অবতারবাদ
আমরা সকলে জানি যে +১৮ পুরাণ কাহিনী বৈদিক মনে হলেও বাস্তবে অবৈদিক গ্রন্থ, এই সকল গ্রন্থে সনাতন ধর্মের নানান মহাপুরুষদের অপমান ও কুলষিত করা হয়েছে। এই সমস্ত পুরাণ গুলো এক পুরাণ আর এক পুরাণের বিরোধী, তা আসুন আজ আলোচনা করি অবতার সম্পর্কে। আমাদের বৈদিক শাস্ত্রে অবতারবাদের কোনো স্থান নেই, এই অবতারবাদ একটি নবীন মত, যা কথিত ১৮+ কথিত পুরাণ কাহিনী থেকে এসেছে। শুধুমাত্র যজুর্বেদের ৪০ অধ্যায়ের ৮ নং মন্ত্রটিই অবতারবাদ, সাকারবাদ আদি মতকে খণ্ডন করে দেয়__
সঃ পর্য়গাত শুক্রম্ অকায়ম্ অব্রণম্ অস্নাবিরম্ শুদ্ধম্ অপাপবিদ্ধম্ কবিঃ মনীষী পরিভূঃ স্বয়ম্ভূঃ য়াথাতথ্যতঃ অর্থান্ ব্যদধাত্ শাশ্বতীভ্যঃ সমাভ্যঃ।
ব্রহ্ম সর্বশক্তিমান্, স্থূল-সূক্ষ্ম এবং কারণ হতে রহিত, ছিদ্র রহিত, নাড়ি আদি বন্ধন হতে রহিত, অবিদ্যা আদি দোষ রহিত হওয়াতে শুদ্ধ, পাপরহিত, সর্বব্যাপক, সর্বজ্ঞ, মনীষী, দুষ্ট দমনকারী, অনাদি স্বরূপ যুক্ত, সনাতন।
যজুর্বেদ ৪০/৮
ঈশ্বর নিরাকার সে কখনোই নাড়ি আদি বন্ধনে আসেনা, আসুন ঈশ্বরের গুণ বিষয়ে আরও কিছু শাস্ত্রীয় প্রমাণ দেখি__
অপাণিপাদো জবনো গ্রহীতা পশ্যত্যচক্ষুঃ স শৃণোত্যকর্ণঃ।
স বেত্তি বিশ্বং ন চ তস্যাস্তি বেত্তা তমাহুরগ্রথং পুরুষং মহান্তম্।।
পরমেশ্বরের হাত নেই, পরন্তু তিনি নিজ শক্তিরূপ হস্ত দ্বারা সমস্ত কিছুর রচনা ও গ্রহণ করেন। তার পা নেই পরন্তু তিনি সর্বব্যাপক বলে সর্বাধিক বেগবান। তার চক্ষু নেই পরন্তু তিনি সমস্ত কিছু দর্শন করেন। শ্রোত্র নেই পরন্তু তিনি সকল কথন শ্রবণ করেন। তার অন্তঃকরণ নেই, পরন্তু তিনি সমস্ত জগৎ কে জানেন। তাকে সম্পূর্ণ রূপে জানতে পারে এমন কেউ নাই। সেই পরমেশ্বর কে পুরুষ বলা হয়ে থাকে।।
শ্বেতাশ্বতর উপনিষদ ৩/১৯
যাকে চক্ষু দ্বারা দেখা যায়না, কিন্তু যার দ্বারা চক্ষু দেখতে পায়, তাকেই ব্রহ্ম বলে জানো, তারই উপাসনা কর। আর যা ব্রহ্ম হতে ভিন্ন সূর্য-অগ্নি আদি জড় পদার্থ আছে, তাদের উপাসনা করো না।
কেন উপনিষদ ১/৬
যে ব্রহ্ম দীপ্তমান যে সূক্ষ্ম হতে অতি সূক্ষ্ম, যার মধ্যে সমস্ত জগৎ এবং তার মধ্যে নিবাসকারী সমস্ত প্রাণী স্থিত রয়েছে তিনি হলেন অক্ষর (ক্ষয় রহিত) ব্রহ্ম।
মুণ্ডক উপনিষদ ২/২/২
