google01b5732cb2ec8f39 আর্যবীর आर्यवीर aryaveer

Recent News

This is default featured slide 1 title

Go to Blogger edit html and find these sentences.Now replace these sentences with your own descriptions.This theme is Bloggerized by Lasantha Bandara - Premiumbloggertemplates.com.

This is default featured slide 2 title

Go to Blogger edit html and find these sentences.Now replace these sentences with your own descriptions.This theme is Bloggerized by Lasantha Bandara - Premiumbloggertemplates.com.

This is default featured slide 3 title

Go to Blogger edit html and find these sentences.Now replace these sentences with your own descriptions.This theme is Bloggerized by Lasantha Bandara - Premiumbloggertemplates.com.

This is default featured slide 4 title

Go to Blogger edit html and find these sentences.Now replace these sentences with your own descriptions.This theme is Bloggerized by Lasantha Bandara - Premiumbloggertemplates.com.

This is default featured slide 5 title

Go to Blogger edit html and find these sentences.Now replace these sentences with your own descriptions.This theme is Bloggerized by Lasantha Bandara - Premiumbloggertemplates.com.

সাত্ত্বিক, রাজসিক, তামসিক মনুষ্যের লক্ষণ

 সাত্ত্বিক, রাজসিক, তামসিক মনুষ্যের লক্ষণ



জীবাত্মা এবং পরমাত্মা ইতর যে সকল পদার্থ এই জগতে রয়েছে তার মূল হলো অব্যক্ত প্রকৃতি যার মধ্যে সত্ত্ব রজঃ তমঃ এই তিন গুণ সমান ভাবে বিদ্যমান রয়েছে। এই তিন গুণের প্রকৃতিই হলো এই জগৎ সৃষ্টির উপাদান পদার্থ এবং পরমাত্মা হলেন জগতের নির্মাণ কর্তা। যেহেতু এই জগতের প্রতিটি বস্তুর মধ্যে প্রকৃতির এই তিন গুণ বিদ্যমান রয়েছে সেহেতু মনুষ্যের শরীরের মধ্যেও এই তিন গুণ বিদ্যমান রয়েছে। মনুষ্যের মধ্যে কিরূপ লক্ষণ দেখা দিলে বোঝা সম্ভব যে তার সত্ত্ব, রজঃ, বা তমঃ গুণের প্রধানতা রয়েছে, এই বিষয়ে ঋষি মনু সুন্দর ভাবে আলোচনা করেছেন। 


মনুস্মৃতি ১২ অধ্যায়

যখন আত্মায় জ্ঞান থাকে তখন সত্ত্বগুণ, যখন আত্মায় অজ্ঞানতা থাকে তখন তমঃ গুণ, যখন আত্মায় রাগ-দ্বেষ থাকে তখন রজোগুণ প্রবল বলে জানবে। প্রকৃতির এই তিন গুণ সাংসারিক যাবতীয় পদার্থের মধ্যে ব্যাপ্ত হয়ে আছে।।২৬।।

যখন আত্মায় প্রসন্নতা থাকে, মন প্রসন্ন এবং প্রশান্ত অবস্থার ন্যায় শুদ্ধ ভাবযুক্ত থাকে, তখন বুঝতে হবে যে সত্ত্বগুণ প্রধান, রজঃ ও তমোগুণ অপ্রধান রয়েছে ৷৷ ২৭।।

যখন আত্মা ও মন দুঃখিত ও অপ্রসন্ন হয়ে বিষয়ে ইতস্ততঃ বিচরণ করে, তখন বুঝতে হবে যে, রজোগুণ প্রধান এবং সত্ত্ব ও তমোগুণ অপ্রধান রয়েছে ।।২৮

আত্মা মোহযুক্ত, খারাপ ভালো বিষয়ে জ্ঞান শূন্য, কোনো প্রকার বিচারে অস্পষ্টতা ইন্দ্রিয়ের বিষয়ে আসক্ত তর্ক বিতর্ক শূন্য কোনো বিষয়ে স্পষ্ট জানতে অক্ষম  এমন আচরণকারীর মধ্যে তমোগুণের প্রধানতা রয়েছে।।২৯।।

বেদ অভ্যাস, ধর্ম অনুষ্ঠান, জ্ঞান উন্নতি, পবিত্রতা লাভের ইচ্ছা, ইন্দ্রিয় নিগ্রহ, ধর্মক্রিয়া এবং আত্মচিন্তন হলো সত্ত্বগুণের লক্ষণ।।৩১।।

যখন রজোগুণের উদয় এবং সত্ত্ব ও তমোগুণের আবির্ভাব ঘটে, তখন কার্য আরম্ভে অরুচি, ধৈর্য্যত্যাগ, অসৎ কর্ম- গ্রহণ এবং নিরন্তর বিষয়ভোগে প্রীতি হয়ে থাকে। তখনই বুঝতে হবে যে আমার মধ্যে রজোগুণ প্রধানরূপে কাজ করছে।।৩২।।

যখন তমোগুণের আবির্ভাব এবং অন্য দুই গুণের অন্তৰ্ভাব ঘটে, তখন অত্যাধিক লোভ অর্থাৎ সকল পাপের বৃদ্ধি পায়, অত্যাধিক আলস্য ও নিদ্রা, ধৈর্য্য নাশ, ক্রূরতা জন্মে, নাস্তিক্য অর্থাৎ বেদ ও ঈশ্বরের প্রতি অশ্রদ্ধা জন্মে, অন্তঃকরণের বিভিন্ন বৃত্তি ও একাগ্রতা,  অভাব যার তার নিকট ভিক্ষা করা, প্রমাদ অর্থাৎ মদ্যপান আদিতে বিশেষ আসক্তি জন্মে তখন বুঝতে হবে যে আমার মধ্যে তমোগুণ প্রধান রূপে কাজ করছে।।৩৩।।

কোনো কর্ম করতে এবং করার ইচ্ছে হলে নিজের আত্মায় লজ্জা, সংশয় ও ভয় অনুভব হয় তখন বুঝতে হবে যে আত্মার মধ্যে তমোগুণের প্রাবল্য হয়েছে।।৩৫।।

যখন জীবাত্মা কর্ম দ্বারা ইহলোকে বিপুল য়শ লাভের আকাঙ্ক্ষা করে এবং দরিদ্র হয়েও প্রসিদ্ধি লাভের জন্য চারণ, ভাট আদিকে দান দেওয়া ত্যাগ করেনা, তখন বুঝতে হবে আমার আত্মায় রজোগুণ প্রবল হয়েছে।।৩৬।।

যখন মনুষ্যের আত্মা সর্বত্র জ্ঞানলাভের ইচ্ছা করে, নানান গুণ গ্রহণ করে থাকে, সৎকর্মে লজ্জা অনুভব করেনা এবং সৎকর্মে প্রসন্ন হয় অর্থাৎ ধর্ম আচরণে রুচি থাকে, তখন বুঝতে হবে আমার মধ্যে সত্ত্বগুণ প্রবল হয়েছে।।৩৭।।

তমোগুণের লক্ষণ কাম, রজোগুণের লক্ষণ অর্থসংগ্রহের ইচ্ছা এবং সত্ত্বগুণের লক্ষণ ধর্ম সেবা। তমোগুণ অপেক্ষা রজোগুণ এবং রজোগুণ অপেক্ষা সত্ত্বগুণ শ্রেষ্ঠ।।৩৮।।

কেউ যদি এমন ভেবে থাকে যে সাত্ত্বিক ব্যক্তির শরীরে শুধুমাত্র সত্ত্ব গুণ রয়েছে বা তামসিক ব্যক্তির শরীরে শুধুমাত্র তমঃ গুণ রয়েছে, তাহলে সেটা ভাবা ভুল হবে।প্রকৃতির মধ্যে এই তিন গুণ সমভাবে রয়েছে কাজেই মনুষ্যের শরীরের মধ্যেও এই তিনগুণ সমভাবে রয়েছে। কিন্তু যার শরীরে যখন সত্ত্বগুণ বা রজঃ গুণ বা তমঃ গুণ প্রধান রূপে কাজ তখন উক্ত প্রকারের লক্ষণ গুলো দেখা দেবে।


