google01b5732cb2ec8f39 December 2022 ~ আর্যবীর आर्यवीर aryaveer

Recent News

This is default featured slide 1 title

Go to Blogger edit html and find these sentences.Now replace these sentences with your own descriptions.This theme is Bloggerized by Lasantha Bandara - Premiumbloggertemplates.com.

This is default featured slide 2 title

Go to Blogger edit html and find these sentences.Now replace these sentences with your own descriptions.This theme is Bloggerized by Lasantha Bandara - Premiumbloggertemplates.com.

This is default featured slide 3 title

Go to Blogger edit html and find these sentences.Now replace these sentences with your own descriptions.This theme is Bloggerized by Lasantha Bandara - Premiumbloggertemplates.com.

This is default featured slide 4 title

Go to Blogger edit html and find these sentences.Now replace these sentences with your own descriptions.This theme is Bloggerized by Lasantha Bandara - Premiumbloggertemplates.com.

This is default featured slide 5 title

Go to Blogger edit html and find these sentences.Now replace these sentences with your own descriptions.This theme is Bloggerized by Lasantha Bandara - Premiumbloggertemplates.com.

গৌতম অহল্যা ও ইন্দ্রের বাস্তবিক ব্যাখ্যা

গৌতম-অহল্যা ও ইন্দ্রের বাস্তবিক ব্যাখ্যা ব্রাহ্মণ শাস্ত্র অনুসারে





 রামায়ণে এবং পৌরাণিকদের কথিত পুরাণে গৌতম ঋষির স্ত্রী অহল্যা ও দেবরাজ ইন্দ্রের বিষয়ে একটা ব্যভিচারের কাহিনী রয়েছে, যা আমরা অনেকেই জানি, আসুন দেখি রামায়ণ থেকে এই কাহিনি__


বাল্মীকি রামায়ণ, বালকাণ্ড, ৪৮ সর্গে এই কাহিনী রয়েছে, আমি সংক্ষেপে বলছি- একদিন গৌতম ঋষি আশ্রম থেকে দূরে কোথাও গিয়েছিলেন, আশ্রমে গৌতম ঋষির পত্নি অহল্যা একা ছিলেন, সেই সুযোগে দেবরাজ ইন্দ্র গৌতম ঋষির রূপ ধারণ করে আশ্রমে প্রবেশ করেন এবং তিনি অহল্যার সাথে সহবাস করতে চান। ইন্দ্র যে গৌতমের রূপ ধরেছেন সেটা অহল্যা বুঝতে পারা সত্ত্বেও প্রসন্ন পূর্বক ইন্দ্রের সাথে মৈথুন করেন। তখন অহল্যা বলেন হে ইন্দ্র আমার মনোরথ পূরণ হয়ে গেছে এখন আপনি চলে যান। গৌতম ঋষি যখন নিজের আশ্রমে প্রবেশ করেন তখন দেবরাজ ইন্দ্রকে সেখান থেকে বেরিয়ে যাওয়া দেখতে পান। তারপর গৌতম ঋষি এই অপকর্মের বিষয়ে জানতে পেরে খুবই ক্রোধিত ভাবে ইন্দ্র কে অভিশাপ দেন যে তার অণ্ডকোষ যেন খসে পড়ে যায়, অতঃপর ইন্দ্রের অণ্ডকোষ মাটিতে পড়ে গেল এবং অহল্যা কে অভিশাপ দিলেন যে তিনি যেন ওই কুটিরে অদৃশ্য হয়ে থাকেন হাজারও বছর। 

একটু ভেবে দেখুন তো এই সমস্ত কাহিনীর কি কোনো সত্যতা থাকা সম্ভব ? এই সমস্ত কাহিনী বানিয়ে আমাদের সনাতনীরা কি নিজেদের ঋষি, দেবতাদের চরিত্র কে কুলষিত করেছে নাকি উজ্জ্বল করেছে ? প্রায় হিন্দুরা এই সমস্ত কাহিনী দেখে বলে থাকে যে 'এগুলো মোল্লারা বিকৃত করেছে, এগুলো সব মিথ্যা' হা এই সমস্ত কাহিনী অবশ্যই মিথ্যা, কিন্তু এগুলো মোল্লারা বানিয়েছে এর কোনো প্রমাণ আছে ? কিছুক্ষণের জন্য মানলাম যে এগুলো মোল্লারা বানিয়েছে আর আপনারা তার প্রমাণ পেয়েছেন, তা আজ পর্যন্ত রামায়ণ থেকে এই ইন্দ্র অহল্যার অপকর্মের কাহিনীটি বাদ দেওয়া হলো না কেন ? মুখে অনেকেই বলবে এগুলো বিকৃত, কিন্তু ঠিক কোনটা সেটাও বলার কেউ নেই আর আজ পর্যন্ত এই সমস্ত কাহিনী যা ঋষি, মুনি, দেবতাদের কলঙ্কিত করা হয়েছে এমন কাহিনী রেখেই দেওয়া হয়েছে ঋষিকৃত গ্রন্থে, কারণ কি ?


