। তোমরা মূর্তিভঞ্জক হলে সেই বড় মূর্তি মক্কার মসজিদ্ ভগ্ন কর না কেন? 

মুসলিম-> বেশ তো মহাশয়। আমাদের প্রতি কুরাণের আদেশ আছে যে, মক্কার দিকে মুখ ফেরাতে হবে। কিন্তু তাদের প্রতি বেদের আদেশ নাই; সুতরাং তারা পৌত্তলিক নহে কেন? আমরা কেন পৌত্তলিক হইতে যাইব? আমাদের পক্ষে খুদার আদেশ পালনীয়।

ঋষি দয়ানন্দ -> তোমাদের পক্ষে যেমন কুরাণকে খুদার বাণী, পৌরণিকেরাও সেইরূপ পুরাণকে ঈশ্বরের অবতার ব্যাসদেবের বাণী মনে করেন। পৌত্তলিকতা বিষয়ে তোমাদের ও এদের মধ্যে কোন প্রভেদ নাই, বরং তোমরা বৃহৎ এবং এরা ক্ষুদ্র মূর্তির পূজক। যেমন কেউ নিজের গৃহ হতে বিড়াল তাড়াতে না তাড়াতে তন্মধ্যে উষ্ট্র প্রবেশ করে, সেইরূপ মহম্মদও মুসলমান মত হইতে ক্ষুদ্র মূর্তিটি অপসারিত করলেন সত্য কিন্তু মক্কার মসজিদরূপী পর্বতাকার বৃহৎ মূর্ত্তি মুসলমানদের মতে প্রবিষ্ট করালেন। এটা কি ছোটোখাটো পৌত্তলিকতা? অবশ্য তোমরাও যদি আমাদের ন্যায় বৈদিক ধর্ম অবলম্বন কর তা হলে মূর্ত্তিপূজাদি কুকর্ম হতে অব্যাহতি পেতে পার; নতুবা নয়। যতদিন তোমরা নিজেদের বৃহৎ মূর্তিকে অপসারিত না কর, ততদিন পর্যন্ত ক্ষুদ্র মূর্তিপূজা খণ্ডন করতে লজ্জাবোধ করা উচিত এবং মূর্তিপূজা হতে বিরত থাকা নিজেদের পবিত্র করা কর্তব্য।

■গ্রন্থঃ সত্যার্থ প্ৰকাশ, চতুর্দশ সমুল্লাস যবনমত সমীক্ষা।■

ঋষি দয়ানন্দ সত্যার্থ প্রকাশে সুন্দর ভাবে প্রমাণ করে দিয়েছেন যে মুসলিমরা হিন্দুদের থেকেও বৃহৎ মূর্তি পূজারী এবং যে সকল মোল্লারা মূর্তি ভাঙতে প্রস্তুত থাকে তাদের উদ্দেশ্যে লিখেছেন মুসলিমরা যদি সত্যি ই মূর্তি ভঞ্জক হয়ে থাকে তাহলে সবার আগে কাবা মসজিদ ভেঙে ফেলা উচিত! ঋষি দয়ানন্দের বদনাম করার জন্য পৌরাণিক বন্ধুরা খ্রিস্টান বা মুসলিমদের লেখা গ্রন্থের সাহায্য নেয় কিন্তু দুঃখের বিষয় পৌরাণিকরা নিজেদেরই ধর্মীয় গ্রন্থের বাণীকে সত্য হিসেবে মানেনা, আসুন দেখি এই বিষয়ে_____

ভাগবত পুরাণ ১০/৮৪/১৩ এই শ্লোকে কাঠ মাটি পাথর আদি বিকার সমূহ পদার্থে যারা ইষ্ট ভক্তি রাখে তারা নিম্নমানের পশু তুল্য। প্রকাশক-গীতাপ্রেস


পৌরাণিক বন্ধুরা এবার বলুন ভাগবত পুরাণ আর্য সমাজী, খ্রিস্টান বা মোল্লাদ বা নাস্তিকদের প্রামাণ্য গ্রন্থ নাকি আপনাদেরই ? আপনাদেরই ধর্মীয় গ্রন্থে আপনাদেরই নিম্নমানের পশু (শুয়োর, কুকুর, গাধা,ভেড়া আদি) বলা হচ্ছে।

ঋষি দয়ানন্দ মূর্তি পূজার বিরোধিতা করেছে তাই পৌরাণিক বন্ধুদের প্রচুর রাগ, কিন্তু হিন্দু সমাজের মহান সন্ন্যাসী স্বামী বিবেকানন্দ নিজে একজন মূর্তি পূজারী ছিল আজীবন মূর্তি পূজা করেছে, সে আবার নিজেও সকল মূর্তি ভেঙে ফেলার আদেশও দিয়েছে।

গ্রন্থঃ-স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা খণ্ড-৭> মিস মেরী হেল কে লিখিত  ১৮৯৭ সাল ৯ জুলাই। 



পৌরাণিক বন্ধুদের মহান সন্ন্যাসী, ঋষি তুল্য স্বামী বিবেকানন্দ বলেছে বেদে গরু খাওয়া রয়েছে, তিনি এটাও বলেছে যে বৌদ্ধরা মূর্তি পূজা শুরু করেছে, তিনি এটাও বলেছে যে মূর্তি পূজা সকল শাস্ত্রে অধম বা নিকৃষ্ট বলা হয়েছে।