সত্যার্থ প্রকাশ সপ্তম সমুল্লাস

সকলকে নমস্তে

কৃণ্বন্তো বিশ্বমার্য়ম্🚩🚩




হিন্দুদের মূর্তি ভেঙ্গে ফেলা নিয়ে ঋষি দয়ানন্দের নামে অপপ্রচারের জবাব

নিষ্কলঙ্ক ঋষি দয়ানন্দ 



আর্য সমাজের জনপ্রিয়তা দেখে পৌরাণিক বন্ধুদের শরীরে আগুন জ্বলতে শুরু করেছে, কাজেই সব সময় পোড়া পোড়া গন্ধ পাওয়া যায়। পৌরাণিক বন্ধুরা কোমড়ে গামছা বেঁধে ঋষি দয়ানন্দের নামে মিথ্যাচার করার সঙ্কল্প নিয়েছে। পৌরাণিক বন্ধুদের নতুন এক অপপ্রচার হলো মাদাম ব্লাভাটস্কি নামের এক বিদেশী তার এক গ্রন্থে লিখেছে যে ঋষি দয়ানন্দ নাকি হিন্দুদের ১০০ টি মূর্তি ভেঙেছিল আদি আদি।

পৌরাণিকরা ঋষি দয়ানন্দের নামে যে সকল অপপ্রচার করে তার জবাব দেওয়া উচিতই নয়, কারণ মূর্খদের তৈরি মিথ্যাচারের বিরুদ্ধে কিছু লিখলে নিজেকেও মূর্খ মনে হয়, তবুও মাঝে মাঝে সময় পেলে জবাব হিসেবে কিছু লিখি। পৌরাণিক বন্ধুদের মানসিকতা দেখে কষ্ট হয়, কারণ ঋষি দয়ানন্দ এর বিরোধিতা করতে করতে তাদের বুদ্ধি দিনের পর দিন দ্বিগুণ পরিমানে হ্রাস পাচ্ছে। তারা আর্য সমাজের বই থেকে অপপ্রচার করতে অক্ষম হওয়ার দুঃখে পৌরাণিক বন্ধুরা ঋষি দয়ানন্দ বিরোধিতা করার জন্য মুসলিম বা খ্রিষ্টান বা পৌরাণিকদের বইয়ের প্রমাণ ব্যবহার করছে। পৌরণিকদের সামান্য এই বুদ্ধি নেই যে মুসলিম, নাস্তিক বা খ্রিস্টানরা  নিজেদের স্বার্থে সনাতন ধর্ম বিষয়ে যে সকল গ্রন্থ লিখেছে সে সকল গ্রন্থ কে কি পৌরাণিক বন্ধুরা প্রামাণ্য মানে ? কখনোই মানেনা! কিন্তু ঋষি দয়ানন্দ এর বিরোধিতা করার জন্য অন্য মতবাদীদের গ্রন্থ কে প্রামাণ্য মানছে। ব্যাপারটা কতটা হাস্যকর দেখুন।

ঋষি দয়ানন্দ আজীবন মূর্তি পূজার বিরোধিতা করেছে, সেটা আমি নিজেও করি। ঋষি দয়ানন্দ সত্যার্থ প্রকাশে মূর্তি পূজার খণ্ডন করেছেন বহু জায়গায় বৈদিক শাস্ত্র প্রমাণ ও তর্ক দ্বারা। কিন্তু তিনি কোথাও মূর্তি ভাঙার কথা বলেনি। ঋষি দয়ানন্দ সত্যার্থ প্রকাশের ১৪ সমুল্লাসে কুরআনের আয়াত তুলে ধরে কুরআন কে তর্ক দ্বারা খণ্ডন করেছেন। মুসলিমরা মূর্তি পূজার বিরোধিতা করে কিন্তু বাস্তবে মুসলিমরা নিজেই মূর্তি পূজারী পৌরাণিকদের মতোই। আসুন দেখি 'সত্যার্থ প্রকাশ' এর মধ্যে ইসলামের বিরুদ্ধে ঋষি দয়ানন্দ সরস্বতীর তর্ক রূপী তির!_____

কুরআনে বলা আছে,

'নিশ্চয়, আমি তোমাকে আকাশের দিকে মুখ ফেরাতে দেখেছি। নিশ্চয় আমি তোমাকে সেই কাবা অভিমুখী করব; তা তোমার পক্ষে প্রীতিকর হইবে। অতএব তোমার মুখ মসজিদুল হরামের দিকে ফিরাও। যেখানেই থাক না কেন তোমার মুখ সেই দিকেই ফিরিয়ে নেও।” কুরআন ২/১৪৪

ঋষি দয়ানন্দ-> ইহা কি ছোটো খাটো পৌত্তলিকতা? ইহা যে মস্ত বড় পৌত্তলিকতা। 

মুসলিম-> আমরা মুসলমানেরা মূর্তিপূজক নহি, কিন্তু মূর্তিভঞ্জক। আমরা মক্কার মসজিদকে খুদা মানি না।

ঋষি দয়ানন্দ-> তোমরা যাদেরকে পৌত্তলিক মনে কর তারাও নানা প্রকার মূর্ত্তিকে ঈশ্বর মানে না, কিন্তু তাদের সম্মুখে পরমেশ্বরেরই পূজা করে। তোমরা মূর্তিভঞ্জক হলে সেই বড় মূর্তি মক্কার মসজিদ্ ভগ্ন কর না কেন? 

মুসলিম-> বেশ তো মহাশয়। আমাদের প্রতি কুরাণের আদেশ আছে যে, মক্কার দিকে মুখ ফেরাতে হবে। কিন্তু তাদের প্রতি বেদের আদেশ নাই; সুতরাং তারা পৌত্তলিক নহে কেন? আমরা কেন পৌত্তলিক হইতে যাইব? আমাদের পক্ষে খুদার আদেশ পালনীয়।

ঋষি দয়ানন্দ -> তোমাদের পক্ষে যেমন কুরাণকে খুদার বাণী, পৌরণিকেরাও সেইরূপ পুরাণকে ঈশ্বরের অবতার ব্যাসদেবের বাণী মনে করেন। পৌত্তলিকতা বিষয়ে তোমাদের ও এদের মধ্যে কোন প্রভেদ নাই, বরং তোমরা বৃহৎ এবং এরা ক্ষুদ্র মূর্তির পূজক। যেমন কেউ নিজের গৃহ হতে বিড়াল তাড়াতে না তাড়াতে তন্মধ্যে উষ্ট্র প্রবেশ করে, সেইরূপ মহম্মদও মুসলমান মত হইতে ক্ষুদ্র মূর্তিটি অপসারিত করলেন সত্য কিন্তু মক্কার মসজিদরূপী পর্বতাকার বৃহৎ মূর্ত্তি মুসলমানদের মতে প্রবিষ্ট করালেন। এটা কি ছোটোখাটো পৌত্তলিকতা? অবশ্য তোমরাও যদি আমাদের ন্যায় বৈদিক ধর্ম অবলম্বন কর তা হলে মূর্ত্তিপূজাদি কুকর্ম হতে অব্যাহতি পেতে পার; নতুবা নয়। যতদিন তোমরা নিজেদের বৃহৎ মূর্তিকে অপসারিত না কর, ততদিন পর্যন্ত ক্ষুদ্র মূর্তিপূজা খণ্ডন করতে লজ্জাবোধ করা উচিত এবং মূর্তিপূজা হতে বিরত থাকা নিজেদের পবিত্র করা কর্তব্য।

■গ্রন্থঃ সত্যার্থ প্ৰকাশ, চতুর্দশ সমুল্লাস যবনমত সমীক্ষা।■

ঋষি দয়ানন্দ সত্যার্থ প্রকাশে সুন্দর ভাবে প্রমাণ করে দিয়েছেন যে মুসলিমরা হিন্দুদের থেকেও বৃহৎ মূর্তি পূজারী এবং যে সকল মোল্লারা মূর্তি ভাঙতে প্রস্তুত থাকে তাদের উদ্দেশ্যে লিখেছেন মুসলিমরা যদি সত্যি ই মূর্তি ভঞ্জক হয়ে থাকে তাহলে সবার আগে কাবা মসজিদ ভেঙে ফেলা উচিত! ঋষি দয়ানন্দের বদনাম করার জন্য পৌরাণিক বন্ধুরা খ্রিস্টান বা মুসলিমদের লেখা গ্রন্থের সাহায্য নেয় কিন্তু দুঃখের বিষয় পৌরাণিকরা নিজেদেরই ধর্মীয় গ্রন্থের বাণীকে সত্য হিসেবে মানেনা, আসুন দেখি এই বিষয়ে_____

ভাগবত পুরাণ ১০/৮৪/১৩ এই শ্লোকে কাঠ মাটি পাথর আদি বিকার সমূহ পদার্থে যারা ইষ্ট ভক্তি রাখে তারা নিম্নমানের পশু তুল্য। প্রকাশক-গীতাপ্রেস