ঋষি দয়ানন্দ সরস্বতী বৈদিক শাস্ত্রের তথ্য সহকারে এই কাহিনীর প্ৰকৃত ব্যক্তিটি দিয়েছেন। কথিত পন্ডিতরা ব্রাহ্মণ শাস্ত্র কে ঠিক ভাবে বুঝতে না পেরে মূর্খতা বশত এই সমস্ত কাহিনী বানিয়েছে। এইবার আসুন দেখি ইন্দ্র, অহল্যা ও গৌতম আসলে কি______


তত্ৰেদৃশ্যো মিথ্যৈব  কথাঃ সন্তি। কুতঃ ? আসামপ্যলঙ্কারার্থতাৎ। তদ্যথা - ইন্দ্রাগচ্ছেতি। গৌরাবস্কন্দিন্নহল্যায়ৈ জারেতি। তদ্যান্যেবাস্য চরণানি তৈরেবৈনমেতৎপ্রমুমোদয়িষতি ।। শতপথ ব্রাহ্মণ ৩/৩/৪/১৮


রেতঃ সোমঃ।। শতপথ ব্রাহ্মণ ৩/৩/২/১ 


সূর্য্যরশ্মিশ্চন্দ্রমা গন্ধর্ব।। যজুর্বেদ ১৮ /৪০


 ইত্যপি নিগমো ভবতি। সোহপি গৌরুচ্যতে।। নিরুক্ত ২/৬


 জার আ ভগম্ জারঃ ইব ভগম্। আদিত্যোহ ত্রজার উচ্যতে, রাত্রের্জরয়িতা।। নিরক্ত ৩/১৬


এষ এবেন্দ্রো য় এষ তপতি। শতপথ ব্রাহ্মণ  ১/৬/৪/১৮



 এখানে ইন্দ্রোগচ্ছতি ইত্যাদির তাৎপর্য্য এই যে, ইন্দ্ৰ শব্দে সূৰ্য্য বুঝায়, এবং রাত্রিকে অহল্যা বলা হয়েছে, তথা চন্দ্রমা গৌতম সাদৃশ্য হয়ে থাকেন। এস্থানে রূপকালঙ্কার মতে রাত্রিকে চন্দ্রমার স্ত্রীরূপে বর্ণন করা হয়েছে। চন্দ্রমা আপনার স্ত্রীর সহিত রাত্রিকালে সকল প্রাণীর আনন্দদায়ক হয়ে থাকে। এই রাত্রিকালের জার আদিত্য অর্থাৎ সূৰ্য্য হয়ে থাকে, কারণ সূর্যের উদয় হলেই, রাত্রি অন্তর্ধান হয়ে যায় অর্থাৎ চন্দ্রমাকে ছেড়ে দেয়, বিশেষতঃ সূর্য্যকে রাত্রীর জার এইজন্য বলা যায় যে, সূর্য্যের আগমনেই চন্দ্রমাকে ছেড়ে দেয়, সূর্যকে রাত্রীর জার এইজন্য বলা যায় যে, সূর্য্যের আগমনেই চন্দ্রমার সহিত রাত্রির শৃঙ্গার ভঙ্গ বা নষ্ট করে দেয়, এইজন্য রাত্রি চন্দ্র ও সূর্য্য, স্ত্রীপুরুষ ও জারকর্তা রূপে রূপকালঙ্কার দ্বারা বর্ণিত হয়েছে। যেরূপ স্ত্রীপুরুষ একত্রে থাকে, সেইরূপ রাত্রি ও চন্দ্রমা একত্রিত হয়ে থাকে। চন্দ্রমাকে গৌতম এইজন্য বলা যায় যে উক্ত চন্দ্রমা অত্যন্ত বেগশালী এবং রাত্রিকে অহল্যা এই কারণে বলা যায় যে ঐ রাত্রিতে দিবস লয় হয়ে যায়, পুনরায় সূর্য্যই রাত্রির নিবৃত্তকারী, এজন্য সূর্য্যকে রাত্রির জার বলা যায়। এইরূপ চমৎকার রূপকালঙ্কারকে অল্পবুদ্ধি ও বিদ্যাহীন পুরুষেরা নষ্ট ও শ্রীভ্রষ্ট করে তার অনর্থ প্রকাশ করে। এজন্য সজ্জনমাত্রেই পুরাণোক্ত মিথ্যা ও অনর্থযুক্ত বাক্য গুলিকে মূলের সহিত যেন ত্যাগ করেন।


এই হলো বৈদিক শাস্ত্রে থাকা ইন্দ্র অহল্যার গৌতমের প্রকৃত ব্যাখ্যা। আশাকরি সকলে বুঝতে পেরেছেন। 


নমস্তে



আমরা যা ভোগ করি তা সবই কি আমাদের কর্মফল ?

আমরা যা ভোগ করি তা সবই কি আমাদের কর্মফল ? 