স্বামী বিবেকানন্দ মূর্তি পূজার উৎপত্তির বিষয়ে বলতে গিয়ে বলেন 'তাহারা জানেন না যে, বৌদ্ধধর্মই ভারতে পৌরোহিত্য ও প্রতিমাপূজা সৃষ্টি করিয়াছিল।' গ্রন্থঃ স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা খণ্ড-৫> ভারতীয় মহাপুরুষগণ> মান্দ্রাজে বক্তৃতা।




স্বামী বিবেকানন্দ বলেছে 'এই মূর্তি পূজা আমাদের সকল শাস্ত্রেই অধমাধম বলিয়া বর্ণিত হইয়াছে।' গ্রন্থঃ স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা খণ্ড-৫> আমাদের জন্মপ্রাপ্ত ধর্ম> ১৯০১ সালে ৩১ মার্চ ঢাকায় পগোজ স্কুলে স্বামীজীর ইংরেজী বক্তৃতা।


স্বামী বিবেকানন্দ বলেন 'বেদ পাঠ করিলে দেখিতে পাইবে, কোনো বড়ো সন্ন্যাসী বা রাজা বা অন্য কোনো বড়োলোক আসিলে ছাগ বা গোহত্যা করিয়া তাহাদিগকে ভোজন করানোর প্রথা ছিল।' গ্রন্থঃ স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা খণ্ড-৫> ভারতে বিবেকানন্দ> মাদুরা অভিনন্দের উত্তর। 


স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা ১-১০ খণ্ডের প্রকাশক আর্য সমাজ বা কোনো হিন্দু বিরোধী সম্প্রদায় নয় বরং উদ্বোধন কার্যালয় যা রামকৃষ্ণ মিশন বা বেলুর মঠের নিজস্ব প্রকাশনা। শুধু উদ্বোধন কার্যালয়ই নয় সারা ভারতে স্বামী বিবেকানন্দের এই বাণী ও রচনা ১-১০ খণ্ড হিন্দি বাংলা ইংরেজীতে পাওয়া যায়, এই বিষয়ে কারোর সংশয় থাকলে স্বয়ং রামকৃষ্ণ মিশনে গিয়ে বা যেকোনো জায়গা থেকে এই গ্রন্থ ক্রয় করে রেফারেন্স অনুযায়ী মিলিয়ে নিন। যে সকল পৌরাণিক বন্ধুরা ঋষি দয়ানন্দের  নামে বদনাম করার জন্য খ্রিস্টান, মুসলিম বা পৌরাণিকদের লেখা গ্রন্থের সাহায্য নেয় তাদের কাছে প্রশ্ন আমার, যে বিবেকানন্দ কে আপনারা মহান সন্ন্যাসী, যোগী মনে করেন সেই বিবেকানন্দ এর কথাকে প্রামাণ্য মনে করে নিশ্চয় মূর্তি ভাঙা শুরু করবেন ? বিবেকানন্দ এর কথা অনুসারে গরু খাওয়া শুরু করবেন ? বিবেকানন্দ এর কথা অনুসারে মূর্তি পূজারীরা নিকৃষ্ট তাই আপনারা নিজেদের নিকৃষ্ট হিসেবে স্বীকার করবেন ? #আমি ১০০% বিশ্বাস করি যাঁরা ঋষি দয়ানন্দের মত উজ্জ্বল নক্ষত্র কে বদনাম করার জন্য মুসলিম বা খ্রিস্টানের লেখা কাল্পনিক গ্রন্থ কে প্রামাণ্য মানেন, তারা নিশ্চয় পৌরাণিক সমাজের বিখ্যাত সন্ন্যাসী বিবেকানন্দের উক্ত বাণী গুলো অবশ্যই গ্রহণ করে যথাযথ রূপে পালন করবে!

পৌরাণিক বন্ধুরা একবারও ভেবে দেখেনা যে তাদেরই ধর্ম গ্রন্থ ১৮+ পুরাণের মধ্যে কিপ্রকারে অশ্লীলতা, অবৈজ্ঞানিক কথন রয়েছে। যখন কোনো মুসলিম ব্রহ্মবৈবর্ত, ভাগবত আদি পুরাণ হাতে নিয়ে শ্রীকৃষ্ণ কে গালি দেয় তখন উত্তর দিতে না পেরে সকল পৌরাণিকরা গর্তে ঢুকে যায়। কিন্তু যে ঋষি দয়ানন্দ সরস্বতী ভারতে প্রথম কুরআন, বাইবেল আদি অধার্মিক গ্রন্থ কে খণ্ডন করে বেদানুকূল সনাতন ধর্ম কে শ্রেষ্ঠ প্রমাণ করেছিলেন, সেই ঋষি দয়ানন্দ এর মত ব্যক্তিকে কিছু পৌরাণিক বন্ধুরা গালি দেওয়ার জন্য তৈরি থাকে।