পৌরাণিক বন্ধুরা এবার বলুন ভাগবত পুরাণ আর্য সমাজী, খ্রিস্টান বা মোল্লাদ বা নাস্তিকদের প্রামাণ্য গ্রন্থ নাকি আপনাদেরই ? আপনাদেরই ধর্মীয় গ্রন্থে আপনাদেরই নিম্নমানের পশু (শুয়োর, কুকুর, গাধা,ভেড়া আদি) বলা হচ্ছে।

ঋষি দয়ানন্দ মূর্তি পূজার বিরোধিতা করেছে তাই পৌরাণিক বন্ধুদের প্রচুর রাগ, কিন্তু হিন্দু সমাজের মহান সন্ন্যাসী স্বামী বিবেকানন্দ নিজে একজন মূর্তি পূজারী ছিল আজীবন মূর্তি পূজা করেছে, সে আবার নিজেও সকল মূর্তি ভেঙে ফেলার আদেশও দিয়েছে।

গ্রন্থঃ-স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা খণ্ড-৭> মিস মেরী হেল কে লিখিত  ১৮৯৭ সাল ৯ জুলাই। 



পৌরাণিক বন্ধুদের মহান সন্ন্যাসী, ঋষি তুল্য স্বামী বিবেকানন্দ বলেছে বেদে গরু খাওয়া রয়েছে, তিনি এটাও বলেছে যে বৌদ্ধরা মূর্তি পূজা শুরু করেছে, তিনি এটাও বলেছে যে মূর্তি পূজা সকল শাস্ত্রে অধম বা নিকৃষ্ট বলা হয়েছে।



স্বামী বিবেকানন্দ মূর্তি পূজার উৎপত্তির বিষয়ে বলতে গিয়ে বলেন 'তাহারা জানেন না যে, বৌদ্ধধর্মই ভারতে পৌরোহিত্য ও প্রতিমাপূজা সৃষ্টি করিয়াছিল।' গ্রন্থঃ স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা খণ্ড-৫> ভারতীয় মহাপুরুষগণ> মান্দ্রাজে বক্তৃতা।




স্বামী বিবেকানন্দ বলেছে 'এই মূর্তি পূজা আমাদের সকল শাস্ত্রেই অধমাধম বলিয়া বর্ণিত হইয়াছে।' গ্রন্থঃ স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা খণ্ড-৫> আমাদের জন্মপ্রাপ্ত ধর্ম> ১৯০১ সালে ৩১ মার্চ ঢাকায় পগোজ স্কুলে স্বামীজীর ইংরেজী বক্তৃতা।


স্বামী বিবেকানন্দ বলেন 'বেদ পাঠ করিলে দেখিতে পাইবে, কোনো বড়ো সন্ন্যাসী বা রাজা বা অন্য কোনো বড়োলোক আসিলে ছাগ বা গোহত্যা করিয়া তাহাদিগকে ভোজন করানোর প্রথা ছিল।' গ্রন্থঃ স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা খণ্ড-৫> ভারতে বিবেকানন্দ> মাদুরা অভিনন্দের উত্তর। 


স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা ১-১০ খণ্ডের প্রকাশক আর্য সমাজ বা কোনো হিন্দু বিরোধী সম্প্রদায় নয় বরং উদ্বোধন কার্যালয় যা রামকৃষ্ণ মিশন বা বেলুর মঠের নিজস্ব প্রকাশনা। শুধু উদ্বোধন কার্যালয়ই নয় সারা ভারতে স্বামী বিবেকানন্দের এই বাণী ও রচনা ১-১০ খণ্ড হিন্দি বাংলা ইংরেজীতে পাওয়া যায়, এই বিষয়ে কারোর সংশয় থাকলে স্বয়ং রামকৃষ্ণ মিশনে গিয়ে বা যেকোনো জায়গা থেকে এই গ্রন্থ ক্রয় করে রেফারেন্স অনুযায়ী মিলিয়ে নিন। যে সকল পৌরাণিক বন্ধুরা ঋষি দয়ানন্দের  নামে বদনাম করার জন্য খ্রিস্টান, মুসলিম বা পৌরাণিকদের লেখা গ্রন্থের সাহায্য নেয় তাদের কাছে প্রশ্ন আমার, যে বিবেকানন্দ কে আপনারা মহান সন্ন্যাসী, যোগী মনে করেন সেই বিবেকানন্দ এর কথাকে প্রামাণ্য মনে করে নিশ্চয় মূর্তি ভাঙা শুরু করবেন ? বিবেকানন্দ এর কথা অনুসারে গরু খাওয়া শুরু করবেন ? বিবেকানন্দ এর কথা অনুসারে মূর্তি পূজারীরা নিকৃষ্ট তাই আপনারা নিজেদের নিকৃষ্ট হিসেবে স্বীকার করবেন ? #আমি ১০০% বিশ্বাস করি যাঁরা ঋষি দয়ানন্দের মত উজ্জ্বল নক্ষত্র কে বদনাম করার জন্য মুসলিম বা খ্রিস্টানের লেখা কাল্পনিক গ্রন্থ কে প্রামাণ্য মানেন, তারা নিশ্চয় পৌরাণিক সমাজের বিখ্যাত সন্ন্যাসী বিবেকানন্দের উক্ত বাণী গুলো অবশ্যই গ্রহণ করে যথাযথ রূপে পালন করবে!

পৌরাণিক বন্ধুরা একবারও ভেবে দেখেনা যে তাদেরই ধর্ম গ্রন্থ ১৮+ পুরাণের মধ্যে কিপ্রকারে অশ্লীলতা, অবৈজ্ঞানিক কথন রয়েছে। যখন কোনো মুসলিম ব্রহ্মবৈবর্ত, ভাগবত আদি পুরাণ হাতে নিয়ে শ্রীকৃষ্ণ কে গালি দেয় তখন উত্তর দিতে না পেরে সকল পৌরাণিকরা গর্তে ঢুকে যায়। কিন্তু যে ঋষি দয়ানন্দ সরস্বতী ভারতে প্রথম কুরআন, বাইবেল আদি অধার্মিক গ্রন্থ কে খণ্ডন করে বেদানুকূল সনাতন ধর্ম কে শ্রেষ্ঠ প্রমাণ করেছিলেন, সেই ঋষি দয়ানন্দ এর মত ব্যক্তিকে কিছু পৌরাণিক বন্ধুরা গালি দেওয়ার জন্য তৈরি থাকে।

আমি মনে করি যে সকল পৌরাণিক বন্ধুদের মধ্যে সামান্য বিচার বিবেক রয়েছে তারা কখনোই ঋষি দয়ানন্দের নামে মিথ্যাচার করবে না। আমিও একজন পৌরাণিক ঘরের সন্তান। আমি এখন মনে করি আজ যদি ঋষি দয়ানন্দের মান্যতার সন্ধান না পেতাম তাহলে এতদিনে নাস্তিক হয়ে যেতাম, কারণ যে ব্যক্তি যুক্তিবাদী হয় সেই ব্যক্তি যদি আমাদের পৌরাণিক নানান দেবদেবীর আকৃতি আদি, পৌরাণিক কাহিনী আদি এবং বেদ আদি শাস্ত্রের বিকৃত ব্যাখ্যা নিয়ে বিচার করে তাহলে সে নিঃসন্দেহে নাস্তিক হয়ে যাবে। আমি পৌরাণিক বন্ধুদের মিত্রের চোখে দেখি, তারা আমাদের শত্রু নয়, তারা বিবেকহীন হয়ে ঋষি দয়ানন্দ কে গালি দেয় মাত্র। আমি আশা রাখি তারা যদি ঋষি দয়ানন্দের বেদানুকূল মান্যতা নিয়ে যুক্তিবিচার সহকারে চর্চা করে তাহলে তারা অবশ্যই প্রকৃত সত্যটা জানতে পারবে। 


সকলকে নমস্তে

কৃণ্বন্তো বিশ্বমার্য়ম্




মহাত্মা বুদ্ধ কি সনাতন ধর্ম বিরোধী ছিলেন ?

মহাত্মা বুদ্ধ কি সনাতন ধর্ম বিরোধী ছিলেন ?



