ঋষি দয়ানন্দ কৃত য়জুর্বেদ ২৫/৭ ভাষ্যের ভ্রান্তি নিবারণ
ঋষি দয়ানন্দকৃত য়জুর্বেদ ২৫/৭ মন্ত্রের ভাষ্যের হিন্দি অনুবাদ নিয়ে বাংলা ও হিন্দি ভাষী পৌরাণিক বন্ধুরা খুবই খিল্লি করে থাকে এবং ঋষি দয়ানন্দ কে নানান ভাষায় গালিও দিয়ে থাকে।ফলে বৈদিক বন্ধুদের মনে শঙ্কা উৎপন্ন হতেই পারে যে তাহলে কি সত্যিই ঋষি দয়ানন্দ ভুল ভাষ্য করেছেন ? পৌরাণিকদের আচরণ দেখলে বোঝা যায় তারা ঋষি দয়ানন্দকে গালি দিলে নিজেকে গর্বিত মনে করে। যে সকল পৌরাণিক বন্ধুরা উক্ত মন্ত্রের হিন্দি অনুবাদ অনুসারে ঋষি দয়ানন্দকে গালি দিয়ে থাকে তারা কি একবারও দেখার চেষ্টা করে যে তাদের পৌরাণিক বিদ্বানেরা এই মন্ত্রের অর্থ কিরূপ করেছে ? যদি তারা পৌরাণিক বিদ্বানদের মহাবিকৃত ভাষ্য দেখতো তাহলে কখনোই ঋষি দয়ানন্দকে নিয়ে খিল্লি করতো না। ঋষি দয়ানন্দ আদৌ কোনো ভুল করেছে নাকি অন্য বিদ্বানেরা ভুল করেছে এই বিষয়ে সবার শেষে বিস্তৃত আলোচনা করা হবে। আগে দেখে নেওয়া যাক পৌরাণিক বিদ্বানেরা য়জুর্বেদ ২৫/৭ মন্ত্রের কিরূপ অর্থ করেছে-
■ আচাৰ্য সত্যব্রত সামশ্রমী, মহিধরের ভাষ্যের ওপর আধারিত■
য়জুর্বেদ ২৫/৭
![]() |
পুষাকে বনিষ্ঠু দ্বারা প্রীত করি, অন্ধঅহিদিগকে স্থূল গুদা দ্বারা, সর্পগণকে গুদা দ্বারা, বিহতদিগকে আন্ত্র দ্বারা, জলদেবীকে বস্তি দ্বারা, বৃষণকে অণ্ডদ্বয় দ্বারা, বাজিনকে শেপ দ্বারা, প্রজাকে রেতঃ দ্বারা, চাষদিগকে পিত্ত দ্বারা প্রদরদিগকে পায়ু দ্বারা কূশ্মগণকে শকপিণ্ড দ্বারা প্রীত করি।
■স্বামী করপাত্রীর ভাষ্য, অদ্বৈতবাদীদের একজন মহান বিদ্বান ব্রহ্মস্বরূপ■
য়জুর্বেদ ২৫/৭
बड़ी आंत के स्थानीभूत घृत से पूषा देवता को, स्थूल गुदा से अन्धे सर्पों को, गुदा के अन्य भागों से सर्पों को, छोटी आँतों से विह्रुत देवता को बस्ति से जल देवता को, वृषणों से कामनावर्षी वृषण देवता को मेद्र से बाजी को वीर्य से प्रजा को पित्त से चाप को, पायु से प्रदर को और लीद के पिण्डों से कूश्म को प्रसन्न करता हूँ।।७।।