আমি মনে করি যে সকল পৌরাণিক বন্ধুদের মধ্যে সামান্য বিচার বিবেক রয়েছে তারা কখনোই ঋষি দয়ানন্দের নামে মিথ্যাচার করবে না। আমিও একজন পৌরাণিক ঘরের সন্তান। আমি এখন মনে করি আজ যদি ঋষি দয়ানন্দের মান্যতার সন্ধান না পেতাম তাহলে এতদিনে নাস্তিক হয়ে যেতাম, কারণ যে ব্যক্তি যুক্তিবাদী হয় সেই ব্যক্তি যদি আমাদের পৌরাণিক নানান দেবদেবীর আকৃতি আদি, পৌরাণিক কাহিনী আদি এবং বেদ আদি শাস্ত্রের বিকৃত ব্যাখ্যা নিয়ে বিচার করে তাহলে সে নিঃসন্দেহে নাস্তিক হয়ে যাবে। আমি পৌরাণিক বন্ধুদের মিত্রের চোখে দেখি, তারা আমাদের শত্রু নয়, তারা বিবেকহীন হয়ে ঋষি দয়ানন্দ কে গালি দেয় মাত্র। আমি আশা রাখি তারা যদি ঋষি দয়ানন্দের বেদানুকূল মান্যতা নিয়ে যুক্তিবিচার সহকারে চর্চা করে তাহলে তারা অবশ্যই প্রকৃত সত্যটা জানতে পারবে। 


সকলকে নমস্তে

কৃণ্বন্তো বিশ্বমার্য়ম্




মহাত্মা বুদ্ধ কি সনাতন ধর্ম বিরোধী ছিলেন ?

মহাত্মা বুদ্ধ কি সনাতন ধর্ম বিরোধী ছিলেন ?



বর্তমানে কিছু ব্যক্তি এমন রয়েছে যারা নিজেদের দলিত, মূল নিবাসী বলে দাবি করে এবং নিজেদের   মহাত্মা বুদ্ধের অনুসারী মনে করে অথচ এরাই মনে করে যারা বেদাদি শাস্ত্র কে মেনে চলে অর্থাৎ সকল মুনি ঋষিগণ, শ্রীরাম, শ্রীকৃষ্ণ আদি মহাপুরুষদের ঘৃণা করে, এরা গৌতম বুদ্ধ কে মেনে চললেও সনাতন ধর্মের শাস্ত্র আদি সম্পর্কে বাজে কথা বলা এদের নিত্য দিনের কাজ।

মহাত্মা গৌতম বুদ্ধের জন্ম আজ থেকে প্রায় ২৫০০ বছর আগে হয়েছিল এমনটা মনে করা হয়, ভাগবত পুরাণ অনুযায়ী বুদ্ধ হলো ভগবান বিষ্ণুর এক অবতার। যদিও আমরা (বৈদিকরা) অবতারবাদে বিশ্বাসী নই, কারণ অবতারবাদ বেদ বিরোধী। দেখে নিন- https://aryaveeratwa.blogspot.com/2020/03/blog-post_28.html
 
নিজেদের মূল নিবাসী বলে দাবি করা ডক্টর আম্বেদকরের ভক্ত গুলো যদি ত্রিপিটকের জ্ঞান অর্জন করতো তাহলে তারা মূর্খের মতো কখনোই ঋষি মুনিদের, শ্রীরাম শ্রীকৃষ্ণ আদিদের গালি দিতো না। বৌদ্ধ মতবাদে ত্রিপিটকের একটি ভাগ হলো সুত্তপিটক, আর এই সুত্তপিটকের মধ্যে নানান গ্রন্থ রয়েছে তার মধ্যে ধম্মপদ ও সুত্তনিপাত নামক দুই গ্রন্থ রয়েছে। এই সকল গ্রন্থ পালী ভাষায় রচিত, এই গ্রন্থ গুলোতে মহাত্মা বুদ্ধের নানান বাণী রয়েছে, তার থেকে কিছু বাণী তুলে ধরা হলো___ 

ধম্মপদ / ১৯ ধম্মট্ঠবগ্গো/১৩,১৪,১৫

ন মোনেন মুনী’ হোতি মূল্হরূপো অবিদ্দসু,
যো চ তুলং ব পগ্গয্হ বরমাদায় পণ্ডিতো।।১৩।।

পাপানি পরিবজ্জেতি স মুনী তেন সো মুনি, যো মুনাতি উভো লোকে মুনী তেন পবুচ্চতি।।১৪।। 

অর্থঃ অতিমূঢ় এবং অজ্ঞান ব্যক্তি, কেবল মৌনের দ্বারা মুনি হয় না, কিন্তু যে ব্যক্তি পণ্ডিত, তিনি তুলাদণ্ড ধারণ করে যা মঙ্গলকর তা গ্রহণ করেন, এবং যা পাপ তা বর্জন করেন, সেইরূপ ব্যক্তিকেই মুনি বলা যায়। এইরূপ কার্য্যের দ্বারা তিনি মুনি হন। যিনি উভয় লোক মনন করেন তিনি সেই কার্য্যের দ্বারা মুনি বলে কথিত হন।


ন তেন অরিয়ো হোতি যেন পাণানি হিংসতি,
 অহিংসা সব্বপাণানং অরিয়ো তি পবুচ্চতি।।১৫।। 

অর্থঃ যদি কেহ প্রাণিহিংসা করে, তবে সে  ‘আর্য' হয় না। সৰ্ব্বপ্রাণীতে যিনি হিংসা করেনা তাকে আর্য বলা হয়।।