বর্তমানে কিছু ব্যক্তি এমন রয়েছে যারা নিজেদের দলিত, মূল নিবাসী বলে দাবি করে এবং নিজেদের   মহাত্মা বুদ্ধের অনুসারী মনে করে অথচ এরাই মনে করে যারা বেদাদি শাস্ত্র কে মেনে চলে অর্থাৎ সকল মুনি ঋষিগণ, শ্রীরাম, শ্রীকৃষ্ণ আদি মহাপুরুষদের ঘৃণা করে, এরা গৌতম বুদ্ধ কে মেনে চললেও সনাতন ধর্মের শাস্ত্র আদি সম্পর্কে বাজে কথা বলা এদের নিত্য দিনের কাজ।

মহাত্মা গৌতম বুদ্ধের জন্ম আজ থেকে প্রায় ২৫০০ বছর আগে হয়েছিল এমনটা মনে করা হয়, ভাগবত পুরাণ অনুযায়ী বুদ্ধ হলো ভগবান বিষ্ণুর এক অবতার। যদিও আমরা (বৈদিকরা) অবতারবাদে বিশ্বাসী নই, কারণ অবতারবাদ বেদ বিরোধী। দেখে নিন- https://aryaveeratwa.blogspot.com/2020/03/blog-post_28.html
 
নিজেদের মূল নিবাসী বলে দাবি করা ডক্টর আম্বেদকরের ভক্ত গুলো যদি ত্রিপিটকের জ্ঞান অর্জন করতো তাহলে তারা মূর্খের মতো কখনোই ঋষি মুনিদের, শ্রীরাম শ্রীকৃষ্ণ আদিদের গালি দিতো না। বৌদ্ধ মতবাদে ত্রিপিটকের একটি ভাগ হলো সুত্তপিটক, আর এই সুত্তপিটকের মধ্যে নানান গ্রন্থ রয়েছে তার মধ্যে ধম্মপদ ও সুত্তনিপাত নামক দুই গ্রন্থ রয়েছে। এই সকল গ্রন্থ পালী ভাষায় রচিত, এই গ্রন্থ গুলোতে মহাত্মা বুদ্ধের নানান বাণী রয়েছে, তার থেকে কিছু বাণী তুলে ধরা হলো___ 

ধম্মপদ / ১৯ ধম্মট্ঠবগ্গো/১৩,১৪,১৫

ন মোনেন মুনী’ হোতি মূল্হরূপো অবিদ্দসু,
যো চ তুলং ব পগ্গয্হ বরমাদায় পণ্ডিতো।।১৩।।

পাপানি পরিবজ্জেতি স মুনী তেন সো মুনি, যো মুনাতি উভো লোকে মুনী তেন পবুচ্চতি।।১৪।। 

অর্থঃ অতিমূঢ় এবং অজ্ঞান ব্যক্তি, কেবল মৌনের দ্বারা মুনি হয় না, কিন্তু যে ব্যক্তি পণ্ডিত, তিনি তুলাদণ্ড ধারণ করে যা মঙ্গলকর তা গ্রহণ করেন, এবং যা পাপ তা বর্জন করেন, সেইরূপ ব্যক্তিকেই মুনি বলা যায়। এইরূপ কার্য্যের দ্বারা তিনি মুনি হন। যিনি উভয় লোক মনন করেন তিনি সেই কার্য্যের দ্বারা মুনি বলে কথিত হন।


ন তেন অরিয়ো হোতি যেন পাণানি হিংসতি,
 অহিংসা সব্বপাণানং অরিয়ো তি পবুচ্চতি।।১৫।। 

অর্থঃ যদি কেহ প্রাণিহিংসা করে, তবে সে  ‘আর্য' হয় না। সৰ্ব্বপ্রাণীতে যিনি হিংসা করেনা তাকে আর্য বলা হয়।।


ধম্মপদ / ২৬ ব্রাহ্মণবগ্গো/ ৯, ১০, ১১, ২০, ২১, ৪০

যস্স কায়েন বাচায়, মনসা নত্থি দুক্ক টং।
সংবুতং তীহি ঠানেহি তমহং ব্রুমি ব্রাহ্মণং।।৯।। 

অর্থঃ যার শরীরে, মনে ও বাণীতে পাপ নাই, যিনি এই ত্রিস্থানে অতিশয় সংযমশীল, সেই লোককে আমি ব্রাহ্মণ বলি।

যম্হা ধম্ম বিজানেয্য সম্মাসম্বুদ্ধ দেসিতং,
সক্ক চ্চং তং নমস্সেয্য অগ্গিহুতং ব ব্ৰাহ্মণো।।১০।। 

অর্থঃ যেমন ব্রাহ্মণ অগ্নিহোত্রকে ভক্তিভাবে নমস্কার করে, সেইরূপ যে ব্যক্তির নিকট হইতে বুদ্ধোপদিষ্ট ধৰ্ম্ম জ্ঞাত হওয়া যায়, তাঁহাকে ভক্তিভাবে প্রণাম করিবে।


ন জটাহি ন গোত্তেহি ' ন জচ্চা হোতি ব্রাহ্মণো,
যম্হি সচ্চঞ্চ ধম্মো চ সো সুচী সো চ ব্রাহ্মণো।।১১।। 

অর্থঃ জটা পরিধান দ্বারা, গোত্র দ্বারা এবং জাতি দ্বারা কেউ ব্রাহ্মণ হয় না, কিন্তু যিনি চার আর্য সত‍্য ষোড়শ প্রকারে দর্শন করেছেন ও নয় লোকত্তর ধর্ম পরিজ্ঞাত- তিনি শুচি এবং তিনিই প্রকৃত ব্রাহ্মণ।

যো দুক্খস্স পজানাতি ইধেহব খয়মত্তনো, 
পন্নভারং বিসংযুত্তং তমহং ব্রুমি ব্ৰাহ্মণং।। ২০।।

অর্থঃ  যিনি এই জগতে অথবা এই জীবনে নিজ দুঃখের ক্ষয় জেনে ভারশূন্য এবং পাপমুক্ত হয়েছেন, তাকে আমি ব্রাহ্মণ বলি।

 গম্ভীরপঞ্ঞ মেধাবিং মগ্‌গামগ্গস্স কোবিদং,
উত্তমত্থমনুপ্পত্তং তমহং ব্রুমি ব্ৰাহ্মণং।।২১।।

অর্থঃ যিনি প্রগাঢ় জ্ঞানী, মেধাবী, সত্যাসত্য পথের সুদর্শী এবং যিনি উত্তমপদ (নির্ব্বাণ) লাভ করেছেন তাকে আমি ব্রাহ্মণ বলি।

 উসভং পবরং বীরং মহেসিং বিজিতাবিনং, 
অনেজং নহাতকং বুদ্ধং তমহং ব্রুমি ব্ৰাহ্মণং।।৪০।।

অর্থঃ যিনি মহৎ, প্রবর, বীর, মহর্ষি, বিজেতা, স্নাতক এবং বুদ্ধ তাকে আমি ব্রাহ্মণ বলি।।


সুত্তনিপাত/ মহাবগ্গো/ পূরলাস (সুন্দরীক ভরদ্বাজ) সুত্তং/১০,১১,২৯


 মা জাতিং পুচ্ছি চরণঞ্চ পুচ্ছ, কট্ঠা হবে জায়তি জাতবেদো; 
নীচাকুলীনোপি মুনী ধিতীমা, আজানিযো হোতি হিরীনিসেধো।।১০।
 
অর্থঃ জাতি জিজ্ঞাসা করিও না, চরণই জিজ্ঞাসা কর। কাঠ হতে অগ্নির জন্ম হয়। মুনি নীচকুলে জন্মিলেও ধৃতিমান (বহুশ্রুত), বিবেক সংযত হয়ে পাপে লজ্জাশীল হযে উচ্চবংশীয় আচরণ সম্পন্ন হতে পারেন

 সচ্চেন দম্ভ দমসা উপেতো, বেদন্তগূ বূসিতব্রহ্মচরিযো কালেন তম্হি হব্যং পবেচ্ছে, যো ব্রাহ্মণো পুঞ্ঞপেক্‌খো' যজেথ।।১১।। 

অর্থঃ যিনি সত্যের দ্বারা দমিত ও সংযম সম্পন্ন, বেদান্তে উচ্চতম জ্ঞানের অধিকারী, এবং পূর্ণ-ব্রহ্মচর্য সম্পন্ন; তিনি যথাকালে হব্য লাভ করেন; হে পুণ্যকামী ব্রাহ্মণ! দানযজ্ঞের আয়োজন করুন। 

অঞ্ঞেন চ কেবলিনং মহেসিং, খীণাসবং কুক্কুচ্চবূপসন্তং,
অনেন পানেন উপট্ঠহস্সু, খেত্তংহিতং পুঞ্ক্রপেকখস্স হোতি।।২৯।।

অর্থঃ যিনি সংসার হতে মুক্তিলাভী মহর্ষি, ক্ষীণাসব, অনুতাপ উপশমকারী; তাঁহাকে অন্যরকম অন্ন, পানীয়াদির সাহায্যে পরিচর্যা কর। কারণ, পুণ্যকামীদের এমনটাই উপযুক্ত ক্ষেত্র।।