আমাদের সনাতনীদের মধ্যে অনেকেই কর্মফল বিষয়ে বিভ্রান্ত রয়েছেন। তারা জানেই না যে স্বীয় কর্মফল কোনটা এবং কোনটা কর্মফল নয়, তাই আজকের যৌক্তিক আলোচনাটি হলো কর্ম ফল ব্যবস্থা বিষয়ক কিছু জিজ্ঞাসার সমাধান।

আমাদের বৈদিক শাস্ত্র অনুযায়ী যে জীবাত্মা ভৌতিক শরীরের মাধ্যমে এই জগতে ভোগ করে  থাকে তার জন্ম মৃত্যু নেই। জীবাত্মা অজ অর্থাৎ জন্মমৃত্যুরহিত, কিন্তু এই জীবাত্মা হচ্ছে ভোক্তা [শ্বেতাশ্বতর উপনিষদ্ ৪/৫]। ভগবান শ্রীকৃষ্ণও পুরুষকে অনাদি অর্থাৎ যার কোনো আদি নেই মানে যার কখনো সৃষ্টি ধ্বংস নেই এবং পুরুষ বা জীবাত্মা সুখ দুঃখ ভোগ করে এই জগতে। [গীতা ১৩/ ২০,২১] ভগবান শ্রীকৃষ্ণ বলেছেন মনুষ্য যেমন পুরোনো বস্ত্র পরিত্যাগ করে নতুন বস্ত্র ধারণ করে জীবাত্মা ঠিক তেমনি একট জীর্ণ দেহ ত্যাগ করে নতুন দেহ ধারণ করে [গীতা ২/২২]। অর্থাৎ জীবাত্মার জন্ম মৃত্যু নেই কিন্তু জীবাত্মা কর্ম ফল অনুসারে নানান জন্ম প্রাপ্ত হয়। আর এই চক্র অনাদি কাল থেকে চলছেই। এর শুরু বা শেষ নেই। অনাদি কাল থেকেই এমন জগৎ সৃষ্টি- স্থিতি- প্রলয়-চলছেই। অনন্ত বার এমন জগৎ সৃষ্টি হয়েছে স্থিতি হয়েছে এবং প্রলয় হয়েছে। কাজেই তো আমরা ধর্ম কে সনাতন, নিত্য শাশ্বত বলে থাকি। মনুষ্য থেকে শুরু করে সকল পশু -পাখি, জলজ প্রাণী, কীটানু আদি এবং উদ্ভিদ আদি পদার্থের মধ্যেও জীবাত্মা রয়েছে। জীবাত্মা একমাত্র মনুষ্য জন্মে কর্মের মাধ্যমে পূণ্য - পাপ উভয় লাভ করতে পারে, মনুষ্য ইতর কোনো জীবের পাপ পূণ্য হয়না, তারা শুধু পাপ কর্মের ফল ভোগ করে নিচু যোনি ভ্রমণ করে থাকে। জীবাত্মা মনুষ্য জন্মে যখন নানান পাপকর্ম করে তখন পশু পাখি আদি নানান নিম্নমানের জন্ম প্রাপ্ত হয়। যথার্থ ভাবে পাপ কর্মের ফল ভোগ করা হয়ে গেলে ঈশ্বরের নিয়ম অনুসারে জীবাত্মা পুনরায় মনুষ্য জন্ম প্রাপ্ত হয়।

য়দাচরতি কল্যাণি শুভম্ বা য়দি বাঽশুভম্
তদেব লভতে ভদ্রে কর্তা কর্মজমাত্মনঃ।।

মনুষ্য যেমন ভালো অথবা খারাপ কর্ম করে ঠিক তেমনই ফল ভোগ করে। কর্তা কে নিজের কৃতকর্মের ফল অবশ্যই ভোগ করতে হয়।

[বাল্মীকি রামায়ণ, অরণ্যকাণ্ড/ ৬৩/৬]

মনুস্মৃতির ১২ অধ্যায়ে কর্ম অনুযায়ী আত্মা কিরূপ জীবদেহ লাভ করে এই বিষয়ে ঋষি মনু সুন্দর ভাবে আলোচনা করেছেন। ঋষি দয়ানন্দও সত্যার্থ প্রকাশের নবম সমুল্লাসে মনুস্মৃতির এই সকল শ্লোক অনুসারে সন্দুর বিশ্লেষণ করেছেন।

সারা বিশ্বের মধ্যে যে সকল ব্যক্তিরা নিজেকে আস্তিক বলে দাবি করেন অথবা মনে করেন স্রষ্টা বলে কেউ আছেন তারা সকলে এই বিষয়ে একমত যে স্রষ্টা ন্যায়কারী, তিনি কখনোই অন্যায় করেন না। এবং আমরা যদি তর্কের দৃষ্টিতে দেখি তাহলেও দেখা যাবে যে সত্তা অন্যায়কারী সে কখনোই জীব জগতের স্রষ্টা হওয়া সম্ভব নয়। অতএব যিনি জীবের সুখ দাতা স্রষ্টা বা পরমাত্মা তিনি অবশ্যই ন্যায়কারী। আমরা সনাতনীরাও বিশ্বাস করি যে ঈশ্বর কারোর প্রতি অন্যায় করেন না, তিনি পক্ষপাতীত্ব রহিত হওয়াতে নিরপেক্ষ ভাবে সকলকে কর্ম অনুযায়ী ফল প্রদান করেন।

যে যেমন কর্ম করবে তাকে তেমন ফল ভোগ করতে হয়, এই কথা আমরা প্রায়ই বলে থাকি কিন্তু এই কর্মফল ভোগ বিষয়ে প্রায়ই লোকের মধ্যে নানান ধরণের শঙ্কা উৎপন্ন হয়ে থাকে। এগুলোর  মধ্যে কিছু কিছু শঙ্কা নিম্নলিখিত উল্লেখ করা হলো__