ধম্মপদ / ২৬ ব্রাহ্মণবগ্গো/ ৯, ১০, ১১, ২০, ২১, ৪০

যস্স কায়েন বাচায়, মনসা নত্থি দুক্ক টং।
সংবুতং তীহি ঠানেহি তমহং ব্রুমি ব্রাহ্মণং।।৯।। 

অর্থঃ যার শরীরে, মনে ও বাণীতে পাপ নাই, যিনি এই ত্রিস্থানে অতিশয় সংযমশীল, সেই লোককে আমি ব্রাহ্মণ বলি।

যম্হা ধম্ম বিজানেয্য সম্মাসম্বুদ্ধ দেসিতং,
সক্ক চ্চং তং নমস্সেয্য অগ্গিহুতং ব ব্ৰাহ্মণো।।১০।। 

অর্থঃ যেমন ব্রাহ্মণ অগ্নিহোত্রকে ভক্তিভাবে নমস্কার করে, সেইরূপ যে ব্যক্তির নিকট হইতে বুদ্ধোপদিষ্ট ধৰ্ম্ম জ্ঞাত হওয়া যায়, তাঁহাকে ভক্তিভাবে প্রণাম করিবে।


ন জটাহি ন গোত্তেহি ' ন জচ্চা হোতি ব্রাহ্মণো,
যম্হি সচ্চঞ্চ ধম্মো চ সো সুচী সো চ ব্রাহ্মণো।।১১।। 

অর্থঃ জটা পরিধান দ্বারা, গোত্র দ্বারা এবং জাতি দ্বারা কেউ ব্রাহ্মণ হয় না, কিন্তু যিনি চার আর্য সত‍্য ষোড়শ প্রকারে দর্শন করেছেন ও নয় লোকত্তর ধর্ম পরিজ্ঞাত- তিনি শুচি এবং তিনিই প্রকৃত ব্রাহ্মণ।

যো দুক্খস্স পজানাতি ইধেহব খয়মত্তনো, 
পন্নভারং বিসংযুত্তং তমহং ব্রুমি ব্ৰাহ্মণং।। ২০।।

অর্থঃ  যিনি এই জগতে অথবা এই জীবনে নিজ দুঃখের ক্ষয় জেনে ভারশূন্য এবং পাপমুক্ত হয়েছেন, তাকে আমি ব্রাহ্মণ বলি।

 গম্ভীরপঞ্ঞ মেধাবিং মগ্‌গামগ্গস্স কোবিদং,
উত্তমত্থমনুপ্পত্তং তমহং ব্রুমি ব্ৰাহ্মণং।।২১।।

অর্থঃ যিনি প্রগাঢ় জ্ঞানী, মেধাবী, সত্যাসত্য পথের সুদর্শী এবং যিনি উত্তমপদ (নির্ব্বাণ) লাভ করেছেন তাকে আমি ব্রাহ্মণ বলি।

 উসভং পবরং বীরং মহেসিং বিজিতাবিনং, 
অনেজং নহাতকং বুদ্ধং তমহং ব্রুমি ব্ৰাহ্মণং।।৪০।।

অর্থঃ যিনি মহৎ, প্রবর, বীর, মহর্ষি, বিজেতা, স্নাতক এবং বুদ্ধ তাকে আমি ব্রাহ্মণ বলি।।


সুত্তনিপাত/ মহাবগ্গো/ পূরলাস (সুন্দরীক ভরদ্বাজ) সুত্তং/১০,১১,২৯


 মা জাতিং পুচ্ছি চরণঞ্চ পুচ্ছ, কট্ঠা হবে জায়তি জাতবেদো; 
নীচাকুলীনোপি মুনী ধিতীমা, আজানিযো হোতি হিরীনিসেধো।।১০।
 
অর্থঃ জাতি জিজ্ঞাসা করিও না, চরণই জিজ্ঞাসা কর। কাঠ হতে অগ্নির জন্ম হয়। মুনি নীচকুলে জন্মিলেও ধৃতিমান (বহুশ্রুত), বিবেক সংযত হয়ে পাপে লজ্জাশীল হযে উচ্চবংশীয় আচরণ সম্পন্ন হতে পারেন

 সচ্চেন দম্ভ দমসা উপেতো, বেদন্তগূ বূসিতব্রহ্মচরিযো কালেন তম্হি হব্যং পবেচ্ছে, যো ব্রাহ্মণো পুঞ্ঞপেক্‌খো' যজেথ।।১১।। 

অর্থঃ যিনি সত্যের দ্বারা দমিত ও সংযম সম্পন্ন, বেদান্তে উচ্চতম জ্ঞানের অধিকারী, এবং পূর্ণ-ব্রহ্মচর্য সম্পন্ন; তিনি যথাকালে হব্য লাভ করেন; হে পুণ্যকামী ব্রাহ্মণ! দানযজ্ঞের আয়োজন করুন। 

অঞ্ঞেন চ কেবলিনং মহেসিং, খীণাসবং কুক্কুচ্চবূপসন্তং,
অনেন পানেন উপট্ঠহস্সু, খেত্তংহিতং পুঞ্ক্রপেকখস্স হোতি।।২৯।।