মহাত্মা বুদ্ধ এই সকল কথা সঠিক বলেছে নাকি ভুল বলেছে এই বিষয়ে আমি কিছু বলছি না। আমি বলতে চাই যে, যারা নিজেদের গৌতম বুদ্ধের আদর্শ মনে করে অথচ সনাতন ধর্মকে এবং সনাতনী মহাপুরুষদের গালি দেয়, তাদেরকে অনুরোধ করবো তারা যেন নিজেদের মূর্খতা বন্ধ করে গৌতম বুদ্ধ কে জানার চেষ্টা করে। 


নমস্তে




ব্রহ্মচারী ও ব্রহ্মচারিণীদের গুণ কর্ম স্বভাব

ব্রহ্মচারী ও ব্রহ্মচারিণীদের গুণ-কর্ম-স্বভাব





আমাদের বৈদিক শাস্ত্রে যে ৪ টি আশ্রম রয়েছে তার মধ্যে প্রথমটিই হলো ব্রহ্মচর্য তারপর গৃহস্থ, বানপ্রস্থ ও সন্ন্যাস। প্রতিটি আশ্রমই নিজ নিজ জায়গায় শ্রেষ্ঠ, কিন্তু সকলে মনুষ্য কে ব্রহ্মচর্য পালন করা আবশ্যিক কারণ ব্রহ্মচার্য পালন না করে সরাসরি গৃহস্থ আশ্রমে যাওয়া সম্ভব নয়। বেদে বলা হয়েছে 'ব্রহ্মর্য়েণ তপসা দেবা মৃত্যুপাঘ্নত' অথর্ববেদ ১১/৫/১৯ অর্থাৎ ব্রহ্মচর্যের তপস্যা দ্বারা মৃত্যু কে জয় করা যায়। ঋষি দয়ানন্দ সত্যার্থ প্রকাশে এবং সংস্কার বিধি আদি গ্রন্থে ব্রহ্মচর্য পালন বিষয়ে নানান শাস্ত্র আদির প্রমাণ দ্বারা খুবই সুন্দর ভাবে লিখেছেন, তারই সংক্ষিপ্ত ভাব তুলে ধরা হলো____



য়মান সেবেত সততং ন নিয়মান্ কেবলান্ বুধঃ।

য়মান্ পতত্যকুর্বাণো নিয়মান্ কেবলান্ ভজন।।


#মনুস্মৃতি ৪/২০৪


তত্রাহিংসাসত্যাস্তেয়ব্রহ্মচর্য়াপরিগ্রহা য়মাঃ। 


#যোগদর্শন ২/৩০


ঋষি পতঞ্জলি যোগ দর্শনে যোগের আটটি অঙ্গ বিষয়ে লিখেছেন - য়ম, নিয়ম, আসন, প্রাণায়াম, প্রত্যাহার, ধারণা, ধ্যান ও সমাধি এগুলোকে অষ্টাঙ্গ যোগও বলা হয়ে থাকে। আবার য়মকে পাঁচ ভাগে ভাগ করা হয়েছে যেমন- সদা শরীর, বচন ও মন দ্বারা সর্বপ্রকারে সকল প্রাণীমাত্রেরই সাথে বিদ্বেষ ভাব পরিত্যাগ করে, প্রেম, প্রীতি সহিত অবস্থান করাকে (অহিংসা) বলে। যে পদার্থ যেমন তাকে তেমনই বোঝা, তেমনই বলা ও তেমনই করাই হলো (সত্য)। চুরি আদি বিষয় ত্যাগ করাকে (অস্তেয়) বলা হয়। বিদ্যা অভ্যাসের জন্য বাল্য অবস্থা থেকে সর্বথা বীর্য় রক্ষা করা অর্থাৎ জিতেন্দ্রিয় হওয়া, বেদ আদি শাস্ত্র অধ্যায়ন করা, উপস্থেন্দ্রিয়কে সংযমে রাখা হলো (ব্রহ্মচর্য়‍্য) বিষয় ও অভিমান আদি দোষ রহিত হওয়া হলো (অপরিগ্রহ)। এই পঞ্চবিধ ‘যম’ সর্বদা সেবন করিবে। কেবল নিয়ম সেবন অর্থাৎ___


শৌচসন্তোষপঃস্বাধ্যায়েশ্বরপ্রণিধানানি নিয়মাঃ।।


#যোগদর্শন ২/৩২


(শৌচ) অর্থাৎ অন্তর ও বাহ্য উভয় দিক দিয়ে পবিত্র থাকা (সন্তোষ) সম্যকরূপে প্রসন্ন হয়ে উদ্যম শূন্য থাকা সন্তোষ নয়, কিন্তু যথাসাধ্য পুরুষার্থ করা এবং হানি-লাভে-শোক বা হর্ষ প্রকাশ না করা, (তপঃ) অর্থাৎ কষ্ট সহ্য করেও ধর্মযুক্ত কর্মের অনুষ্ঠান করা, (স্বাধ্যায়) বেদ আদি শাস্ত্র অধ্যয়ন ও অধ্যাপনা (ঈশ্বর প্রণিধান) ঈশ্বরের প্রতি প্রগাঢ় ভক্তিতে আত্মাকে অর্পিত রাখা এই পাঁচটি 'নিয়ম'। য়ম ব্যতীত কেবলমাত্র নিয়ম ধারণ করবে না, কিন্তু ‘য়ম নিয়ম’ উভয়ই ধারণ করবে। যে ব্যক্তি যম পরিত্যাগ করে কেবল নিয়ম ধারণ করে, সে উন্নতি লাভ করতে পারে না, বরং অধোগতি অর্থাৎ সংসারে পতিত অবস্থায় থাকে। 





কামাত্মতা ন প্রশস্তা ন চৈবেহস্ত্যকামতা।

কাম্যো হি বেদাধিগমঃ কর্ময়োগশ্চ বৈদিকঃ।।


#মনুস্মৃতি ২/২


 অত্যন্ত কামাতুরতা এবং নিষ্কামতা কারোরও পক্ষে শ্রেষ্ঠ নয়। কারণ কামনা ব্যতীত বেদজ্ঞান এবং বেদবিহিত কর্মাদি উত্তম কর্ম কারোরও দ্বারা সম্পন্ন হতে পারে না। অতএব___


স্বাধ্যয়েন ব্ৰতৈহোমৈস্ত্ৰৈবিদ্যেনেজায়া সুতৈঃ।

মহায়চৈ চৈ ব্রাহ্মীয়ং ক্রিয়তে তনুঃ।।


#মনুস্মৃতি ২/২৮


(স্বাধ্যায়) সকল বিদ্যার পঠন পাঠন (ব্রত) ব্রহ্মচার্য ও সত্যভাষণাদি নিয়মপালন (হোম) অগ্নিহোত্রাদি হোম, সত্যগ্রহণ, অসত্য বর্জন এবং সত্যবিদ্যা দান; (ত্রৈবিদ্যেন) বেদস্থ কর্ম, উপাসনা, জ্ঞান, বিদ্যাগ্রহণ; (ইজ্যয়া) পক্ষেষ্টি যজ্ঞ প্রভৃতি কর্ম (সুতৈঃ) সুসন্তানোৎপত্তি; (মহায়জ্ঞৈ) ব্রহ্ম, দেব, পিতৃ, বৈশ্বদেব এবং অতিথিদের সেবারূপ পঞ্চমহাযজ্ঞ এবং (য়জ্ঞৈঃ) অগ্নিষ্টোমাদি, শিল্পবিদ্যা, ও বিজ্ঞানাদি যজ্ঞানুষ্ঠান দ্বারা এই শরীরকে ব্রাহ্মী অর্থাৎ বেদ ও পরমেশ্বরের ভক্তির আধার স্বরূপ ব্রাহ্মণ-শরীর করা যায়। এই সকল সাধন ব্যতীত ব্রাহ্মণ শরীর হতে পারে না।


ইন্দ্রিয়াণাং বিচরতং বিষয়েষ্বপহারিষু।

সংয়মে য়ত্বমাতিষ্ঠেদ্বিদ্বান্ য়ন্তেব বাজিনাম্।।


#মনুস্মৃতি ২/৮৮


বিদ্বান সারথি যেরূপ অশ্ব সমূহকে নিয়মে রাখে সেইরূপ মন এবং আত্মাকে কুকর্মে আকর্ষণকারী ও বিষয় মধ্যে বিচরণশীল ইন্দ্রিয় সমূহের নিগ্রহ অর্থে সর্ব প্রকার যত্ন করবে। কারণ___