■জিজ্ঞাসাঃ পৌরাণিকদের মহান বেদ ভাষ্যকার মহিধর ও অদ্বৈতবাদী ব্রহ্মস্বরূপ করপাত্রী উক্ত মন্ত্রের প্রায় একই ধরণের অর্থ করেছে,তারা লিখেছে- স্থূল গুদা দ্বারা অন্ধ সাপকে, গুদার অন্য ভাগ দিয়ে সর্প কে প্রসন্ন বা প্রীত করি। আমি সকল মহিধর ভক্ত ও করপাত্রী ভক্ত অদ্বৈতবাদীদের কাছে জানতে চাই যে আপনারা পশু নাকি প্রাণীর মলদ্বার দ্বারা অন্ধ সাপ কে প্রসন্ন করেন ? নাকি নিজেদের ম*লদ্বার দিয়ে অন্ধসাপ কে প্রসন্ন করেন ? স্থূল ম*লদ্বার দিয়ে অন্ধ সাপ কে প্রসন্ন করার প্রযুক্তিবিদ্যাটা কেমন, তা জানতে চাই! এবং এটাও জানতে চাই যে স্বয়ং করপাত্রী বা মহিধরও নিশ্চয় ম*লদ্বার দিয়ে অন্ধ সাপকে প্রসন্ন করেছিল ? যেহেতু মায়াবাদীদের মতে করপাত্রী ব্রহ্মস্বরূপ ছিলেন, তাই বলা যায় যে করপাত্রী ভুল করতেই পারে না। আমি আশা রাখি এইবার থেকে সকল অদ্বৈতবাদীরা স্থূল মলদ্বার দিয়ে অন্ধ সাপ কে এবং সাধারণ সাপ কে প্রসন্ন করার যথাযথ চেষ্টা করবে।
■ডঃ রেখা ব্যাস ( এম.এ., পি-এস. ডি.)>সংস্কৃত সাহিত্য প্রকাশন> আচার্য উব্বট এর অনুবাদের ওপর আধারিত■
য়জুর্বেদ ২৫/৭
बड़ी आंत पूषा देव, स्थूल गुदा अंधे सर्प देव, सामान्य गुदा अन्य सर्प देवों, बची हुई आंतें विद्युत् देव, वस्ति भाग जल देव, अंडकोष वृषण देव व उपस्थ बल देव से संबंधित हैं. वीर्य प्रजापति देव, पित्त चाष देव, पायु (गुदा) प्रदर देव व शक पिंड कूश्म देव से संबंधित हैं।। ७।।
■জিজ্ঞাসাঃ এখানে বলা হচ্ছে ''স্থূল গুদা অন্ধ সর্প দেব, সামান্য গুদা অন্য সর্প দেব সম্বন্ধীয়।'' খাজুরাহ মন্দিরের মূর্তি প্রিয় সকল পৌরাণিক বন্ধুদের কাছে আমি জানতে চাই যে কোন পশু বা প্রাণীর স্থূল ম*লদ্বার অন্ধ সাপ দেবতা সম্বন্ধীয় ? এবং কাদের সামান্য মলদ্বার অন্য সাপ দেবতা সম্বন্ধীয় ? কোন পশু বা প্রাণীর স্থূল ও সামান্য ম*লদ্বার কিভাবে সাপ সম্বন্ধীয় হতে পারে ? কারোর ম*লদ্বার থেকে সাপের বিবরণ পাওয়া কি সম্ভব ? কি আশ্চর্য! পৌরাণিক বন্ধুরা আপনাদের বিদ্বানেরা খুবই সুন্দর বেদ ভাষ্য করেছে তাই না ?