অর্থঃ যিনি সংসার হতে মুক্তিলাভী মহর্ষি, ক্ষীণাসব, অনুতাপ উপশমকারী; তাঁহাকে অন্যরকম অন্ন, পানীয়াদির সাহায্যে পরিচর্যা কর। কারণ, পুণ্যকামীদের এমনটাই উপযুক্ত ক্ষেত্র।।


মহাত্মা বুদ্ধ এই সকল কথা সঠিক বলেছে নাকি ভুল বলেছে এই বিষয়ে আমি কিছু বলছি না। আমি বলতে চাই যে, যারা নিজেদের গৌতম বুদ্ধের আদর্শ মনে করে অথচ সনাতন ধর্মকে এবং সনাতনী মহাপুরুষদের গালি দেয়, তাদেরকে অনুরোধ করবো তারা যেন নিজেদের মূর্খতা বন্ধ করে গৌতম বুদ্ধ কে জানার চেষ্টা করে। 


নমস্তে




ব্রহ্মচারী ও ব্রহ্মচারিণীদের গুণ কর্ম স্বভাব

ব্রহ্মচারী ও ব্রহ্মচারিণীদের গুণ-কর্ম-স্বভাব





আমাদের বৈদিক শাস্ত্রে যে ৪ টি আশ্রম রয়েছে তার মধ্যে প্রথমটিই হলো ব্রহ্মচর্য তারপর গৃহস্থ, বানপ্রস্থ ও সন্ন্যাস। প্রতিটি আশ্রমই নিজ নিজ জায়গায় শ্রেষ্ঠ, কিন্তু সকলে মনুষ্য কে ব্রহ্মচর্য পালন করা আবশ্যিক কারণ ব্রহ্মচার্য পালন না করে সরাসরি গৃহস্থ আশ্রমে যাওয়া সম্ভব নয়। বেদে বলা হয়েছে 'ব্রহ্মর্য়েণ তপসা দেবা মৃত্যুপাঘ্নত' অথর্ববেদ ১১/৫/১৯ অর্থাৎ ব্রহ্মচর্যের তপস্যা দ্বারা মৃত্যু কে জয় করা যায়। ঋষি দয়ানন্দ সত্যার্থ প্রকাশে এবং সংস্কার বিধি আদি গ্রন্থে ব্রহ্মচর্য পালন বিষয়ে নানান শাস্ত্র আদির প্রমাণ দ্বারা খুবই সুন্দর ভাবে লিখেছেন, তারই সংক্ষিপ্ত ভাব তুলে ধরা হলো____



য়মান সেবেত সততং ন নিয়মান্ কেবলান্ বুধঃ।

য়মান্ পতত্যকুর্বাণো নিয়মান্ কেবলান্ ভজন।।


#মনুস্মৃতি ৪/২০৪


তত্রাহিংসাসত্যাস্তেয়ব্রহ্মচর্য়াপরিগ্রহা য়মাঃ। 


#যোগদর্শন ২/৩০


ঋষি পতঞ্জলি যোগ দর্শনে যোগের আটটি অঙ্গ বিষয়ে লিখেছেন - য়ম, নিয়ম, আসন, প্রাণায়াম, প্রত্যাহার, ধারণা, ধ্যান ও সমাধি এগুলোকে অষ্টাঙ্গ যোগও বলা হয়ে থাকে। আবার য়মকে পাঁচ ভাগে ভাগ করা হয়েছে যেমন- সদা শরীর, বচন ও মন দ্বারা সর্বপ্রকারে সকল প্রাণীমাত্রেরই সাথে বিদ্বেষ ভাব পরিত্যাগ করে, প্রেম, প্রীতি সহিত অবস্থান করাকে (অহিংসা) বলে। যে পদার্থ যেমন তাকে তেমনই বোঝা, তেমনই বলা ও তেমনই করাই হলো (সত্য)। চুরি আদি বিষয় ত্যাগ করাকে (অস্তেয়) বলা হয়। বিদ্যা অভ্যাসের জন্য বাল্য অবস্থা থেকে সর্বথা বীর্য় রক্ষা করা অর্থাৎ জিতেন্দ্রিয় হওয়া, বেদ আদি শাস্ত্র অধ্যায়ন করা, উপস্থেন্দ্রিয়কে সংযমে রাখা হলো (ব্রহ্মচর্য়‍্য) বিষয় ও অভিমান আদি দোষ রহিত হওয়া হলো (অপরিগ্রহ)। এই পঞ্চবিধ ‘যম’ সর্বদা সেবন করিবে। কেবল নিয়ম সেবন অর্থাৎ___


শৌচসন্তোষপঃস্বাধ্যায়েশ্বরপ্রণিধানানি নিয়মাঃ।।


#যোগদর্শন ২/৩২


(শৌচ) অর্থাৎ অন্তর ও বাহ্য উভয় দিক দিয়ে পবিত্র থাকা (সন্তোষ) সম্যকরূপে প্রসন্ন হয়ে উদ্যম শূন্য থাকা সন্তোষ নয়, কিন্তু যথাসাধ্য পুরুষার্থ করা এবং হানি-লাভে-শোক বা হর্ষ প্রকাশ না করা, (তপঃ) অর্থাৎ কষ্ট সহ্য করেও ধর্মযুক্ত কর্মের অনুষ্ঠান করা, (স্বাধ্যায়) বেদ আদি শাস্ত্র অধ্যয়ন ও অধ্যাপনা (ঈশ্বর প্রণিধান) ঈশ্বরের প্রতি প্রগাঢ় ভক্তিতে আত্মাকে অর্পিত রাখা এই পাঁচটি 'নিয়ম'। য়ম ব্যতীত কেবলমাত্র নিয়ম ধারণ করবে না, কিন্তু ‘য়ম নিয়ম’ উভয়ই ধারণ করবে। যে ব্যক্তি যম পরিত্যাগ করে কেবল নিয়ম ধারণ করে, সে উন্নতি লাভ করতে পারে না, বরং অধোগতি অর্থাৎ সংসারে পতিত অবস্থায় থাকে। 





