google01b5732cb2ec8f39 দেখুন মহর্ষি মনু মহারাজ মনুস্মৃতিতে ৪ বর্ণের করা কোনো পাপের শাস্তির কিরূপ বিধান করেছে, মনুস্মৃতি যে যারা শুদ্র বিরোধী বলে তারা যেন অবস্যই দেখে এই লিখা ~ আর্যবীর आर्यवीर aryaveer

Recent News

দেখুন মহর্ষি মনু মহারাজ মনুস্মৃতিতে ৪ বর্ণের করা কোনো পাপের শাস্তির কিরূপ বিধান করেছে, মনুস্মৃতি যে যারা শুদ্র বিরোধী বলে তারা যেন অবস্যই দেখে এই লিখা

দেখুন মহর্ষি মনু মহারাজ মনুস্মৃতিতে ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয়, বৈশ্য এবং শুদ্রের করা কোনো পাপ কর্মের জন্য শাস্তির বিধান করেছে, মনুস্মৃতি যে যারা শুদ্র বিরোধী বলে তারা যেন অবস্যই দেখে এই লিখা




সকলে এইটি অবশ্যই জানে যে ডক্টর আম্বেদকর মনুস্মৃতিকে জ্বালিয়ে দিয়েছিল! যা খুবই দুঃখজনক, অনেকেই বলতে পারে যে আম্বেদকর মোল্লার দালাল ছিল বলেই হিন্দুদের ধর্মগ্রন্থ জ্বালিয়ে দিয়েছিল। এই ভাবনা যদি কেউ ভেবে থাকে তাহলে তার ভাবনা ভুল,   আম্বেদকরের জন্ম শুদ্র বর্ণের ঘরে ছোটো বেলায় তার ওপর অনেক অত্যাচার হয়েছে শুদ্র শুদ্র হওয়ার কারণে আর এই অত্যাচার করেছে পুতুল পূজারী নামধারী ব্রাহ্মণরা। আমি এদের নামধারী ব্রাহ্মণ এজন্যই বললাম যে ব্রাহ্মণ তাকেই বলে যিনি ব্রহ্মজ্ঞানী(বেদজ্ঞ) আর এই প্রকৃত ব্রাহ্মণ কখনোই শুদ্রদের ওপর অত্যাচার করবেনা, যিনি বেদ কে জেনেছে তিনি প্রতিটি জীব কে সমান চোখে দেখেছে। মহর্ষি দয়ানন্দই আধুনিকে এই প্রকার ব্যক্তি যিনি দলিত বা শুদ্রদের বুকে জড়িয়ে নিয়েছিল এবং তাদের আর্য বলে ডেকেছিল। মধ্যকালে শুদ্রদের ওপর যারা অত্যাচার করেছে তারা সবাই এই নামধারী মূর্তি পূজারী ব্রাহ্মণ! আম্বেদকর বড়ো হয়ে মনুস্মৃতিকে পড়েছিল মোটামুটি ভাবে আর মনুস্মৃতির ওপর তার খুবই রাগ ছিল কারণ মনুস্মৃতির মধ্যে বহু শ্লোক আছে যেখানে নারীদের ঘৃণা, শুদ্রদের ঘৃণা করা আদি নানান বিধান আছে । এগুলো দেখেই আম্বেদকর মনুস্মৃতি জ্বালিয়েছিল, এখন অবশ্যই প্রশ্ন    এক প্রশ্ন জাগতে পারে যে মনুস্মৃতি কি পূর্বেও এমন ছিল ? মনুস্মৃতি পূর্বে কখনোই এমন ছিলোনা, মহর্ষি দয়ানন্দ জী সর্বপ্রথম বলেছেন যে মনুস্মৃতি প্রক্ষিপ্ত অর্থাৎ মনুস্মৃতির মধ্যে অনেক শ্লোক ঢোকানো হয়েছে যা পুরোই বেদ বিরোধী, এবং দয়ানন্দ জী এই বেদ বিরোধী শ্লোক গুলোকে বাদ দিতে বলেছে। আমাদের আর্যসমাজের বিদ্বান ডক্টর সুরেন্দ্রকুমার মনুস্মৃতি নিয়ে গবেষণা করার পর তিনি মনুস্মৃতি থেকে বেদানুকূল শ্লোক ১২১৪ টি পেয়েছে এবং বেদ বিরোধী প্রক্ষিপ্ত শ্লোক ১৪৭১ টি পেয়েছে, মনুস্মৃতি মোট শ্লোক ২৬৮৫ টি অর্থাৎ বেশির ভাগ শ্লোকই প্রক্ষিপ্ত। আপনারা কেউ যদি মনুস্মৃতি সম্পূৰ্ণ ভাবে পড়েন কিনা তাহলে স্পষ্ট ভাবে বুঝতে পারবেন যে মনুস্মৃতিতে ১২১৪ শ্লোকের সাথে ১৪৭১ শ্লোক পুরোই স্ববিরোধী, ইহার দ্বারা স্পষ্ট বোঝা যায় যে মনুস্মৃতির মধ্যে এই বেদ বিরোধী শ্লোক গুলো ঢুকানো হয়েছে আর এই শ্লোক গুলোতে আছে মাংস খাওয়া, পশুবলি, শুদ্রদের ঘৃণা করা, নারীদের ঘৃণা করা এবং কিছু অশ্লীলতা আর অপর বেদানুকূল শ্লোক গুলোতে নারীদের এবং পুরুষ কে সম সম্মান, শুদ্রদের কোনো প্রকারের ঘৃণা করে হয়নি, জীব হত্যাকারীকে মহাপাপি বলেছে, গুণ ও কর্ম অনুযায়ী ৪ বর্ণ হয় জন্ম অনুযায়ী নয় আদি নানান বেদানুকূল বিষয়।  স্বার্থবাদী নামধারী ব্রাহ্মণরা নিজেদের ভালোর জন্য এই শ্লোক গুলো ঢুকিয়েছিল। মহর্ষি দয়ানন্দের অনুসারে মহর্ষি মনু মহারাজ ছিল জগতের প্রথম রাজা এবং তিনি মনুস্মৃতি রচনা করেছিলেন মানব জাতির জন্য, এই মনুস্মৃতির আইন রামায়ণের সময়েও, মহাভারতের সময়েও ছিল, কোটি কোটি বছর ধরে এই মনুস্মৃতিই ছিল আমাদের সংবিধান, এখন হিন্দু সমাজ মনুস্মৃতিকে গুরুত্ব না দিলেও আমাদের(আর্য) সংবিধান কিন্তু এই মনুস্মৃতিই। আসুন এইবার আসল বিষয়টি দেখি যে মনু মহারাজ ৪ বর্ণের কোনো পাপের জন্য কিরূপ শাস্তির বিধান করেছে মনুস্মৃতিতে, আসুন দেখি_______