ইন্দ্রিয়াণাং প্রসঙ্গেন দোষম্ ঋচ্ছত্যসংশয়ম্।

সংনিয়ম্য তু তান্যেব ততঃ সিদ্ধিং নিয়চ্ছতি।।


#মনুস্মৃতি ২/৯৩


জীবাত্মা ইন্দ্রিয় সমূহের বশীভূত হয়ে নিশ্চয়ই নানা প্রকার বড় বড় দোষ প্রাপ্ত হয় এবং যখন সে ইন্দ্রিয় সমূহকে নিজের বশীভূত করে, তখনই সিদ্ধিলাভ হয়।


বেদাস্ত্যাগশ্চ য়জ্ঞাশ্চ নিয়মাশ্চ তপাংসি চ।

ন বিপ্ৰদুষ্টভাবস্য সিদ্ধিং গচ্ছন্তি কর্হিচিত্।।


#মনুস্মৃতি ২/৯৭


যে ব্যক্তি দুরাচারী ও অজিতেন্দ্রিয় তাহার বেদ, ত্যাগ, যজ্ঞ, নিয়ম, তপ এবং অন্যান্য সৎকর্ম কখনও সিদ্ধ হয় না


বেদোপকরণে চৈব স্বাধ্যায়ে চৈব নৈত্যকে।

 নানুরোধোऽস্ত্যনধ্যায়ে হোমমন্ত্ৰেষু চৈব হি।।

নৈত্যকে নাস্ত্যনধ্যায়ো ব্রহ্মসত্রং হি তত্স্মৃতম্। ব্রহ্মাহুতিহুতং পূণ্যম্ অনধ্যায়বষট্কৃতম্।।


#মনুস্মৃতি ২/১০৫,১০৬



বেদের পঠন, পাঠন, সন্ধ্যোপাসনাদি পঞ্চ মহাযজ্ঞের অনুষ্ঠানে এবং হোমমন্ত্র সম্বন্ধে অনধ্যায় অনুরোধ (আগ্রহ) নাই। কেননা নিত্যকর্মে অনধ্যায় হয়না যেরূপ সর্বদা শ্বাস-প্রশ্বাস গ্রহণ করতে হয় কখনও বন্ধ করা যায় না, সেইরূপ প্রতিদিন নিত্যকর্ম কৰ্ত্তব্য। নিত্যকর্ম কখনোই পরিত্যাগ করবে না। কেননা অনধ্যায়েও অনুষ্ঠিত অগ্নিহোত্রাদি উত্তম কর্ম পুণ্যকর। যেরূপ মিথ্যা বললে সর্বদা পাপ এবং সত্য বললে সর্বদা পুণ্য হয়, সেইরূপ কুকর্মে সর্বদা অনধ্যায় ও সুকর্মে সর্বদা স্বাধ্যায়ই হয়ে থাকে৷


অভিবাদনশীলস্য নিত্যং বৃদ্ধোপসেবিনঃ।

চত্বারি তস্য বর্দ্ধন্ত আয়ুবিদ্যা য়শোবলম্।।


#মনুস্মৃতি ২/১২১


যে সর্বদা নম্র, সুশীল এবং বৃদ্ধসেবী, তার আয়ু, বিদ্যা, কীৰ্ত্তি এবং বল— এই চার বিষয় সর্বদা বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হয়। আর যে ব্যক্তি এইরূপ করে না তার আয়ু প্রভৃতি চারিটি বিষয় বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হয় না।


অহিংসয়ৈব ভূতানাং কার্য়ং শ্ৰেয়োऽনুশাসনম্।

বাক্ চৈব মধুরা শ্লক্ষ্ণা প্রয়োজ্যা ধৰ্ম্মমিচ্ছতা।।

য়স্য বাঙ্ঘনসে শুদ্ধে সম্যগ্গুপ্তে চ সর্বদা।

স বৈ সৰ্বমবাপ্নোতি বেদান্তোপগতং ফলম্।।


মনুস্মৃতি ৪/১৫৯,১৬০


বৈরবুদ্ধি পরিত্যাগ করে সকলকে কল্যাণ মার্গের উপদেশ প্রদান করা বিদ্বান এবং বিদ্যার্থীদের কৰ্ত্তব্য। উপদেষ্টা সর্বদা সুশীলতা যুক্ত বাণী বলবেন। যিনি ধর্মের উন্নতি কামনা করেন, তিনি সত্যপথে চলবেন এবং সত্যেরই উপদেশ দিবেন। যাঁর বাণী এবং মন শুদ্ধ ও সুরক্ষিত, তিনিই সমস্ত বেদান্ত অর্থাৎ সমগ্র বেদের সিদ্ধান্ত রূপ ফল প্রাপ্ত হন।



অনেন ক্রময়োগেন সংস্কৃতাত্মা দ্বিজঃ শনৈঃ।

গুরৌ বসন্‌ সঞ্চিনুবাদ ব্ৰহ্মাধিগামিকং তপঃ।।


#মনুস্মৃতি ২/১৬৪ 


এইরূপ কৃতোপনয়ন দ্বিজ ব্রহ্মচারী কুমার এবং ব্রহ্মাচারিণী কন্যা ধীরে ধীরে বেদার্থজ্ঞানরূপ

উত্তম তপ কে বৃদ্ধি করতে থাকবে।।



বর্জয়েন্মধুমাংসঞ্চ গন্ধং মাল্যং রসান্ স্ত্রিয়ঃ।

শুক্তানি য়ানি সৰ্বাণি প্ৰাণিণাং চৈব হিংসনম্।।

অভ্যঙ্গমঞ্জনং চাক্ষ্ণোরুপানচ্ছত্রধারণম্। 

কামং ক্রোধং চ লোভং চ নৰ্ত্তনং গীতবাদনম্।।

দ্যূতং চ জনবাদং চ পরিবাদং তথানৃতম্ । 

স্ত্ৰীণাং চ প্রেক্ষণালম্ভমুপঘাতং পরস্য চ।।

একঃ শয়ীত সর্বত্র ন রেতঃ স্কন্দয়েত্ক্বচিত্।

কামাদ্ধি স্কন্দয়ন রেতো হিনস্তি ব্রতমাত্মানঃ।।



#মনুস্মৃতি ২/১৭৭,১৭৮,১৭৯,১৮০


ব্রহ্মচারী ও ব্রহ্মচারিণী মদ্য, মাংস, মাল্য, রস, স্ত্রী-পুরুষ সংসর্গ সর্বপ্রকার অম্ল, প্রাণি হিংসা৷

অঙ্গ-মর্দন, অকারণে উপস্থেন্দ্রিয় স্পর্শ, নেত্রাঞ্জন, জুতা-ছত্র ধারণ কাম, ক্রোধ, লোভ, মোহ, ভয়, শোক ঈর্ষা, দ্বেষ ও নৃত্য, গীত, বাদ্য বাদন। দ্যুত, পরচর্চা, নিন্দা, মিথ্যাভাষণ, স্ত্রী দর্শন, পরনির্ভরশীলতা এবং পরের অপকার ইত্যাদি কুকর্ম সর্বদা পরিত্যাগ করবে। সর্বত্র একাকী শয়ন করবে, কখনও বীর্য স্খলন করবে না। যদি কামনা বশতঃ কেউ বীৰ্য স্খলন করে, সে তার নিজের ব্রহ্মচর্য্য ব্রত নাশ করে ফেলেছে এমনটা জানো।।


বেদমনুচ্যাচার্য়োऽন্তেবাসিনমনুশাস্তি। সত্যং বদ। ধর্মং চর। স্বাধ্যায়াত্মা প্রমদঃ। আচার্য়‍্যায় প্রিয়ং ধনমাহৃত‍্য প্রজাতন্তুং মা ব্যবচ্ছেত্সীঃ। সত্যান্ন প্রমদিতব্যম্। ধর্মান্ন প্রমদিতব্যম্। কুশলান্ন প্রমদিতব্যম্।স্বাধ্যায়প্রবচনাভ্যাং ন প্ৰমদিতব্যম দেবপিতৃত্কার্য়্যাভ্যাং ন প্রমদিতব্যম্।।


মাতৃদেবো ভব। পিতৃদেবো ভব। আচার্য়‍্যদেব ভব। অতিথিদেবো ভব। য়ান্যনবদ্যানি কর্মাণিতানি সেবিতব্যানি নো ইতরাণি। য়ান্যস্মাক সুচরিতানি তানি ত্বয়োপাস্যানি নো ইতরাণি।।