কামাত্মতা ন প্রশস্তা ন চৈবেহস্ত্যকামতা।

কাম্যো হি বেদাধিগমঃ কর্ময়োগশ্চ বৈদিকঃ।।


#মনুস্মৃতি ২/২


 অত্যন্ত কামাতুরতা এবং নিষ্কামতা কারোরও পক্ষে শ্রেষ্ঠ নয়। কারণ কামনা ব্যতীত বেদজ্ঞান এবং বেদবিহিত কর্মাদি উত্তম কর্ম কারোরও দ্বারা সম্পন্ন হতে পারে না। অতএব___


স্বাধ্যয়েন ব্ৰতৈহোমৈস্ত্ৰৈবিদ্যেনেজায়া সুতৈঃ।

মহায়চৈ চৈ ব্রাহ্মীয়ং ক্রিয়তে তনুঃ।।


#মনুস্মৃতি ২/২৮


(স্বাধ্যায়) সকল বিদ্যার পঠন পাঠন (ব্রত) ব্রহ্মচার্য ও সত্যভাষণাদি নিয়মপালন (হোম) অগ্নিহোত্রাদি হোম, সত্যগ্রহণ, অসত্য বর্জন এবং সত্যবিদ্যা দান; (ত্রৈবিদ্যেন) বেদস্থ কর্ম, উপাসনা, জ্ঞান, বিদ্যাগ্রহণ; (ইজ্যয়া) পক্ষেষ্টি যজ্ঞ প্রভৃতি কর্ম (সুতৈঃ) সুসন্তানোৎপত্তি; (মহায়জ্ঞৈ) ব্রহ্ম, দেব, পিতৃ, বৈশ্বদেব এবং অতিথিদের সেবারূপ পঞ্চমহাযজ্ঞ এবং (য়জ্ঞৈঃ) অগ্নিষ্টোমাদি, শিল্পবিদ্যা, ও বিজ্ঞানাদি যজ্ঞানুষ্ঠান দ্বারা এই শরীরকে ব্রাহ্মী অর্থাৎ বেদ ও পরমেশ্বরের ভক্তির আধার স্বরূপ ব্রাহ্মণ-শরীর করা যায়। এই সকল সাধন ব্যতীত ব্রাহ্মণ শরীর হতে পারে না।


ইন্দ্রিয়াণাং বিচরতং বিষয়েষ্বপহারিষু।

সংয়মে য়ত্বমাতিষ্ঠেদ্বিদ্বান্ য়ন্তেব বাজিনাম্।।


#মনুস্মৃতি ২/৮৮


বিদ্বান সারথি যেরূপ অশ্ব সমূহকে নিয়মে রাখে সেইরূপ মন এবং আত্মাকে কুকর্মে আকর্ষণকারী ও বিষয় মধ্যে বিচরণশীল ইন্দ্রিয় সমূহের নিগ্রহ অর্থে সর্ব প্রকার যত্ন করবে। কারণ___


ইন্দ্রিয়াণাং প্রসঙ্গেন দোষম্ ঋচ্ছত্যসংশয়ম্।

সংনিয়ম্য তু তান্যেব ততঃ সিদ্ধিং নিয়চ্ছতি।।


#মনুস্মৃতি ২/৯৩


জীবাত্মা ইন্দ্রিয় সমূহের বশীভূত হয়ে নিশ্চয়ই নানা প্রকার বড় বড় দোষ প্রাপ্ত হয় এবং যখন সে ইন্দ্রিয় সমূহকে নিজের বশীভূত করে, তখনই সিদ্ধিলাভ হয়।


বেদাস্ত্যাগশ্চ য়জ্ঞাশ্চ নিয়মাশ্চ তপাংসি চ।

ন বিপ্ৰদুষ্টভাবস্য সিদ্ধিং গচ্ছন্তি কর্হিচিত্।।


#মনুস্মৃতি ২/৯৭


যে ব্যক্তি দুরাচারী ও অজিতেন্দ্রিয় তাহার বেদ, ত্যাগ, যজ্ঞ, নিয়ম, তপ এবং অন্যান্য সৎকর্ম কখনও সিদ্ধ হয় না


বেদোপকরণে চৈব স্বাধ্যায়ে চৈব নৈত্যকে।

 নানুরোধোऽস্ত্যনধ্যায়ে হোমমন্ত্ৰেষু চৈব হি।।

নৈত্যকে নাস্ত্যনধ্যায়ো ব্রহ্মসত্রং হি তত্স্মৃতম্। ব্রহ্মাহুতিহুতং পূণ্যম্ অনধ্যায়বষট্কৃতম্।।