■শ্রীরাম শর্মা আচার্য এবং ওনার শিষ্য ভগবতী দেবী শর্মার ভাষ্য■
য়জুর্বেদ ২৫/৭
स्थूल आँत का भाग पूषादेवता के लिए, स्थूल गुदा नेत्रहीन सर्पों के लिए तथा अन्य सर्पों के लिए सामान्य गुदा का भाग, आँतों का शेष भाग विह्रुत देवता के लिए, वस्ति भाग को जल के लिए, अण्डकोषों की शक्ति वृषणदेव के लिए, उपस्थ की शक्ति वाजी देव के लिए, वीर्य प्रजा के लिए, पित्त 'चाष' देवता के लिए, गुदा का तृतीय भाग प्रदरदेवों के लिए तथा शकपिण्डों को कूश्म देवता की प्रसन्नता के लिए समर्पित करते हैं ॥७ ॥
শ্রীরাম শর্মাও প্রায় মহিধর, করপাত্রীর মতোই লিখেছে 'স্থূল মলদ্বার অন্ধ সাপের জন্য এবং অন্য সাপের জন্য সামান্য মলদ্বার ভাগ প্রসন্নতার জন্য সমর্পিত করি।'
এইবার আলোচনা করা যাক ঋষি দয়ানন্দকৃত সংস্কৃত ভাষ্যের হিন্দি অনুবাদের বিষয়ে। প্রশ্ন হচ্ছে ঋষি দয়ানন্দ কি আদৌ কোনো ভুল লিখেছেন ? উত্তর হবে 'না' কেননা ঋষি দয়ানন্দ য়জুর্বেদ, ঋগ্বেদ এর ভাষ্য করেছেন সংস্কৃত ভাষায়, আর সেই ভাষ্যকে হিন্দি অনুবাদ করেছে অন্যান্য বিদ্বানেরা। তাই এই বিষয়টা সকলের মাথায় ঢুকিয়ে নেওয়া উচিত যে ঋষি দয়ানন্দের বেদ ভাষ্যের বিরুদ্ধে কিছু বলার আগে বেদাঙ্গ, ব্রাহ্মণ ইত্যাদি শাস্ত্র অধ্যয়ন করুন কেননা তিনি সংস্কৃতে বেদ ভাষ্য করেছেন হিন্দিতে নয়। আমাদের আর্য় সমাজের একজন মহান পণ্ডিত য়ুধিষ্ঠির মীমাংসক একটি গ্রন্থ লিখেছেন যার নাম 'ऋषि दयानन्द के ग्रन्थों का इतिहास' 'ঋষি দয়ানন্দ কে গ্রন্থ কা ইতিহাস' [মার্গশীর্ষ ২০০৬ সম্বত্> ১৯৪৯ খ্রিস্টাব্দে প্রকাশিত] এই গ্রন্থে মীমাংসক জি ঋষি দয়ানন্দ কৃত সকল সংস্কৃত ও হিন্দি গ্রন্থের বিষয়ে আলোচনা করেছেন। যে সকল বিদ্বানেরা সংষ্কৃত ভাষ্য থেকে হিন্দি ভাষানুবাদ করেছিলেন তারা প্রায়ই জায়গায় ভুল করেছিলেন, ঋষি দয়ানন্দ কিছু ভুল সংশোধনও করেছিলেন কিন্তু সম্পূর্ণরূপে করতে পারেননি। ঋষি দয়ানন্দকৃত বেদভাষ্য বিষয়ে মীমাংসক জি উক্ত গ্রন্থের ৯০-১০৮ পৃষ্ঠায় লিখেছেন, তিনি সেখানে ঋষি দয়ানন্দের 'পত্র ব্যবহার' থেকে নানান প্ৰমাণও দিয়েছেন।
এইবার দেখে নেওয়া যাক ঋষি দয়ানন্দ য়জুর্বেদ ২৫/৭ মন্ত্রের সংস্কৃত ভাষ্য-