মনুস্মৃতি ৮ অধ্যায়, ৩৩৭-৩৩৮ শ্লোক


এখানে বলা হয়েছে যে- কোনো শুদ্র যদি নিজের কিঞ্চিৎ বিবেক দ্বারা চুরি করে তাহলে তাকে আট গুণ শাস্তি দেওয়া হবে, এই একই চুরি যদি কোনো বৈশ্য করে তাহলে তাকে ষোলো গুণ শাস্তি বেশি দেওয়া হবে, এই একই চুরি যদি কোনো ক্ষত্রিয় করে তাহলে তাকে বত্রিশ গুণ শাস্তি বেশি দেওয়া হবে, আবার এই একই চুরি যদি কোনো ব্রাহ্মণ করে তাহলে তাকে চৌষট্টি গুণ অথবা একশ গুণ অথবা একশ আঠাশ গুণ শাস্তি বেশি দেওয়া হবে। অর্থাৎ এর তাৎপর্য এই যে শুদ্ররা (যারা শাস্ত্রীয় কোনো জ্ঞান রাখেনা, এবং সকল বর্ণের সেবা করে) মূর্খ হয় কাজেই তাদের জ্ঞান কম হয় সে ভুল কাজ করে ফেলে অজ্ঞানতায় যার তাই শুদ্র যদি চুরি করে তাহলে তাকে শাস্তি ৪ গুণ দেওয়া হবে। শুদ্রদের থেকে একটু বেশি জ্ঞানী হয় বৈশ্য (যারা ব্যাবসা-বাণিজ্য, কৃষিকাজ আদি করে) তাই বৈশ্য কে ৮ গুণ বেশি শাস্তি দেওয়া হবে, আর বৈশ্যের চেয়ে ক্ষত্রিয় বেশি জ্ঞানী হয়, কারণ ক্ষত্রিয়ের কাজ হলো দেশ কে শাসন করা, দেশ কে রক্ষা করে তো এই ক্ষত্রিয়ই যদি চুরি করে তাহলে তো দেশের পতন ঘটবে কাজেই ক্ষত্রিয় কে ৩২ গুণ শাস্তি দেওয়া হবে। আর ব্রাহ্মণ হলো সর্বশ্রেষ্ঠ জ্ঞানী যিনি বেদজ্ঞ হয়, তো যিনি সকল বৰ্ণকে শিক্ষা দেয় যিনি ধর্মকে সম্পূর্ণ রূপে জানে সেই ব্রাহ্মণই যদি চুরি করে তাহলে ৬৪ গুণ বা ১০০ গুণ বা ১২৮ গুণ শাস্তি দেওয়া হবে।

যে মনুস্মৃতিতে এমন বিধান আছে সেই মনুস্মৃতিকে আজ ভারতের বহু সম্প্রদায় শুদ্র বা দলিত বিরোধী বলেই চেনে! যারা মনু বিরোধী তাদের চোখে এই সমস্ত শ্লোক গুলো  পড়েনা, কারণ তাদের কাজই হলো অপপ্রচার করা। আজ যদি এই মনুস্মৃতিই আমাদের সংবিধান হতো তাহলে এতো জাতিভেদ হিন্দু সমাজে কখনোই থাকতো না। 




নমস্তে

0 Reviews:

Post a Comment