#মনুস্মৃতি ২/১০৫,১০৬



বেদের পঠন, পাঠন, সন্ধ্যোপাসনাদি পঞ্চ মহাযজ্ঞের অনুষ্ঠানে এবং হোমমন্ত্র সম্বন্ধে অনধ্যায় অনুরোধ (আগ্রহ) নাই। কেননা নিত্যকর্মে অনধ্যায় হয়না যেরূপ সর্বদা শ্বাস-প্রশ্বাস গ্রহণ করতে হয় কখনও বন্ধ করা যায় না, সেইরূপ প্রতিদিন নিত্যকর্ম কৰ্ত্তব্য। নিত্যকর্ম কখনোই পরিত্যাগ করবে না। কেননা অনধ্যায়েও অনুষ্ঠিত অগ্নিহোত্রাদি উত্তম কর্ম পুণ্যকর। যেরূপ মিথ্যা বললে সর্বদা পাপ এবং সত্য বললে সর্বদা পুণ্য হয়, সেইরূপ কুকর্মে সর্বদা অনধ্যায় ও সুকর্মে সর্বদা স্বাধ্যায়ই হয়ে থাকে৷


অভিবাদনশীলস্য নিত্যং বৃদ্ধোপসেবিনঃ।

চত্বারি তস্য বর্দ্ধন্ত আয়ুবিদ্যা য়শোবলম্।।


#মনুস্মৃতি ২/১২১


যে সর্বদা নম্র, সুশীল এবং বৃদ্ধসেবী, তার আয়ু, বিদ্যা, কীৰ্ত্তি এবং বল— এই চার বিষয় সর্বদা বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হয়। আর যে ব্যক্তি এইরূপ করে না তার আয়ু প্রভৃতি চারিটি বিষয় বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হয় না।


অহিংসয়ৈব ভূতানাং কার্য়ং শ্ৰেয়োऽনুশাসনম্।

বাক্ চৈব মধুরা শ্লক্ষ্ণা প্রয়োজ্যা ধৰ্ম্মমিচ্ছতা।।

য়স্য বাঙ্ঘনসে শুদ্ধে সম্যগ্গুপ্তে চ সর্বদা।

স বৈ সৰ্বমবাপ্নোতি বেদান্তোপগতং ফলম্।।


মনুস্মৃতি ৪/১৫৯,১৬০


বৈরবুদ্ধি পরিত্যাগ করে সকলকে কল্যাণ মার্গের উপদেশ প্রদান করা বিদ্বান এবং বিদ্যার্থীদের কৰ্ত্তব্য। উপদেষ্টা সর্বদা সুশীলতা যুক্ত বাণী বলবেন। যিনি ধর্মের উন্নতি কামনা করেন, তিনি সত্যপথে চলবেন এবং সত্যেরই উপদেশ দিবেন। যাঁর বাণী এবং মন শুদ্ধ ও সুরক্ষিত, তিনিই সমস্ত বেদান্ত অর্থাৎ সমগ্র বেদের সিদ্ধান্ত রূপ ফল প্রাপ্ত হন।



অনেন ক্রময়োগেন সংস্কৃতাত্মা দ্বিজঃ শনৈঃ।

গুরৌ বসন্‌ সঞ্চিনুবাদ ব্ৰহ্মাধিগামিকং তপঃ।।


#মনুস্মৃতি ২/১৬৪ 


এইরূপ কৃতোপনয়ন দ্বিজ ব্রহ্মচারী কুমার এবং ব্রহ্মাচারিণী কন্যা ধীরে ধীরে বেদার্থজ্ঞানরূপ

উত্তম তপ কে বৃদ্ধি করতে থাকবে।।



বর্জয়েন্মধুমাংসঞ্চ গন্ধং মাল্যং রসান্ স্ত্রিয়ঃ।

শুক্তানি য়ানি সৰ্বাণি প্ৰাণিণাং চৈব হিংসনম্।।

অভ্যঙ্গমঞ্জনং চাক্ষ্ণোরুপানচ্ছত্রধারণম্। 

কামং ক্রোধং চ লোভং চ নৰ্ত্তনং গীতবাদনম্।।

দ্যূতং চ জনবাদং চ পরিবাদং তথানৃতম্ । 

স্ত্ৰীণাং চ প্রেক্ষণালম্ভমুপঘাতং পরস্য চ।।

একঃ শয়ীত সর্বত্র ন রেতঃ স্কন্দয়েত্ক্বচিত্।

কামাদ্ধি স্কন্দয়ন রেতো হিনস্তি ব্রতমাত্মানঃ।।



#মনুস্মৃতি ২/১৭৭,১৭৮,১৭৯,১৮০


ব্রহ্মচারী ও ব্রহ্মচারিণী মদ্য, মাংস, মাল্য, রস, স্ত্রী-পুরুষ সংসর্গ সর্বপ্রকার অম্ল, প্রাণি হিংসা৷