#শঙ্কাঃ মনে করেন একজন মেয়েকে কয়েকজন নিকৃষ্ট কামী ব্যক্তি মিলে ধর্ষণ পূর্বক হত্যা করলো। প্রশ্ন হচ্ছে সেই মেয়েটি কি নিজের কর্মফল পেলেন ? অথবা মেয়েটি এমন কি কর্ম করেছিল যার ফলে হিসেবে তাকে ধর্ষণ হওয়ার পর হত্যা হতে হলো ? মনে করেন একজন ধর্ষক ধর্ষণ করার পর কোনো কারণে সামাজিক দণ্ড থেকে  যদি রক্ষা পেয়ে যায়, তাহলে কি এমন ধরে নেওয়া যায় যে ওই ধর্ষকের শাস্তি হলোনা অর্থাৎ এটাই তার কর্মফল ? মনে করেন একজন নিষ্ঠাবান, দানী বিদ্বানকে একজন বিনা দোষে হত্যা করলো, তাহলে কি ধরে নেওয়া যায় যে ওই ব্যক্তির পূর্ব জন্মে এমন কোনো কর্ম করেছিল যায় ফল হিসেবে এই জন্মে হত্যা হতে হলো অথবা ঈশ্বর কি সেই হত্যাকারীকে প্রেরণা দিয়েছেন কর্মফল দেওয়ার জন্য ? মনে করেন মাতৃগর্ভ থেকে সন্তান প্রসব করার সময় ডাক্তারের কিছু ভুলের জন্য শিশুটির মৃত্যু হলো তাহলে এর জন্য দায়ী কে ডাক্তার নাকি সেই শিশুর মধ্যে থাকা জীবাত্মার পূর্বজন্মের পাপ কর্ম ? নাকি তার বাবা মা ? এমন নানান শঙ্কা উৎপন্ন হয় [যদিও উদাহরণ স্বরূপ কিছু প্রশ্ন তুলে ধরা হলো, কিন্তু এই সকল উদাহরণ গুলো বাস্তবেও  ঘটে থাকে, এগুলো কোনো কাল্পনিক উদাহরণ নয়]।

#সমাধানঃ আমরা সনাতনীরা সকলেই বিশ্বাস করি যে কর্ম অনুযায়ী ঈশ্বর সকলকে ফল দান করেন। ঈশ্বর কিভাবে কর্মফল প্রদান করেন এই বিষয়ে শুরুতে বলা হয়েছে। ঈশ্বর প্রতিটি কর্ম করেন নিয়ম করে থাকেন, ঈশ্বর আমাদের জীব দেহে ব্যাপক থেকে কর্ম করছেন ঠিকই কিন্তু তিনি জীবের [জীবাত্মা] কর্মে কোনো প্রকারের হস্তক্ষেপ করেন না। কেননা তিনি জীবকে কর্মে স্বতন্ত্র হিসেবে বানিয়েছেন। এই বিষয়ে পৌরাণিক ও ইসলাম মত খণ্ডন পূর্বক আলোচনাটি দেখার জন্য নীচে থাকা লিংকে প্রবেশ করুন__
https://aryaveeratwa.blogspot.com/2022/12/blog-post.html