पदार्थ :- (पूषणम्) पुष्टिकरम् (वनिष्ठुना) याचनेन ( अन्धाहीन्) अन्धान् सर्पान् (स्थूलगुदया) स्थूलया गुदया सह ( सर्पान्) (गुदाभि:) (विह्रुतः) विशेषेण कुटिलान् (आन्त्रैः) उदरस्थैर्नाडीविशेषैः (अप) जलानि ( वस्तिना) नाभेरधोभागेन ( वृषणम्) वीर्याधारम् ( आण्डाभ्याम्) अण्डाकाराभ्यां वृषणावयवाभ्याम् (वाजिनम्) अश्वम् (शेपेन) लिङ्गेन (प्रजाम् ) सन्ततिम् (रेतसा) वीर्येण (चापान्) भक्षणानि (पित्तेन ) ( प्रदरान्) उदरावयवान् (पायुना) एतदिन्द्रियेण ( कूश्मान् ) शासनानि । अत्र कशधातोर्मक्प्रत्ययोऽन्येषामपीति दीर्घश्च (शकपिण्डैः) शक्तैः संघातैः॥७॥
ঋষি দয়ানন্দ এই মন্ত্রের ভাষ্যে যা বোঝাতে চেয়েছিলেন তা হিন্দি অনুবাদকেরা বুঝে উঠতে পারেনি, কাজেই তারা এই মন্ত্রের অর্থ তেমনই করেছে যেমনটা বেদ অজ্ঞ পৌরাণিক বিদ্বানেরা করেছে, প্রকৃত ভুলটা হয়েছে এই জায়গায়। দুঃখের বিষয় হলো আজ পর্যন্ত এই ভুল গুলোকে সংশোধন করা হয়নি। পৌরাণিকরা যেমন এমন এক ধরণের প্রাণী যারা ১৮+ পুরাণ কাহিনীর মধ্যে নিজেদের মান্য ঈশ্বর, মুনি, ঋষিদের লম্পট বানিয়েছে, কুলষিত করেছে তবুও আজ পর্যন্ত এমন কোনো পুরাণ বিদ্বান দেখলাম না যারা পুরাণ থেকে বিকৃত বিষয় গুলোকে বাদ দেওয়ার চেষ্টা করেছে অথবা পুরাণ কাহিনীর বিকৃত বিষয় গুলোর বিরুদ্ধে কিছু লিখেছে, ঠিক এই প্রকারের প্রাণী আর্য সমাজের মধ্যেও বিদ্যমান রয়েছে নয়তো এই সকল ভুল গুলোকে সংশোধন করা হতো। আমাদের বৈদিকদের মধ্যে কয়জন জানে যে ঋষি দয়ানন্দ হিন্দি ভাষায় নয় বরং সংস্কৃতে বেদ ভাষ্য করেছিলেন ? অনেকেই জানেনা, কাজেই তারা মনে করে হিন্দি ভাষ্যও ঋষি দয়ানন্দ স্বয়ং করেছেন। ফলে হিন্দি অনুবাদে কোনো ভুল পেলে মনে করা হয় ঋষি দয়ানন্দই ভুল করেছে, এতে হিন্দি অনুবাদকের না বরং ঋষি দয়ানন্দেরই বদনাম হবে। এই সাধারণ জ্ঞান গুলো আমাদের ওই সকল বিদ্বানদের নেই যারা আজও ভুল গুলোকে সংশোধন করার কোনো প্রয়াস করেনি!
বর্তমান সময়ের একজন শ্রেষ্ঠ বৈদিক বিদ্বান এবং নৈষ্টিক ব্রহ্মচারী হলেন আচাৰ্য় অগ্নিব্রত। যিনি মহর্ষি ঐতরেয় মহিদাসের লেখা ঐতরেয় ব্রাহ্মণের ভাষ্য করেছেন, যে গ্রন্থের নাম দেওয়া হয়েছে 'বেদ বিজ্ঞান আলোক'। ওনার সম্পর্কে আরও জানতে হলে vaidic physics ইউটিউব চ্যানেল দেখুন। আচাৰ্য় অগ্নিব্রত জি ঋষি দয়ানন্দ কৃত সংস্কৃত ভাষ্যের বিস্তৃত ব্যাখ্যা করেছেন। আসুন দেখি-
পদার্থঃ হে মনুষ্য! (বনিষ্ঠুনা) যাচন অর্থাৎ গ্রহণ করার ইচ্ছা তথা নষ্ট করার প্রবৃত্তি এই উভয় প্রকারের কর্ম দ্বারা (পূষণম্) পুষ্টি করণের ক্রিয়া সম্যক্ প্রকারে সম্পূর্ণ হয়। এই বিষয়ে ধ্যান দেওয়া উচিত যে শরীর এবং ব্রহ্মাণ্ড উভয়ের সংযোগ-বিয়োগ অথবা সৃজন-বিনাশ উভয় প্রকারের প্রবৃত্তির প্রক্রিয়া একসাথে চলে।