য়ে কে চাস্মচ্ছেয়াংসো ব্রাহ্মণাস্তেষাং ত্বয়াসনেন প্রশ্বসিতব্যম্। শ্রদ্ধয়া দেয়ম্। অশ্রদ্ধয়া দেয়ম্। শ্রিয়া দেয়ম্। হ্রিয়া দেয়ম্। ভিয়া দেয়ম্। সংবিদা দেয়ম্। অথ য়দি তে কর্মবিচিকিৎসা বা বৃত্তবিচিকিৎসা বা স্যাত্৷।


য়ে তত্ৰ ব্ৰাহ্মণাঃ সমদর্শিনো য়ুক্তা অয়ুক্তা অলূক্ষা ধর্মকামাঃ স্যূর্য়থা তে তত্র বর্ত্তেরন্। তথা তত্র বৰ্ত্তেথাঃ। এষ আদেশঃ এর উপদেশঃ এষা বেদোপনিষত্। এতদনুশাসনম্। এবমুপাসিতব্যম্। এবমু চৈতদুপাস্যম্।।


#তৈত্তিরীয় উপনিষদ ১/ ১১/ ১,২,৩,৪


আচার্য্য অন্তেবাসী অর্থাৎ নিজ শিষ্যদের এইরূপ উপদেশ দিবেন :– তুমি সর্বদা সত্য বলবে, ধর্মচারণ করবে, পূর্ণ ব্রহ্মচর্য দ্বারা সমস্ত বিদ্যাগ্রহণ করবে এবং আচার্য্যকে প্রিয়ধন প্রদান পূর্বক বিবাহ করে সন্তানোৎপত্তি করবে। প্রমাদ বশতঃ কখনও সত্য পরিত্যাগ করবে না। প্রমাদ বশতঃ কখনও ধর্ম পরিত্যাগ করবে না। প্রমাদ বশতঃ আরোগ্য ও নিপুণতা ত্যাগ করবে না। প্রমাদ বশতঃ কখনও পঠন-পাঠন পরিত্যাগ করবে না। যেরূপ বিদ্বান ব্যক্তিদের সম্মান করবে, সেইরূপ মাতা, পিতা আচার্য্য এবং অতিথিদেরও সর্বদা সেবা করবে। মিথ্যা ভাষণাদি কখনও করবেনা। আমাদের সুচরিত্র অর্থাৎ ধর্মযুক্ত কর্ম গ্রহণ করবে এবং আমাদের পাপাচরণ কখনও গ্রহণ করবে না। আমাদের মধ্যে যারা উত্তম বিদ্বান ও ধর্ম্মাত্মা ব্রাহ্মণ, তাদেরই সমীপে উপবেশন করবে এবং তাদের সকলকে বিশ্বাস করবে। শ্রদ্ধা সহকারে দান করবে। অশ্রদ্ধা থাকলেও দান করবে। শোভনতা সহকারে দান করবে। লজ্জার সহিত দান করবে। ভীত হয়েও দান করবে। প্রতিজ্ঞা বশতঃ দান করবে। কর্মশীল, উপাসনা ও জ্ঞান সম্বন্ধে কখনও কখনও সংশয় উপস্থিত হলে বিচারশীল, পক্ষপাতশূণ্য, যোগী অথবা অযোগী কোমল চিত্ত ধর্মাভিলাষী এবং ধৰ্ম্মাত্মাগণ যে যে ধর্মপথে থাকেন তুমিও সেই পথে থাকবে। এটিই আদেশ, এটিই আজ্ঞা,এটিই উপদেশ, এটিই বেদোপনিষদ্ এবং এটিই শিক্ষা। এইরূপ আচরণ করা এবং স্বীয় আচরণকে সংশোধিত করা কর্তব্য।



বৈদিক সৃষ্টি বিজ্ঞানের সাথে মিথ্যা বিগ ব্যাং তত্ত্বের কোনো মিল নেই

বৈদিক সৃষ্টি বিজ্ঞানের সাথে বিগ ব্যাং তত্ত্বের সাদৃশ্য যারা খুঁজে পায় সেই সমস্ত কথিত আর্যের জন্য 


আমি অনেক আর্য সমাজের মধ্যেই আবাল দেখছি যারা বিগ ব্যাং থিওরি সাথে বেদে থাকা থিওরির মিল খুঁজে পায়। এমন করে কোন লাভটি পাই এরা ? যারা এমন পাগলামিটি করে তাদের কি আদৌ সংস্কৃত ভাষা সম্পর্কে কোনো যোগ্যতা আছে ? বেদের ৬টি অঙ্গ সম্পর্কে যোগ্যতা কতটা ? বেদের ব্যাখ্যা শাস্ত্র হলো ব্রাহ্মণ, এরা জীবনেও ব্রাহ্মণ শাস্ত্র কি পড়ার ক্ষমতা রেখেছে ? বেদানুকূল ৬টি দর্শনের প্রতিটি সূত্রে কিরূপ কথন আছে তা নিয়ে কখনোই কি চর্চা করেছে ? এগুলো সম্পর্কে কিছুই না জানা সত্ত্বেও এরা আধুনিক বিজ্ঞানের তৈরি বিগ ব্যাং তত্ত্বের সাথে বেদের সৃষ্টি বিজ্ঞানের মিল খুঁজতে যায় কোন মূর্খতায় ? মোল্লারা এমনটা করে যে আধুনিক বিজ্ঞান যা কিছু আবিষ্কার করবে তারপর এরা বলে উঠবে যে ১৪০০ বছর আগের থেকেই এই কথাটি কুরআনে লিখাই ছিল। এইটা হাস্যকর ছাড়া অন্য কিছুই নয়, ঠিক এমনই করছে আমাদের আর্য সমাজের কিছু ব্যক্তি! আমাদের আর্যদের একটি পরিষ্কার বিষয় বলে দেই যে বিগ ব্যাং থিওরি বর্তমানে শত শত প্রশ্নের সামনে পড়েছে, ২০০৪ সালে ভারতের  বিজ্ঞানী আভাস মিত্র প্রথম এই বিগ ব্যাং থিওরিকে খণ্ডন করেছে, এখন তো অনেকে বিজ্ঞানীই এই তত্ত্ব কে মিথ্যা কল্পনা ছাড়া অন্য কিছুই মানছে না। আমাদের আর্য সমাজের বর্তমানের সবচেয়ে বড়ো বিদ্বান আমার মতে আচার্য অগ্নিব্রত নৈষ্টিক জী। তিনি ঋগ্বেদের ব্যাখ্যা শাস্ত্র ঐতরেয় ব্রাহ্মণের ভাষ্য করেছেন যার নাম দেওয়া হয়েছে "বেদ বিজ্ঞান আলোক"। এই গ্রন্থে যে সমস্ত পদার্থ বিজ্ঞানের কথন করা হয়েছে সেখানে আজও আধুনিক বিজ্ঞান পৌঁছাতেই পারেনি, নৈষ্টিক জী আধুনিক বিজ্ঞানের অনেক ভ্রান্তিকে খণ্ডন করেছেন এবং আমাদের শাস্ত্রে থাকা সৃষ্টি বিজ্ঞানটিও তুলে ধরেছেন, তিনি এটাও বলেছেন বিগ ব্যাং তত্ত্বের সাথে আমাদের বৈদিক সৃষ্টি বিদ্যার কোনো মিল নেই। নৈষ্টিক জীর ইউটিউব চ্যালেন vaidic physics 👇👇


এখানে আপনারা বৈদিক সৃষ্টি বিজ্ঞান সম্পর্কে অনেক কিছু জানতে পারবেন, নৈষ্টিক জী "বেদ বিজ্ঞান আলোক" থেকে প্রায় 75 টি ক্লাস নিয়েছে, আরও নানান বিষয়ে চর্চা করেছেন। নৈষ্টিক জী এই সমস্ত ক্লাস নেওয়া ফলে এবং আধুনিক বিজ্ঞানের নানান বিষয়কে খণ্ডন করার ফলে তাকে দেশ বিদেশ থেকে নানান প্রকারের হুমকি দেওয়া হচ্ছে। নৈষ্টিক এখন নিরুক্ত এর ভাষ্য করছেন, তিনি বলেছেন নিরুক্ত ভাষ্য হওয়ার পর আর কোনো বেদ বিরোধীরা বেদের বিরুদ্ধে প্রশ্ন তোলার ক্ষমতা রাখবে না, ঐতরেয় ব্রাহ্মণে যা বিজ্ঞান আছে তার থেকে বেশি বিজ্ঞান আছে মহর্ষি য়াস্ক এর নিরুক্তের মধ্যে। তাই আমি আমাদের ওই আর্যদের বলছি যারা আধুনিক বিজ্ঞানের তৈরি যে কোনো বিষয়কে বেদে আছে বলে চালিয়ে দেয়, বলছি তোমরা বা আমরা কিন্তু আমাদের আর্য সমাজের বিদ্বানের ব্যাখ্যা করা গ্রন্থ পড়ি, ডাইরেক্ট বৈদিক শাস্ত্র পড়ার কোনো যোগ্যতা আমাদের নাই! তাই আমাদের দেখা উচিত আমাদের আর্য বিদ্বানরা যুক্তি তর্কশীল এবং শাস্ত্রীয় ব্যাখ্যা দিয়ে উক্ত বিষয়ে কি বলছে, আধুনিক বিজ্ঞান কি করছে তার সাথে বেদের মিল খোঁজানোর বিষয় বন্ধ করুন, নয়তো সমাজের কাছে নিজেরা হাস্যকর হয়ে উঠবেন! 