যেহেতু নানান যুক্তির মাধ্যমে এইটাই প্রমাণ হয় যে ঈশ্বর জীবের কর্মে কোনো প্রকার হস্তক্ষেপ করেন না, সেহেতু বলা যায় যে এই সংসারে আমরা যা কিছু ভোগ করে থাকি, তা সবই কিন্তু আমাদের নিজের কর্মফল নয়, কিছু কিছু ফল অপরের অন্যায়ের মাধ্যমে পেতে থাকি। কোনো এক মেয়েকে ধর্ষণ করার পর তাকে হত্যা করা হলো, তাহলে এখানে মেয়েটি কি নিজের কর্মফল ভোগ করলো ? নাহ, মেয়েটি যা ফল পেলো তা নিজ কর্মের ফল নয় বরং অন্যের [ ধর্ষক ও হত্যাকারী] অন্যায়রূপ কর্মের ফল। একজন দয়ালু নির্দোষ ব্যক্তিকে কেউ হত্যা করলে সেটাও কিন্তু অন্যায় পূর্বক ফল পাওয়া হলো, নিজ কর্মের ফল নয়। ঠিক এমনই ডাক্তারের ভুলে যদি কোনো শিশুর মৃত্যু হয় তাহলে এর জন্য একমাত্র ডাক্তারই দায়ী। ডাক্তারের অন্যায়ের জন্য শিশুটিকে হত্যা হতে হলো। আবার একজন ধর্ষক যদি সমাজের কোনো দুর্বলতার কারণে শাস্তি না পায় তাহলে তো সে সামাজিক আইনের দুর্বলতার কারণে রক্ষা পেয়ে গেল কিন্তু যে জগৎ স্রষ্টার ন্যায় থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব নয়। শাস্ত্র অনুযায়ী তাকে মৃত্যুর পর পাপ কর্মের ফল হিসেবে নিকৃত যোনি ভ্রমণ করতে হবে।  আমাদের এই বিষয়ে ভালোভাবে আলোকপাত করা উচিত যে জগৎ স্রষ্টা যে কর্মফল দিয়ে থাকে সেটা মৃত্যুর পর। তিনি উত্তম কর্ম করলে উত্তম জন্ম, নিকৃষ্ট কর্ম করলে নিকৃষ্ট জন্ম প্রদান করেন। পৌরাণিক, ইসলাম ইত্যাদি মতানুসারে স্রষ্টা নিজেই অবতীর্ণ হয় পাপীদের ধ্বংস করার জন্য অথবা আল্লাহ কাউকে বাঁদর বানিয়ে দেয়, কাউকে জলে ডুবিয়ে হত্যা করে ইত্যাদি। তাদের এই মান্যতা সম্পুর্ণ ভ্রান্ত। উপরোক্ত যে লিংকটি দেওয়া হয়েছে সেখানে এই বিষয়ে তার্কিক আলোচনা করা হয়েছে, অবশ্যই দেখে নেবেন। আমরা যা ন্যায় অনুসারে প্রাপ্ত হই সেটাকেই আমাদের কর্মফল বলা উচিত। আমি যদি সমাজকল্যাণে উত্তম কর্ম করে থাকি, এর জন্য যদি আমাকে সকলেই শ্রদ্ধা করে তাহলে এটা আমার কর্মফল, ঠিক তেমনই আমি যদি খারাপ কাজ করে থাকি অথবা অপরের ক্ষতি করে থাকি তাহলে আমার খারাপ কাজের জন্য আমায় যে শাস্তি হবে সেটা আমার কর্মফল। কিন্তু কেউ যদি আমায় অন্যায় ভাবে হত্যা করে তাহলে সেটা আমার কর্মফল নয় বরং সেটা অন্যের অন্যায় কর্মের জন্য আমায় হত্যা হতে হলো। এই জগৎ সংসারে জীব যে সকল কর্ম করবে তার ফল জীবই ভোগ করবে, সেটা ন্যায় পূর্বকও হতে পারে আবার অন্যায় পূর্বকও হতে পারে। এমনও কিছু ব্যক্তি রয়েছে যারা আজীবন লোকের সেবা করে কিন্তু বৃদ্ধ বয়সে তাদের কেউ সেবা করেনা, সবাই তাদের অবহেলা করে। তখন এইসকল ব্যক্তিরা ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে বলে থাকে "হে ঈশ্বর! আমি আজীবন সকলের সেবা করলাম, কিন্তু এখন আমার কেউ সেবা করে না। সকলকে ভালোবাসার কর্মফল এই দিলে ঠাকুর ?"। এই সব কথা বলা মানে ঈশ্বরকেই দোষী বানানো। এই সকল ব্যক্তি নিজ কর্মের ফল, অন্যের অন্যায়ের মাধ্যমে পাওয়া ফল এবং ঈশ্বরের দেওয়া কর্মফল সম্পর্কে বুঝতে পারে না, তাই তারা এমন বলে থাকে।

অতএব ঈশ্বর যেহেতু মনুষ্য আদি জীব কে স্বতন্ত্র হিসেবে বানিয়েছেন সেহেতু তিনি আমাদের কর্মে কোনো প্রকার হস্তক্ষেপ করেননা। আমরা এই সংসারে যে সকল ফল পেয়ে থাকি সেটা নিজের কর্মফল হয়ে থাকে আবার অন্যের অন্যায়রূপ কর্মের ফলও হয়ে থাকে।

জগৎ স্রষ্টা কি যা ইচ্ছে তাই করেন এবং পারেন ?

 জগৎ স্রষ্টা কি যা ইচ্ছে তাই করেন এবং পারেন ? 



প্রশ্নঃ ঈশ্বর কি নিয়ম ব্যতীত কিছু করেন ? ঈশ্বর সর্বশক্তিমান তাই যা ইচ্ছে করতে পারে, ঈশ্বরের কর্ম কোনো নিয়মের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয় ?


বর্তমান সমাজে যত সংখ্যক আস্তিক রয়েছে তাদের মধ্যে বেশিরভাগই অন্ধবিশ্বাসী। তারা মনে করেন ঈশ্বর সর্বশক্তিমান তাই সে যা ইচ্ছে করতে পারেন, যে কোনো অসম্ভব কে সম্ভব করা স্রষ্টার কাছে কোনো ব্যাপার নয়।

#পৌরাণিক সনাতনীদের মান্যতাঃ- পৌরণিকদের মধ্যে নানান ভিন্ন ভিন্ন মান্যতা রয়েছে। আমি সেই সব কিছুর বিষয়ে আলোচনা না করে যে অবতারবাদ সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয় সেই বিষয় নিয়ে আজ আলোচনা করবো। অবতারবাদকে সনাতনীরা অন্ধের মতন বিশ্বাস করে থাকে কেননা এটা তাদের ধর্ম গ্রন্থ কথিত ১৮+ পুরাণ কাহিনী অনুকূল। এই মান্যতা অনুযায়ী যখন এই জগতে অধর্ম বেড়ে যায় তখন ঈশ্বর অবতার হয়ে ধর্মের স্থাপন করে এবং অধর্ম ধ্বংস করে। পৌরাণিক শ্রেষ্ঠ ধর্ম গ্রন্থের মধ্যে একটি হলো ভাগবত পুরাণ। আর এই ভাগবত পুরাণ প্রথম স্কন্ধ/ তৃতীয় অধ্যায়/ ৬-২৫ শ্লোক পর্যন্ত ২২ অথবা ২৫ টি অবতারের কথা বলা হয়েছে। কলিযুগে মাত্র দুইটা অবতার- বুদ্ধ ও কল্কি। কলির শেষের দিকে কল্কি অবতার আসবে অধর্ম কে বিনাশ করতে। শুধু বৈষ্ণবদের মধ্যেই নয়, শৈব অথবা শাক্তদেরও নানান অবতার রয়েছে। কেউ যদি বৈদিক শাস্ত্র B ঈশ্বর কে নিরাকার বলে দাবি করে তাহলে তার কথার উত্তরে বলা হয় যে ঈশ্বর সর্বশক্তিমান, তাই সে সব কিছুই করতে পারে। যদি সব কিছু করতে না পারে তাহলে সে কিসের সর্বশক্তিমান ? এমন তর্ক দিয়ে থাকে পৌরাণিক বন্ধুরা।