নানান শাস্ত্রীয় প্রমাণ অনুযায়ী বলা যায় যে ঈশ্বর বা পরমাত্মা কোনো দেহধারী পদার্থ নয় অথবা কোনো দেহধারী জীব জন্তু পরমাত্মা নয়, তাই ঈশ্বরের দেহধারণে বিশ্বাসী হওয়া আর বন্ধ্যার সন্তান দর্শন করা একই ব্যাপার। কিছু সনাতনী বন্ধুরা এমন রয়েছে যারা বেদ, উপনিষদ আদি শাস্ত্রের বিকৃত ব্যাখ্যা থেকে ঈশ্বরের ধারণের প্রমাণ দেখাতে প্রস্তুত থাকে, কারণ যত পৌরাণিক টীকাকার রয়েছে তারা ঈশ্বরের সাকার রূপের বর্ণনা করেছে নানান শাস্ত্রগ্রন্থে কিন্তু তাদেরকে যদি সাকার ঈশ্বর বিষয়ে তার্কিক প্রশ্ন করা হয় তখন তারা উত্তর দিতে পারে না, কারণ তাদের মান্যতা যে মিথ্যা। মুসলিমরা কুরআন থেকে দেখাবে আল্লাহ স্রষ্টা এদিকে পৌরানিকরা দেখাবে পুরাণ থেকে যে শিব ঈশ্বর, কৃষ্ণ ঈশ্বর আবার খ্রিস্টানরা বাইবেল থেকে দেখাবে গডই স্রষ্টা। এইবার কোনটা সত্য বলে মানবেন ? যে কোনো শাস্ত্র বা কুরআন হোক বা বাইবেল হোক বা পুরাণ কাহিনীই হোক না কেন, আপনি আপনার প্রামাণ্য গ্রন্থ থেকে যে দাবিটি করবেন তার মধ্যে যদি কোনো সত্যতা, যুক্তি, ভিত্তি না থাকে তাহলে সেটা কোনো বুদ্ধিমান মনুষ্যের কাছে গ্রহণ যোগ্য নয়, কিন্তু মূর্খের কাছে গ্রহণ যোগ্য হতে পারে। হাজারো বছর পর ঋষি দয়ানন্দ সরস্বতীই এমন ব্যক্তি যিনি তার্কিক ভাবে বেদানুকূল শাস্ত্র কে সমাজে তুলে ধরেছেন এবং সকল পক্ষপাতি, মূর্খতা পূর্ণ মতবাদ গুলোর খণ্ডন করেছেন। এইবার মূল কথায় আসি যে, আমরা যদি কোনো বৈদিক শাস্ত্রের কোনো প্রমাণ ছাড়াই শুধুমাত্র তর্কের মাধ্যমে অবতার বাদ সম্পর্কে আলোচনা তবুও অবতারবাদ মিথ্যা হয়ে যায়, আসুন দেখি___
আমরা জানি যে পৌরানিকদের ভগবান বিষ্ণুর ১০ অবতার রয়েছে। কিন্তু দুঃখের বিষয় পৌরণিকদের শ্রেষ্ঠ ধর্মগ্রন্থ ভাগবত পুরাণ অনুযায়ী অবতারের সংখ্যা ২২টি আবার ২৫ টিও বলা যায় কারণ ভাগবত পুরাণ ১/৩/৬ অনুযায়ী সনক, সনন্দন,সনাতন ও সনৎকুমার এই চারজনকে প্রথম অবতার হিসেবে ধরা হয়েছে, আর থাকলো ২১ টি অবতার অর্থাৎ ৪+২১= ২৫। এই ভাগবত পুরাণের লীলা দেখুন আর মন খুলে সকলে হাসুন। এবার বাদবাকি ২১ টি অবতারের নাম গুলো দেখে নেওয়া যাক- ২) বরাহ, ৩) দেবর্ষি নারদ, ৪) নরনারায়ণ, ৫) কপিল, ৬) অত্রিমুনির পুত্র দত্তাত্রেয়, ৭) রুচি নামক প্রজাপতির পত্নী আকূতির সন্তান যজ্ঞ, ৮) ঋষভদেব, ৯) পৃথুরাজা, ১০) মৎস, ১১) কূর্ম, ১২) ধন্বন্তরি, ১৩) মোহিনী, ১৪) নৃসিংহ, ১৫) বামন, ১৬) পরশুরাম, ১৭) সত্যবতীর সন্তান ব্যাস, ১৮) রাম, ১৯) শ্রীকৃষ্ণ, ২০) বলরাম, ২১) বুদ্ধ, ২২) কল্কি। ভাগবত পুরাণ প্রথম স্কন্ধ/ তৃতীয় অধ্যায়/ ৬-২৫ শ্লোক পর্যন্ত এই বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে।