নমস্তে

যোগীরাজ মহাদেবের সম্পর্কে কিছু অজানা তথ্য এবং তার বাণী

যোগীরাজ মহাদেবের সম্পর্কে কিছু অজানা তথ্য এবং তার বাণী


আমরা জানি যে পরমাত্মার এক গৌণ নাম হলো মহাদেব কিন্তু মহাদেব নামের একটি মহাপুরুষও ছিলেন, যার স্ত্রীর নাম ছিল উমা দেবী, যোগীরাজ মহাদেব হিমালয়ে বসবাস করতেন, যিনি একজন মহান বৈজ্ঞানিক ছিলেন, এই বিষয়টি একটু পরিষ্কার করিয়ে দেই যে সমস্ত ঋষি, মহর্ষিরা কিন্তু যোগী আর যিনি যোগী তিনি সবর্দা পরমাত্মার সাথে যুক্ত হতে পারেন এবং যে কোনো সময় পদার্থ বিদ্যা বা আধ্যাত্মিক বিদ্যা সম্পর্কে সমস্ত তত্ত্ব জানতে সক্ষম হন। কাজেই মহাদেব কে বৈজ্ঞানিক বলা যথাযথ কারণ তিনি একজন মহাযোগী ছিলেন, মহর্ষি দয়ানন্দ সরস্বতী পুনাতে প্রবচন দিয়েছিলেন, সেখানে মহর্ষি দয়ানন্দ যোগীরাজ মহাদেব বা শিবের বিষয়ে আলোচনা করেছেন, কয়েকদিনের মধ্যেই মহর্ষি দয়ানন্দ জীর "পুনা প্রবচন" গ্রন্থ টি pdf রূপে দেবো, সকলে পড়বেন অবশ্যই, বহু শাস্ত্রীয় জ্ঞান এবং বহু ইতিহাস আলোচনা করেছিলেন মহর্ষি দয়ানন্দ জী পুনা শহরের প্রবচনে। যোগীরাজ মহাদেবের বিষয়ে আলোচনা কিছু পাওয়া যায় মহাভারতের মধ্যে পিতামহ ভীষ্ম কুরুক্ষেত্রে মৃত্যু শয্যায় মহাদেবের বহু বাণী প্রকাশ করেছিলেন। সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় এই যে  মহা বৈজ্ঞানিক যোগীরাজ শিব কে মাল পুরাণ কাহিনীতে মহা লুচ্চা, কামী বানিয়েছে আর এই পুরাণ গুলোকে মেনে চলে আমাদের হিন্দু সমাজ। আমি পূর্বেও বলেছি আবারও বলছি যে আমাদের মহাপুরুষদের চরিত্র কে কুলষিত করার জন্য  কেউ বা কারা যদি পরিকল্পনা নিয়ে থাকে তাহলে তারা হলো 18+ পর্ণ পুরাণের মহাভণ্ড লেখক গণ। দেখুন পুরাণে যোগী শিব কে নিয়ে কিরূপ অশ্লীল কাহিনী বানিয়েছে____


দারু বনে ঋষিদের সৃষ্টির সাথে যৌন ক্রীড়ার জন্য ঋষিদের অভিশাপে শিবের লিঙ্গ বা গোপনাঙ্গ কেটে পড়ার কাহিনী। শিব পুরাণের এই কাহিনী হতেই শিব লিঙ্গ পূজা শুরু হয়েছে
👇


শিবের গোপনাঙ্গ দিয়ে শুক্রাচার্যের জন্মের কাহিনী 👇👇


ভবিষ্য পুরাণে আর এক কাহিনী আছে যে অত্ৰী মুনির স্ত্রী অনসুয়াকে ধর্ষণের চেষ্টা করার জন্য, তার অভিশাপে  শিবের গোপনাঙ্গ বা লিঙ্গ পূজার কাহিনী
👇👇



যোগেশ্বর শ্রীকৃষ্ণের মতো আপ্ত পুরুষ কে ভাগবত পুরাণ, ব্রহ্মবৈবর্ত পুরাণ, বিষ্ণু পুরাণ আদিতে মহা লুচ্চা বানিয়েছে, ঋষি ব্রহ্মা কে লুচ্চা বানিয়েছে। এই সমস্ত অশ্লীল পুরাণ কে আজও মেনে চলা হচ্ছে হিন্দু সমাজে ধর্ম গ্রন্থ হিসেবে, তাতে কারোর কোনো মাথা ব্যাথা নেই কিন্তু আমরা যদি পুরাণের অশ্লীলতার বিরুদ্ধে কথা বলি তাহলে আমরা(আর্য) খারাপ, আর আমরাই নাকি সনাতন ধর্মকে বিনাশ করছি! লেও দেহি ঠ্যালা💥 সনাতন ধর্ম কে বিকৃত ভাবে বিনাশের দিকে নিয়ে যাওয়ার জন্য পুরাণের ভূমিকা ১০০%, হিন্দুরা সেদিন একতা হবে যেদিন হিন্দুরা পুরাণ কে বাদ দিয়ে বেদ অনুসারে চলবে বৈদিক শাস্ত্র কে মেনে চলবে।


যোগীরাজ শিবের যে সমস্ত বাণী পিতামহ ভীষ্ম মৃত্যু শয্যায় বলেছিল তার মধ্য থেকে কিছু বাণী সম্পর্কে আজ জানুন। জানুন শিব জী কি বলেছে মোক্ষ লাভ বিষয়ে, যে কিরূপ ধার্মিক ব্যক্তিরা মোক্ষ লাভের অধিকারী হয়_______

💢যোগীরাজ শিবের বচনামৃত💢


वीतरागा विमुच्यन्ते पुरुषाः कर्मबन्धनैः।
कर्मणा मनसा वाचा ये न हिंसन्ति किंचन।। ७।।

যিনি মন, বাণী এবং ক্রিয়া দ্বারা কোনো প্রকারের হিংসা করেনা আর যাহার আসক্তি সর্বথা দূর হয়ে গেছে, সেই পুরুষ কর্মবন্ধন হতে মুক্ত হয়।।৭৷।


ये न सज्जन्ति कसि्ंमश्चित् ते न बद्ध्यन्ति कर्मभिः। प्राणातिपाताद् विरताः शीलवन्तो दयान्विताः। तुल्यद्वेष्यप्रिया दान्ता मुच्यन्ते कर्मबन्धनैः।।८।।

যিনি কোথাও আসক্ত হন না, যিনি কোনো প্রাণীকে হত্যা করেনা তথা যিনি সুশীল এবং দয়ালু, যাহার কাছে শত্রু ও প্রিয় মিত্র উভয়ই সমান, সেই জিতেন্দ্রীয় পুরুষ কর্ম হতে মুক্ত হয়।।৮।।


सर्वभूतदयावन्तो विश्वास्याः सर्वजन्तुषु।।
त्यक्तहिंसासमाचारास्ते नराः स्वार्गगामिनः।।९।।

যিনি সকল প্রাণীদের ওপর দয়াশীল, সমস্ত জীবকে বিশ্বাসের পাত্র তথা হিংসাময় আচরণকে ত্যাগ করেন, সেই মনুষ্য স্বর্গ লাভ করে।।৯।।


परस्वे निर्ममा नित्यं परदारविवर्जकाः।
धर्मलब्धान्नभोक्तारस्ते नराः स्वर्गगामिनः।।१०।।

যিনি অন্যের ধন আদিতে মমতা রাখেনা, প্রিয় স্ত্রী হতে সদা দূরে থাকে আর যিনি ধর্মানুসারে প্রাপ্ত করা অন্ন কে ভোজন করে, সেই মনুষ্য স্বর্গ লাভ করে।।১০।।
                                                                

(মহাভারত, অনুশাসন পর্ব, দানধর্ম পর্ব, অধ্যায় 144, গীতা প্রেস ভাষ্য)