#ইসলামের মান্যতাঃ- কুরআন অনুযায়ী আল্লাহ সব কিছুই করতে পারে। কুরআন সূরাঃ- ২ বাকারাহ/ ২৪৩ অনুযায়ী আল্লাহ মৃত ব্যক্তিদের জীবিত করতে পারে। কুরআন ৭/১৩৩ অনুযায়ী আল্লাহ নিজেই ফেরাউনের আনসারীদের ওপর তুফান, পঙ্গপাল, উকুন, ব্যাঙ ও রক্ত প্রভৃতি দিয়ে আক্রমণ করেছিল। কুরআন ৭/৬৪ এ আল্লাহ বললো অতঃপর তারা তাকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করল। আমি তাকে এবং নৌকাস্থিত লোকদেরকে উদ্ধার করলাম এবং যারা মিথ্যারোপ করত, তাদেরকে ডুবিয়ে দিলাম। নিশ্চয় তারা ছিল অন্ধ। কুরআন ১৩/২৭ আল্লাহ যাকে ইচ্ছা পথভ্রষ্ট করেন এবং যে, মনোনিবেশ করে, তাকে নিজের দিকে পথপ্রদর্শন করে। কুরআন ২/৬৫ অনুযায়ী আল্লাহর কথা শুনেনি বলে তাদেরকে ঘৃণিত বাঁদর বানিয়ে দিয়েছিল। আল্লাহ যখন বলেনকুন ফাইয়াকুন অর্থাৎ 'হয়ে যাও' এমন বলার সাথে সাথে হয়ে যায়।কুরআন ৩/৪৭,৫৯। কুরআন পড়লেও বোঝা যায় আল্লাহ সব কিছুই করতে পারে। 