অঙ্গ-মর্দন, অকারণে উপস্থেন্দ্রিয় স্পর্শ, নেত্রাঞ্জন, জুতা-ছত্র ধারণ কাম, ক্রোধ, লোভ, মোহ, ভয়, শোক ঈর্ষা, দ্বেষ ও নৃত্য, গীত, বাদ্য বাদন। দ্যুত, পরচর্চা, নিন্দা, মিথ্যাভাষণ, স্ত্রী দর্শন, পরনির্ভরশীলতা এবং পরের অপকার ইত্যাদি কুকর্ম সর্বদা পরিত্যাগ করবে। সর্বত্র একাকী শয়ন করবে, কখনও বীর্য স্খলন করবে না। যদি কামনা বশতঃ কেউ বীৰ্য স্খলন করে, সে তার নিজের ব্রহ্মচর্য্য ব্রত নাশ করে ফেলেছে এমনটা জানো।।


বেদমনুচ্যাচার্য়োऽন্তেবাসিনমনুশাস্তি। সত্যং বদ। ধর্মং চর। স্বাধ্যায়াত্মা প্রমদঃ। আচার্য়‍্যায় প্রিয়ং ধনমাহৃত‍্য প্রজাতন্তুং মা ব্যবচ্ছেত্সীঃ। সত্যান্ন প্রমদিতব্যম্। ধর্মান্ন প্রমদিতব্যম্। কুশলান্ন প্রমদিতব্যম্।স্বাধ্যায়প্রবচনাভ্যাং ন প্ৰমদিতব্যম দেবপিতৃত্কার্য়্যাভ্যাং ন প্রমদিতব্যম্।।


মাতৃদেবো ভব। পিতৃদেবো ভব। আচার্য়‍্যদেব ভব। অতিথিদেবো ভব। য়ান্যনবদ্যানি কর্মাণিতানি সেবিতব্যানি নো ইতরাণি। য়ান্যস্মাক সুচরিতানি তানি ত্বয়োপাস্যানি নো ইতরাণি।।


য়ে কে চাস্মচ্ছেয়াংসো ব্রাহ্মণাস্তেষাং ত্বয়াসনেন প্রশ্বসিতব্যম্। শ্রদ্ধয়া দেয়ম্। অশ্রদ্ধয়া দেয়ম্। শ্রিয়া দেয়ম্। হ্রিয়া দেয়ম্। ভিয়া দেয়ম্। সংবিদা দেয়ম্। অথ য়দি তে কর্মবিচিকিৎসা বা বৃত্তবিচিকিৎসা বা স্যাত্৷।


য়ে তত্ৰ ব্ৰাহ্মণাঃ সমদর্শিনো য়ুক্তা অয়ুক্তা অলূক্ষা ধর্মকামাঃ স্যূর্য়থা তে তত্র বর্ত্তেরন্। তথা তত্র বৰ্ত্তেথাঃ। এষ আদেশঃ এর উপদেশঃ এষা বেদোপনিষত্। এতদনুশাসনম্। এবমুপাসিতব্যম্। এবমু চৈতদুপাস্যম্।।


#তৈত্তিরীয় উপনিষদ ১/ ১১/ ১,২,৩,৪


আচার্য্য অন্তেবাসী অর্থাৎ নিজ শিষ্যদের এইরূপ উপদেশ দিবেন :– তুমি সর্বদা সত্য বলবে, ধর্মচারণ করবে, পূর্ণ ব্রহ্মচর্য দ্বারা সমস্ত বিদ্যাগ্রহণ করবে এবং আচার্য্যকে প্রিয়ধন প্রদান পূর্বক বিবাহ করে সন্তানোৎপত্তি করবে। প্রমাদ বশতঃ কখনও সত্য পরিত্যাগ করবে না। প্রমাদ বশতঃ কখনও ধর্ম পরিত্যাগ করবে না। প্রমাদ বশতঃ আরোগ্য ও নিপুণতা ত্যাগ করবে না। প্রমাদ বশতঃ কখনও পঠন-পাঠন পরিত্যাগ করবে না। যেরূপ বিদ্বান ব্যক্তিদের সম্মান করবে, সেইরূপ মাতা, পিতা আচার্য্য এবং অতিথিদেরও সর্বদা সেবা করবে। মিথ্যা ভাষণাদি কখনও করবেনা। আমাদের সুচরিত্র অর্থাৎ ধর্মযুক্ত কর্ম গ্রহণ করবে এবং আমাদের পাপাচরণ কখনও গ্রহণ করবে না। আমাদের মধ্যে যারা উত্তম বিদ্বান ও ধর্ম্মাত্মা ব্রাহ্মণ, তাদেরই সমীপে উপবেশন করবে এবং তাদের সকলকে বিশ্বাস করবে। শ্রদ্ধা সহকারে দান করবে। অশ্রদ্ধা থাকলেও দান করবে। শোভনতা সহকারে দান করবে। লজ্জার সহিত দান করবে। ভীত হয়েও দান করবে। প্রতিজ্ঞা বশতঃ দান করবে। কর্মশীল, উপাসনা ও জ্ঞান সম্বন্ধে কখনও কখনও সংশয় উপস্থিত হলে বিচারশীল, পক্ষপাতশূণ্য, যোগী অথবা অযোগী কোমল চিত্ত ধর্মাভিলাষী এবং ধৰ্ম্মাত্মাগণ যে যে ধর্মপথে থাকেন তুমিও সেই পথে থাকবে। এটিই আদেশ, এটিই আজ্ঞা,এটিই উপদেশ, এটিই বেদোপনিষদ্ এবং এটিই শিক্ষা। এইরূপ আচরণ করা এবং স্বীয় আচরণকে সংশোধিত করা কর্তব্য।