এদের মধ্যে একটির অভাব হলেই সৃষ্টি প্রক্রিয়া সমাপ্ত হয়ে যাবে। এখানে ঋষি দয়ানন্দকৃত 'য়াচনেন' পদের দুই প্রকারের অর্থ গ্রহণ করা উচিত। যদি এখানে কেউ 'য়াচনেন' পদের দুই প্রকার অর্থ গ্রহণ না করে তাহলে তাকে বনিষ্ঠুনা পদ 'বনু য়াচনে' তথা 'বনু সম্ভক্তৌ' এই দুই ধাতু হতে ব্যুৎপন্ন মানা উচিত। তাহলে এখানে দুই প্রকার অর্থ বের হয়। (স্থূলগুদয়া) স্থূল গুদা অথবা পুচ্ছভাগ দ্বারা (অন্ধাহীন্) অন্ধ সর্প নিজের ক্রিয়া সমূহকে করতে সমর্থ হয়। আমরা জানি যে সমস্ত সাপ অন্ধ হয় তাদের পুচ্ছ বা লেজ মুখের সাদৃশ্য মোটা হয়ে থাকে। সেখানেই সর্পের গুদাও থাকে। সেই স্থূল গুদার মাধ্যমে সর্প ডিম দেয়। এই কারণে গুদা স্থূল হয়ে থাকে। brahminy blind snake শুধুমাত্র মহিলা হয়, পুরুষ হয়না। এই কারণে এই সাপ পুরুষের সংযোগ ছাড়াই গুদা দ্বারা ডিম দেয়। কাজেই বলা হয়েছে স্থূল গুদা দ্বারা অন্ধ সর্প নিজের কর্ম করে থাকে।
![]() |
Brahminy blind snake |
(গুদাভিঃ) গুদা অথবা পুচ্ছভাগ দ্বারা (বিহ্রুতঃ) বিশেষ রূপে বক্রগতি করা সর্প নিজের গতি আদি ক্রিয়াকে সম্যগ্রূপেণ করতে সমর্থ হয়। এখানে 'বিহ্রুতঃ' শব্দ দ্বারা শাকল সর্প গ্রহণ করা যায়। এই সাপ নিজের পুচ্ছ অথবা গুদা ভাগকে মুখ দিয়ে দাবিয়ে রেখে গোলাকার হয়ে চাকার সাদৃশ্য গতি করে থাকে। এই সর্পকে ইংরেজি ভাষায় hoop snake বলা হয়।
![]() |
Hoop snake |
এই প্রকারের সর্পের বিষয়ে বৈজ্ঞানিকদের শঙ্কা রয়েছে। ঐতরেয় ব্রাহ্মণেও এক স্থানে এই প্রকার সর্পের বর্ণনা রয়েছে। আচার্য সায়ণও ঐতরেয় ব্রাহ্মণের ভাষ্যে এই সর্পের চর্চা করেছেন, সম্ভবত এই সর্পের প্রজাতি বিলুপ্ত হয়ে গেছে। কিছু সর্প নিজের লেজ নাড়িয়ে আওয়াজ পূর্বক শিকারকে আকর্ষিত করে ধরে নেয়, এখানেও কিন্তু গুদা বা পুচ্ছের ভূমিকা থাকে কিন্তু এখানে গতি করার জন্য নয় বরং শিকার করার ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখে। এই কারণে গুদার মাধ্যমে এদের ক্রিয়াশীল হওয়া অথবা সম্যক্ ক্রিয়া করার চর্চা এখানে রয়েছে। (সর্পান্) অন্য প্রকারের সর্প (আন্ত্রৈঃ) উদরস্থ নাড়ী [অমতি জানাতি প্রোপ্নোতি য়েন তত্ অন্ত্রম্ (উণাদি কোষ ৪/১৬৫)] অর্থাৎ সর্প শরীরের ওপর তৈরি হওয়া শল্কের দ্বারাই সে নিজের সকল কর্ম করতে সমর্থ হয়।