#সমীক্ষাঃ বলা যায় যে পৌরণিকদের মান্য ঈশ্বর হোক আর কুরআনের আল্লাহ হোক, স্রষ্টা সব কিছুই করতে পারে, তার কোনো নিয়ম নেই, সে অসম্ভব কে সম্ভব করতে পারে কারণ সে সর্বশক্তিমান। কোনো এক মতবাদের সত্যতা যাচাই করতে গেলে সেই বিষয়ে যৌক্তিক বিচার করা আবশ্যিক, নয়তো কোনটা সত্য কোনটা মিথ্যা তা বোঝা সম্ভব নয়। ঈশ্বর সাকার নাকি নিরাকার সেই বিষয়ে আজ যাবো না। পৌরাণিকদের মধ্যে এক মহান কুযুক্তি প্রচলিত রয়েছে যে 'ঈশ্বর যদি রূপই না ধারণ করতে পারে তাহলে সেই কিসের সর্বশক্তিমান ? ঈশ্বর রূপ ধারণ করে অধর্ম বিনাশ করে'। পৌরাণিক বন্ধুদের এই কুযুক্তির বিরুদ্ধে আমার যুক্তি হলো এই যে আপনার মান্য ঈশ্বর রূপ ধারণ না করলে যদি অধর্ম ধ্বংসই করতে না পারে তাহলে সে কিসের সর্বশক্তিমান ? যদি এটাই সত্য হয় যে পৃথিবীতে যখন অধর্ম বেড়ে যায় ধর্মের গ্লানি হয় তখন ঈশ্বর অবতার হয়ে আছে অধর্ম ধ্বংস করতে এবং ধর্ম স্থাপন করতে। তাহলে জিজ্ঞাসা চলে আসে বর্তমান সময়েও তো ধর্মের গ্লানি অবশ্যই হচ্ছে [ সারা বিশ্বে প্রায় ১১০ কোটি লোকেরা নিজেদের সনাতনী বলে বাদবাকি কেউই সনাতন ধর্ম মানেনা সেই অর্থে পূর্বের চেয়ে এখন অধর্মের বৃদ্ধি পেয়েছে অনেক বেশি] কিন্তু এখন একটাও অবতার নেই কেন ? যখন ভারতে ইসলাম শাসন ও খ্রিস্টান শাসন হয় প্রায় কয়েকশো বছর ধরে তখন কি ধর্মের গ্লানি হয়নি ? অবশ্যই হয়েছিল। কিন্তু একটাও অবতারের দেখা  যায়নি কেন ? যিনি অবতীর্ণ হয়ে অধার্মিকদের ধ্বংস করেছে। যদি বলা হয় 'এখন অবতার আসবে না কলির শেষে কল্কি অবতার আসবে' তাহলে পুনরায় প্রশ্ন তৈরি হবে যে আপনাদের ঈশ্বর তো সব কিছুই করতে পারে, আপনাদের মান্য ঈশ্বর তো কোনো নিয়মের মধ্যে আবদ্ধ নয় কিন্তু তাকেই আবার নিয়মের মধ্যে বেঁধে দেওয়া হচ্ছে কেন ? কলিযুগের মাঝে যখন যখন অধর্মের বৃদ্ধি পাবে তখন সেগুলোকে ধ্বংস করার দায়িত্ব আপনাদের ঈশ্বর নেয়নি ? ভাগবত পুরাণ ৩ স্কন্ধের ১৩ অধ্যায় পড়লে বোঝা যায় বরাহ অবতার নিজের দাঁত দিয়ে পৃথিবীকে জলের নিচ থেকে শুরু উপরে তুলেছিল অর্থাৎ বলা যায় যে বরাহ অবতার সুবিশাল রূপ ধরেছিল। এই পৌরাণিক ঈশ্বরের কি এই বুদ্ধিও নাই যে সে যদি বর্তমান সময়ে বরাহ অবতারের সাদৃশ্য কোনো এক রূপ ধারণ করে তাহলেই তো অধর্মের বিনাশ হবে এবং সকলেই পৌরাণিক মান্যতা গ্রহণ করবে, তাই না ? যে ঈশ্বর এতবার অবতার হয়ে আসে অধর্ম ধ্বংস করতে সে ঈশ্বর কি চায়না যে বিশ্বের সকলে তাকে মেনে চলুক ? কিন্তু সে কোনোভাবেই রূপ ধারণ করছে না। এমন নানান যৌক্তিক জিজ্ঞাসার কোনো সমাধান পাওয়া যায় না, কারণ এই অবতারের মান্যতা সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং কল্পিত। বিনা যুক্তি তর্কে বিনা বিচারে এই সমাজ অলৌকিক, চমৎকার বিষয়কে ধর্মের অংশ খুবই সহজে মেনে নেয় তাই এই সুযোগ বুঝে সমাজের ভণ্ড লোকেরা ঋষি মুনিদের নামে বই লিখে ছিল, যার কোনো বাস্তবিক ভিত্তি নেই। উদাহরণ স্বরূপ বলছি- বর্তমান সময়ে হিন্দু সমাজের একজন বিখ্যাত ধার্মিক হল সৎগুরু। সে যদি এখন এই ধরনের একটা অলৌকিক বই লেখে যে মোদী জি ঋষি ছিল, সে একবার গঙ্গা নদীকে পান করে নিয়েছিল, [ যেমনটা অগস্ত্য ঋষি সমুদ্র পান করেছিল] সে ভগবান ব্রহ্মার অবতার ছিল ইত্যাদি। এমন বই বর্তমান সময়ে কেউ বিশ্বাস না করলেও আজ থেকে ৫০০ বছর পর এমন ব্যক্তি অনেক বের হবে যারা সৎ গুরুর এই বইকে অন্ধের মতন বিশ্বাস করবে এবং মোদী জিকে ব্রহ্মার অবতার ভাববে। ঠিক এমনই ভাবে যোগী, ঋষি, মহর্ষি, রাজা ইত্যাদি মহাপুরুষদেরকে ঈশ্বর বানিয়ে এই সকল কপোলকল্পিত পুরাণ কাহিনী তৈরি হয়েছে, যার মধ্যে কিছু কিছু বিষয়ের সত্যতা রয়েছে, যেমনটা মুসলিমদের কুরআনেও ভালো ভালো কিছু বাণী আছে। বর্তমানের আর একটা হাস্যকর বিষয় এই যে মাত্র শত বছরের মধ্যেই অনুকূল ঠাকুর এখন ঈশ্বর হয়ে গেছে, তার এক চ্যালা দেবী দুর্গার থেকেও শ্রেষ্ঠ বলেছে অনুকূলকে। এইভাবে চলতে থাকলে পৌরাণিক সমাজে আগামী ৫০০ বছরের মধ্যে প্রায় এক ডজন ঈশ্বর তৈরি হয়ে যাবে। 