এই অধ্যায়ের ২৮ শ্লোক অনুযায়ী অসুরদের অত্যাচারে মনুষ্যরা যখন পীড়িত হয় তখন ভগবান যুগে যুগে নানান রূপ ধারণ করে তাদের রক্ষা করেন অর্থাৎ যখন যখন অধর্মের বৃদ্ধি পেয়েছে তখন তখন অবতার এসেছে। শুয়োর, মাছ, কচ্ছপ, নরসিংহ আদি এই সকল অবতারের নাম শুনে যেকোনো অন্ধবিশ্বাস রহিত সাধারণ বুদ্ধির ব্যক্তিরা বলতে সক্ষম হবে যে এই ভাগবত পুরাণ কোনো ঋষির লেখা গ্রন্থ হতেই পারেনা বরং কোনো বোকা ব্যক্তির লেখা। এখানে আর একটি মজার বিষয় দেখুন, শ্রীরাম কে ১৮ তম অবতার বলা হয়েছে কিন্তু ব্যাসদেব কে ১৭তম অবতার বলা হয়েছে অর্থাৎ শ্রীরামের আগে জন্ম হয়েছিল সত্যবতীর সন্তান ব্যাসদেব!
ভাগবত পুরাণ ১/৩/২১-২২
ভাগবতের লেখক কি খেয়ে ভাগবত লিখেছে তা বলা মুশকিল। পৌরাণিক বৈষ্ণবরা চৈতন্য কে শ্রীকৃষ্ণের অবতার বিশ্বাস করে, কিন্তু দুঃখের বিষয় ভাগবত পুরাণে চৈতন্য অবতারের কোনো স্থান পায়নি। এই পুরাণ অনুযায়ী কলিতে দুইটি অবতার বুদ্ধ ও কল্কি।
ভাগবত পুরাণ ১/৩/২৫
গীতার ৪/৭,৮ শ্লোকের ব্যাখ্যায় প্রায় সকল পৌরাণিক বলে থাকে যে, যখন যখন অধর্ম আসে এবং ধর্মের গ্লানি হয় তখন ভগবান অবতার হয়ে অধার্মিকদের ধ্বংস করে এবং ধর্মের স্থাপনা করে। যে সকল সনাতনী বন্ধুরা অবতারে খুবই বিশ্বাসী তারা নিজেই নিজেকে প্রশ্ন করুন যে, মহাভারতে যুদ্ধের সময় তিন তিনটি অবতার ছিল- ব্যাসদেব, শ্রীকৃষ্ণ এবং বলরাম কিন্তু আমাদের ভারতে যখন মুসলিম এবং খ্রিষ্টানরা প্রায় হাজার বছর ধরে অত্যাচার চালিয়েছিল তখন ধর্মের গ্লানি হওয়া সত্ত্বেও একটি মাত্র অবতার এসে অধর্ম কে ধ্বংস করে ধর্মের স্থাপনা করেনি কেন ? যখন সোমনাথ ও বিশ্বনাথ মন্দির ভেঙ্গে ফেলা হয়েছিল তখন কি ধর্মের গ্লানি হয়নি ? দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ইচ্ছাকৃত ভাবে দুর্ভিক্ষ বানিয়ে যখন ২০ লক্ষেরও বেশি মানুষ কে হত্যা করা হয়েছিল [পঞ্চাশে মন্বন্তর] তখনও কি ধর্মের গ্লানি হয়নি ? মহাভারতে সময় যে পরিমাণে ধর্মের গ্লানি হয়েছিল তার চেয়ে অনেক বেশি ধর্মের গ্লানি হয়েছিল তখন যখন ভারতে মুসলিম ও খ্রিস্টানরা শাসন চলছিল, কিন্তু একটি মাত্র অবতারের দেখা নাই! এইসব প্রশ্নের উত্তর দিতে না