ভাবার্থঃ হে মনুষ্য! সৃষ্টিতে সংযোগ বিয়োগের গুণ দ্বারা বিভিন্ন ক্রিয়া, পদার্থের রক্ষা এবং পালন, অন্ধ সাপের পুচ্ছ বা গুদাভাগ দ্বারা ডিম দেয় অথবা এর সাহায্যে শাকল সাপের গতি করা, সমস্ত সাপের মাংসপেশী দ্বারা হওয়া কর্ম, শরীরে মূত্র বিসর্জনের সম্যক্ ক্রিয়ার দ্বারা শরীরে জলের সম্যক্ কার্যশীল থাকা, অন্ডকোষে অবয়ব ভূত অণ্ড স্বস্থ হওয়াতেই অন্ডকোষের সমর্থ হওয়া। পৌরুষ শক্তি সম্পন্ন ঘোড়া আদি বলবান প্রাণীর বল বিদ্যমান থাকা, শুক্র এবং বীর্যের শুদ্ধতা এবং স্বাস্থ্যের দ্বারা স্বস্থ প্রজা উৎপন্ন হওয়া, পিত্ত আদি পাচক রসের দ্বারা ভোজন পচনশীল হওয়া, মল আদি বিসর্জনের সম্যক্ ক্রিয়ার দ্বারা শরীরের সকল অঙ্গ স্বস্থ থাকা এবং মস্তিকগত স্নায়ু সমূহের স্বস্থ এবং সবল থাকার ফলে শরীরের অন্যান্য অঙ্গ সমূহের সম্যক্ নিয়ন্ত্রণ এবং সঞ্চালন আদি কর্ম হয়ে থাকে, এইরুপ তুমি জানো।
আমি পুরো মন্ত্রের ব্যাখ্যা তুলে ধরলাম না , যেটুকু নিয়ে শঙ্কা রয়েছে সেটাই তুলে ধরলাম। কারোর যদি ইচ্ছে হয় আরও বিস্তারিত জানার, তাহলে এই লিঙ্ক থেকে দেখে নেবেন। আচাৰ্য় অগ্নিব্রত জি এখানে উক্ত মন্ত্রের তিন প্রকারের ভাষ্য করেছেন
👉য়জুর্বেদ ২৫/৭ ভাষ্য [আচাৰ্য় অগ্নিব্রত নৈষ্টিক] pdf 👈
এই বিষয়ে সকল বৈদিক বন্ধুদের ধ্যান দেওয়া উচিত যে ঋষি দয়ানন্দ যেমন বেদ ভাষ্য করতে চেয়েছিলেন তেমন ভাষ্য করতে পারেনি। ঋষি দয়ানন্দ সাংকেতিক বেদ ভাষ্য করেছেন।
ঋষি দয়ানন্দ বলেছিলেন বেদের মধ্যে সকল প্রকারের বিদ্যা রয়েছে [ ঋগ্বেদাদিভাষ্যভূমিকা/ ব্রহ্মবিদ্যাবিষয়]। তিনি বলেছিলেন -যদি এমন বিস্তৃত ভাষ্য আমি চার বেদের করি, তাহলে চার বেদের ভাষ্য করতে চারশো বছর সময় লাগবে। [ঋগ্বেদ মহাভাষ্যম্, আচাৰ্য় বিশ্বশ্রবা ব্যাস, পৃষ্ঠা-১৪৭]। ঋষি দয়ানন্দ ভ্রান্তি নিবারণ গ্রন্থে লিখেছেন- পরমাত্মার কৃপায় আমার শরীর সুস্থ থাক এবং সেই দিনের দেখা মিলবে যেদিন বেদ ভাষ্য সম্পূর্ণ হয়ে যাবে সেদিন নিঃসন্দেহে এই আর্য়্যাবর্ত্ত দেশে সূর্যের সমান প্রকাশিত হবে, যাকে ধ্বংস করার সামর্থ্য কারোর থাকবে না। কেননা সত্যের মূল এমন নয় যে যাকে যে কেউ খুবই সহজে উপড়ে ফেলবে। বেদের প্রতিটি মন্ত্রের তিন প্রকারের অর্থ হয় আধ্যাত্মিক, আধিভৌতিক ও আধিদৈবিক বিষয়ে নিম্নলিখিত পোষ্টটি দেখে নেবেন-
👉বেদ মন্ত্রের ত্রিবিধ ভাষ্য বিষয়ক👈