#ওদিকে কুরআনের আল্লাহও সব কিছু পারে যারা আল্লাহ কে মানেনা তাদেরকে সে নিজেই শাস্তি দেয়, আল্লাহ মানুষ কে বাঁদরও বানিয়ে দেয়। কিন্তু কুরআনে আল্লাহর যে সব লীলা খেলা রয়েছে তা কিন্তু বর্তমানে আল্লাহ করতে পারছে না। এমন কেন ? যিনি স্রষ্টা তিনি নিজেই শক্তি স্বরূপ, তার নিয়ম সনাতন বা নিত্য হবে। আল্লাহ পূর্বে যা করেছে তা বর্তমানে কেন পারছে না ? যে দেশে ইসলামের প্রতিষ্ঠা হয়েছিল সেই জায়গা এখন শাসন করছে খ্রিস্টানরা। যারা কুরআন অনুযায়ী আহলে কিতাব এবং কাফেরও। উইঘুরে মু*সলিমদের ওপর এতো অত্যাচার করছে আল্লাহ কিছুই করতে পারছে না কেন ? ফিলিস্তিনের ইহুদীরা মু*সলিমদের দাস বানিয়ে রেখেছে তবুও আল্লাহ মৌন কেন ? কিছু মুসলিমরা এই সকল প্রশ্নের উত্তরে বলে থাকে যে আল্লাহ পরীক্ষা নিচ্ছে। আরে ভাই মুস*লিমরা মার খাচ্ছে আর আল্লাহ পরীক্ষা নিচ্ছে মানে ? বিনোদন পূর্ণ কথা বলার আর কোনো জায়গা পাওনা নাকি ? কুরআন ৩৩/২৫এ আল্লাহ বলছে "যুদ্ধ করার জন্য আল্লাহ মুমিনদের জন্যে যথেষ্ট হয়ে গেছেন। আল্লাহ শক্তিধর, পরাক্রমশালী"। যে আল্লাহ বলছে যুদ্ধ করার জন্য মুসলিমদের জন্য সে নিজেই যথেষ্ট, সেই আল্লাহ মৌন হয়ে আছে মুস*লিমরা সারা বিশ্বে কাফেরদের হাতে মা*র খাচ্ছে তবুও কেন এখন ? কুরআন অনুযায়ী পূর্বে আল্লাহ যেমন পাপীদের বাঁদর বানিয়ে দিয়েছিল ঠিক তেমনি যদি বর্তমান সময়ে ইসলাম বিরোধী প্রায় কয়েকশ ব্যক্তিকে বাঁদর বানিয়ে দেয় তাহলেই তো সকলে ইসলাম গ্রহণ করবে, তাই না ? কিন্তু আল্লাহ সেটা করতে পারছে না। 


#অতএব বলা যায় যে পৌরাণিক মান্যতা এবং ইসলামিক মান্যতা অনুযায়ী ঈশ্বরের যে স্বরূপ আমি তুলে ধরে খণ্ডন করলাম, কে মান্যতার কোনো বাস্তবিক ভিত্তি নেই, যে বিষয়ে যৌক্তিক আলোচনা করলে নানান ভুল বেরিয়ে আসে। তা কখনোই প্রকৃত স্রষ্টার স্বরূপ হতেই পারে না। 


#সিদ্ধান্তঃ আধুনিক সময়ে ঋষি দয়ানন্দই এমন ব্যক্তি যিনি উক্তি বিষয়ে ঈশ্বরের সঠিক স্বরূপ কে তুলে ধরেছেন। ঋষি দয়ানন্দ বলেছেন ঈশ্বর অবশ্যই সর্বশক্তিমান কারণ তিনি নিজের কর্ম অর্থাৎ জগৎ সৃষ্টি, স্থিতি ও প্রলয় করতে এবং সর্ব জীবের পাপ পূণ্যের ফল দিতে অন্য কারোরই সহায়তা নেয় না অর্থাৎ তিনি এই সকল কর্ম করতে অন্য কোনো শক্তির সাহায্য নেয়না। কিন্তু পৌরাণিক, মুসলিম ইত্যাদিরা মনে করে ঈশ্বর সর্বশক্তিমান মানে সব কিছুই করতে পারে এই মান্যতা সম্পূর্ণ ভ্রান্ত। ঈশ্বর পাগল হতে পারে না, ঈশ্বর নিজেকে হত্যা করে অসংখ্য ঈশ্বর বানাতে পারে না, ঈশ্বর মূর্খ হতেও পারে না, ঈশ্বর অন্যায়কারী হতে পারেনা, ঈশ্বর নিজের সর্বব্যাপকতা ধ্বংস করে একদেশী হতেও পারেনা, ঈশ্বর মনুষ্য ইত্যাদি জীবের স্বতন্ত্রতা নষ্ট করতে পারেনা। ঈশ্বর আমাদের জীব দেহে ব্যাপক থেকে কর্ম করছেন ঠিকই কিন্তু তিনি জীবের [জীবাত্মা] কর্মে কোনো প্রকারের হস্তক্ষেপ করেনা, কেননা জীব কর্মে স্বতন্ত্র। স্রষ্টার যদি এইটাই কাজ হতো যে সমাজে থাকা অধার্মিকদের ধ্বংস করা তাহলে কখনোই নিরীহ নারীরা ধর্ষিত হতো না অথবা এই সমাজে কখনোই অসৎ ব্যক্তিদের মাধ্যমে সভ্য ব্যক্তিদের অত্যাচারিত হতে হতো না। এমন নানান কর্ম রয়েছে যা ঈশ্বরের গুণ কর্ম বিরোধী, যেগুলো তিনি করতে পারেন না। পদার্থ বিদ্যা অনুযায়ী আধুনিক বিজ্ঞানীরাও বিশ্বাস করে যে প্রতিটি স্থূল- সূক্ষ্ম কণাও নিয়ম অনুযায়ী চলছে অর্থাৎ  বলা যায় যিনি এই জগৎ স্রষ্টা তিনি তার প্রতিটি কর্ম নিয়ম অনুযায়ী করে থাকেন। অসম্ভব কে সম্ভব করা তার কাজ নয়। অতএব যারা বলে থাকে স্রষ্টা সব কিছুই করতে পারে, তাদের মান্য ঈশ্বরের ওপর নানান প্রশ্ন তৈরি হয়, যার কোনো সমাধান সম্ভব নাই অর্থাৎ তারা নিজেদের ঈশ্বর কে ধোঁকাবাজ, মিথ্যাবাদী বানিয়ে দিচ্ছে মাত্র।


 নমস্তে