পেরে অনেকেই বলতে পারেন যে ভগবান একটা নির্দিষ্ট সময়ে অবতার নেয় যেমন কলির শেষে কল্কি আসবে। যারা এমন মনস্কের তাদের কাছে আমার প্রশ্ন এই যে, আপনাদের ভাগবত পুরাণে এবং আপনারাও গীতার ৪/৭,৮ শ্লোকে ব্যাখ্যায় বলেন যখন অধর্ম আসবে তখনই ভগবান অবতার রূপে আসেন। কিন্তু এখন নির্দিষ্ট সময় অনুসারে অবতার নেওয়ার কথা বলেন কোন তর্কের ভিত্তিতে বলেন ? সত্য ত্রেতা দ্বাপরে যে পরিমাণে অধার্মিক ছিল তার চেয়ে অনেক বেশি অধার্মিক এই কলিতে রয়েছে কিন্তু কলিতে মাত্র দুইটি অবতার আর সত্য ত্রেতা দ্বাপরে ২০ টি অবতার। কলির শুরুতে বুদ্ধ আর কলির শেষে কল্কি কিন্তু কলির মাঝে যে যে সময়ে অধর্ম হবে তার দায়িত্ব কি ঈশ্বরের নয় ? নাকি তার দায়িত্ব মুসলিমদের আল্লাহর আর খ্রিস্টানদের গডের ? যে ঈশ্বর সকল জীব কে সমান ভাবে দেখেন সেই ঈশ্বর কে পক্ষপাতী বানিয়ে দিচ্ছে অবতারবাদী সনাতনীগণ! কারণ তাদের কাছে অবতারবাদ কে সত্য প্রমাণ করার জন্য যথার্থ যুক্তি তর্ক নেই। বর্তমান সময়ে সারা বিশ্বে জনসংখ্যা প্রায় ৬০০ কোটির বেশি, সনাতনী পৌরণিকদের সংখ্যা ধরে নিলাম ১৩০ কোটি, যদি সকল সনাতনীদের ধার্মিক হিসেবে ধরেও নেওয়া হয় তবুও ৪৭০ কোটির বেশি মানুষ অধার্মিক অর্থাৎ এখনও প্রচুর পরিমাণে ধর্মের গ্লানি হচ্ছে এবং অধর্মের বৃদ্ধি পাচ্ছে কিন্তু একটিমাত্র অবতারের দেখা নাই অর্থাৎ অবতার পক্ষপাতী! আর যারা চৈতন্য কে অবতার মনে করেন তাদের কাছে আমার প্রশ্ন চৈতন্য কোন অধর্ম কে ধ্বংস করে ধর্মের স্থাপনা করেছে ? চৈতন্যের সময়ে ভারতে মুসলিমদের শাসন চলছিল সেই সময় ধর্মের গ্লানি হওয়া সত্ত্বেও ভারত থেকে সকল মুসলিমদের ধ্বংস করে সনাতন ধর্ম কে পুরো ভারতে প্রতিষ্ঠা করতে পারেনি কেন চৈতন্য ? আমরা যদি বিনা বিচারে বিনা তর্কে যে কোনো সংস্কৃত গ্রন্থ কে ধর্ম গ্রন্থ হিসেবে মেনে চলি তাহলে আমরা জ্ঞানী হবো না বরং দিনের পর দিন মূর্খ হবো।
ঋষি দয়ানন্দ গীতা ৪/৭ শ্লোকের খুবই ভালো ব্যাখ্যা দিয়েছেন -শ্রীকৃষ্ণ ধর্মাত্মা ছিলেন এবং তিনি ধর্মের রক্ষা করতে ইচ্ছা করেছিলেন। “আমি যুগে যুগে জন্মগ্রহণ করিয়া শ্রেষ্ঠদের রক্ষা এবং দুষ্টদেরকে বিনাশ করে থাকি”। এইরূপ হলে কোন দোষ নাই। কারণ ‘পরোপকারায় সতাং বিভূতয়ঃ’, সৎপুরুষদের দেহ মন-ধন পরোপকারের জন্য' [সত্যার্থ প্রকাশ, সপ্তম সমুল্লাস]। একজন ধর্মাত্মার এমন ইচ্ছা থাকতেই পারে যে তিনি অধর্ম কে ধ্বংস করার জন্য আসবেন, কিন্তু এই শ্লোকের অর্থ যদি ধরে নেওয়া হয় শ্রীকৃষ্ণ ঈশ্বর আর তিনি অধর্মের সময় বারবার নিশ্চিত আসবে তাহলে এই শ্লোকটি ভুল হয়ে যাবে।