ঋষি দয়ানন্দ বলেছেন চার বেদের পূর্ণাঙ্গ ভাষ্য করতে চারশো বছর সময় লাগবে অর্থাৎ প্রতিটি বেদের একশো বছর করে সময় লাগবে, কিন্তু ঋষি দয়ানন্দ বেদ ভাষ্য করার জন্য ১০ বছরও সময় পাননি অর্থাৎ বলা যায় যে তিনি যেমন ভাষ্য করতে চেয়েছিলেন তার ২০% করতেও পারেননি। এই অধার্মিক নিকৃষ্ট সমাজ ঋষি দয়ানন্দকে বেঁচে থাকতে দেয়নি! সামান্য উদাহরণ স্বরূপ দেখুন ঋষি দয়ানন্দ ঋগ্বেদ ১/১/১ মন্ত্রের ভাষ্য করেছেন প্রায় ২ পৃষ্ঠায় কিন্তু কয়েক সুক্ত পেরিয়ে গিয়ে দেখুন কত ছোট ছোট ভাষ্য করেছেন। প্রায়ই মন্ত্রের কিছু কিছু শব্দের অর্থ তিনি করেননি, খুবই সংক্ষিপ্ত ভাষ্য করেছেন। ঋষি দয়ানন্দ হয়তো বুঝতে পেরেছিলেন যে এই নোংরা সমাজ তাকে বেশিদিন বাঁচতে দেবে না, কাজেই তিনি বেদের ভাষ্য খুবই সাংকেতিক করেছিলেন। কিন্তু আমাদের বিদ্বানেরা ঋষি দয়ানন্দের সাংকেতিক ভাষ্যকে ঠিকভাবে বুঝতে না পেরে ভুলভাল অর্থ করেছেন।
আমি এই পোষ্ট টি লিখলাম শুধুমাত্র বৈদিক বন্ধুদের জন্য শঙ্কা সমাধান হিসেবে। যে সকল পৌরাণিকরা ঋষি দয়ানন্দ কে গালি দেয়, তাদেরকে ঋষি দয়ানন্দের বেদ ভাষ্য বিষয়ে কিছু বোঝানোর কোনো ইচ্ছে আমার নেই। মহারাজ ভর্তৃহরি বলেছেন- ''সর্বস্যৌষধমস্তি শাস্ত্র বিহিতম্ মূর্খস্যনাস্ত্যৌষধম্।'' সকল রোগের ঔষধ শাস্ত্রে লিখিত রয়েছে কিন্তু মূর্খের ঔষধ শাস্ত্রে নাই অর্থাৎ দুঃখ রূপী রোগ থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার জন্য শাস্ত্রে বহু কথন রয়েছে কিন্তু মূর্খকে বোঝানোর মত কোনো কথন শাস্ত্রে নাই [ভর্তৃহরি, নীতি শতক/ ১০]। কিন্তু আমি মনে করি আগামীতে সকল পৌরাণিক বন্ধুরা মিলে অনুসন্ধান বিষয়ক একটি সংস্থা খুলবে। তারা দেশ বিদেশ ঘুরে নানান পশু বা প্রাণীদের সংগ্ৰহ করবে এবং তাদের মলদ্বার অণুবীক্ষণ যন্ত্র দ্বারা পরীক্ষা করে দেখবে যে সেই মলদ্বার দ্বারা অন্ধ সাপ দেবতার সম্পর্কে কিভাবে জানা যায় এবং সামান্য মলদ্বার পরীক্ষা করে দেখবে যে সাপ দেবতার সম্পর্কে কিভাবে জানা যায়। পরীক্ষায় সফল হলে হয়তো আচার্য উব্বটের কার্যের [বেদ ভাষ্য] প্রশংসা সকলেই করবে। ঠিক এইরূপ ব্রহ্মস্বরূপ করপাত্রীর কথা অনুসারে কোন কোন পশু বা প্রাণীর স্থূল ম*লদ্বার দ্বারা অন্ধ সাপ কে এবং ম*লদ্বারের অন্য ভাগ দিয়ে সাপকে প্রসন্ন করা সম্ভব এই বিষয়ে পরীক্ষা করা হবে। আমি মনে করি এই পরীক্ষার কাজটা পুরীর নিশ্চলানন্দ সরস্বতী কে দেওয়া উচিত, কেননা তিনিও মায়াবাদী।
নমস্তে
সত্যমেব জয়তে
কৃণ্বন্তো বিশ্বমার্য়ম্
সনাতন ধর্মের জয় হোক
জয় আর্য়াবর্ত🚩🚩
অতি উত্তম
ReplyDelete