নানান শাস্ত্রীয় প্ৰমাণ ও তার্কিক আলোচনার পর এই সিদ্ধান্তে আসা যায় যে অবতার বাদ সম্পূর্ণ একটি মিথ্যা কাল্পনিক বিশ্বাস মাত্র, এই বিশ্বাসে আমাদের সনাতনীদের অনেক ক্ষতি হয়েছে। ঋষি মনু বলেছেন-
ধর্ম এব হতো হন্তি ধর্মো রক্ষতি রক্ষিতঃ।
তস্মাদ্ধর্মো ন হন্তব্যো মা নো ধর্মো হতঃ অবধীত্।।
যে ব্যক্তি ধর্ম কে নাশ করে, ধর্ম তাকেই বিনাশ করে। যে ধর্মকে রক্ষা করে, ধর্মও তাহাকে রক্ষা করে, এই জন্য ধর্ম ত্যাগ করা উচিত নয়।
মনুস্মৃতি ৮/১৫
পরাধীন ভারতে সর্বপ্রথম স্বরাজের আওয়াজ তুলেছিল মহর্ষি দয়ানন্দ সরস্বতী, আর এই মহর্ষি দয়ানন্দজীর রাস্তা ধরেই স্বামী শ্রদ্ধানন্দ, লালা লাজপত, বালগঙ্গাধর, রামপ্রসাদ বিসমিল, চন্দ্রশেখর আজাদ, ভগত সিং, শ্যামজী কৃষ্ণ বর্মা, পন্ডিত লেখরাম, লালা হরদয়াল, সাভারকার আদি নানান বীর তৈরি হয়েছিল যারা ভারত কে স্বাধীন করার জন্য নিজেদের বলিদান করেছেন। সুভাষচন্দ্র আদি এই সকল মহাবীরগণ যদি ভারত কে স্বাধীন করার চেষ্টা না করে ভগবানের অবতারের আশায় পড়ে থাকতেন তাহলে আজও এই ভারত স্বাধীন হতো না।
এই ভারত বা আর্যাবর্ত একসময় বিশ্বগুরু ছিল, কিন্তু আজ তার কি পরিণতি হয়েছে তা আমরা সকলে দেখতে পাচ্ছি। এই সেই ভারত যে ভারতে শ্রীরামের মত পুরুষ উত্তমের জন্ম হয়েছে, এই সেই ভারত যেখানে শ্রীকৃষ্ণের মত মহান ধর্মজ্ঞ, মহাবলবান, মহাযোগীর জন্ম হয়েছে, সেই শ্রীকৃষ্ণ শ্রীরাম কে আদর্শ মনে করার সনাতনীরা আজ ধর্মের নামে যতটা মিথ্যাকথা বলে ততটা কোনো দেশের লোকেরা বলেনা, ধর্মের নামে ভণ্ডামি সবচেয়ে বেশি চলে এই ভারতে, আমার কথাটি অনেকের অপ্রিয় লাগবে কিন্তু একটা বাস্তবিক। যারা নিজেদের সনাতনী মনে করে তারা বেদ, ব্রাহ্মণ, উপনিষদ আদি বেদানুকূল শাস্ত্র কে মেনে চলার চেয়ে লোকের শোনা কথায় বেশি বিশ্বাসী, আর এদেরকে ঠকিয়ে ধর্মের নামে ব্যবসা করার জন্য অবতার আর দূতের শেষ নেই। হরিচাঁদ, গুরুচাঁদ, অনুকূল, রামকৃষ্ণ, রামপাল, কবির, আশারাম, রামরহিম আদি বহু অবতার ও দূত তৈরি হয়েছে। এমন চলতে থাকলে সনাতন ধর্মে কতটা বিভেদ বাড়তে পারে সেই বিষয়ে একটু বিচার করলেই বুঝতে পারবেন।
নমস্তে